সেই মাসুদিআলম এখন রমনার ডিসি


নিজস্ব প্রতিবেদক
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট—বাংলাদেশের রাজপথে ইতিহাসের এক বর্ণিল অধ্যায়। কোটা সংস্কার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢেউয়ে উত্তাল হয়েছিল সারাদেশ। রাজপথ দখলে নেয় লাখো মানুষ—শিক্ষার্থী, শ্রমিক, চাকরিপ্রত্যাশী, অভিভাবক। একদিকে ছিল মেধাভিত্তিক নিয়োগের দাবিতে সোচ্চার ছাত্রসমাজ, অন্যদিকে রাষ্ট্রের পক্ষে ছিল অস্ত্রধারী পুলিশ বাহিনী। সর্বত্র চলেছে গুলি, লাঠিপেটা, দমন-পীড়ন। শহীদ হয়েছেন বহু তরুণ, আহত হাজারো।
তবে এই দুঃসময়ে ব্যতিক্রমী কিছু ঘটনা ছাত্রদের মনে সাহস জুগিয়েছে। তেমনই এক ব্যতিক্রমী ভূমিকা রেখেছিলেন তৎকালীন পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মো. মাসুদ আলম। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, ছাত্রদের শান্ত রাখতে এবং তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দৃঢ় অবস্থান নিচ্ছেন মাসুদ আলম। ভিডিওটি প্রথম প্রকাশ করে ‘দ্য রেড জুলাই’ নামের একটি ফেসবুক পেজ। পরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও সেটি শেয়ার করেন।
ভিডিওতে মাসুদ আলম বলছিলেন, যদি তোমাদের অ্যাটাক করার জন্য কেউ আসে, তাহলে আমি আছি। আমার উপর দিয়ে যেতে হবে। আগে আমাকে মারতে হবে, তারপর তোমাদের কাছে যেতে পারবে। এই দিকে গ্যাঞ্জাম করার দরকার নাই, ওইদিকে কেউ যদি আসে আমি দেখতেছি।
এই বক্তব্য মুহূর্তেই ভাইরাল হয়। নেটিজেনদের অনেকে তাঁর সাহসিকতার প্রশংসা করেন। ‘দ্য রেড জুলাই’-এর পোস্টে একজন মন্তব্য করেন, সেদিন মাসুদ ভাই সাহসী ভূমিকা না নিলে হয়তো শহীদের তালিকা আরও বড় হতো। খুব কাছ থেকে দেখেছি তাঁর সেদিনের চেষ্টা।
পাবনার সেদিনের উত্তপ্ত পরিস্থিতি পুলিশের এই ভূমিকার কারণে শান্ত হয় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
‘দ্য রেড জুলাই’ পেজের অ্যাডমিন সজিব জানান, ভিডিওটি তাঁদের পাবনা জেলা টিম পাঠিয়েছিল। তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে মাসুদ আলম ছাত্রদের পক্ষে ছিলেন, ভিডিওর কমেন্টগুলো পড়লেই বোঝা যায় কতটা শ্রদ্ধা কুড়িয়েছেন তিনি।
এছাড়া দেশের নানা আন্দোলন ও রাজনৈতিক উত্তাপের সময়ও বারবার প্রশংসা পেয়েছেন মাসুদ আলম। গত মে মাসে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনে আন্দোলনের সময়ও তিনি দায়িত্বে ছিলেন। তখন হঠাৎ দায়িত্বে ডাক পেয়ে খেলার মাঠ থেকে জার্সি পরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি।
এর আগে ২০২৪ সালের ১৫ এপ্রিল সায়েন্সল্যাব মোড়ে সিটি কলেজ ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের সময়ও মাসুদ আলমের একটি মন্তব্য ভাইরাল হয়। তিনি বলেছিলেন,
এই সংঘর্ষের কারণ আল্লাহ ছাড়া কেউ বলতে পারবে না।
এ বক্তব্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হলেও অনেকেই তাঁকে সহানুভূতিশীল ও নিরপেক্ষ বলেই দেখেছেন।
মাসুদ আলম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ২৮তম ব্যাচের কর্মকর্তা। তিনি র্যাব-৬ এর ঝিনাইদহ ক্যাম্পে, পাবনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সুপার হন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানো মাসুদ আলমের মতো কর্মকর্তাদের নিয়েই এখনও অনেকে আশাবাদী। তাঁর সাহস, মানবিকতা ও দায়িত্ববোধের উদাহরণ সামাজিক মাধ্যমে প্রশংসিত হচ্ছে। অনেকেই বলছেন, মানবিক পুলিশই পারে সংকটের সময়ে জনগণের আস্থা অর্জন করতে।
ভিওডি বাংলা/ডিআর
‘বড় সন্তানকে বের করতে পেরেছি, ছোটটাকে খুঁজে পাচ্ছি না’
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিমানবাহিনীর …

‘আমার সায়েরকে খুঁজে পাচ্ছি না’
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোল স্কুলে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় …

‘আমার রোহান যন্ত্রণায় কাতরাইতাছে রে’
নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ৫২০ নম্বর কক্ষের …
