• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

সরকারের সাথে গোপন অন্য শক্তি কাজ করছে : নায়েবে আমীর

   ১৭ জুলাই ২০২৫, ০৯:০৯ পি.এম.
নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ শঙ্কিত নয়, উদ্বিগ্ন। হাজার-হাজার ছাত্র-জনতার জীবন ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুর্বলতা ও সিদ্ধান্তহীনতায় মনে হয় সরকারের সাথে গোপন কোন শক্তি কাজ করছে। গোপালগঞ্জের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, তিনি খুবই অসহায়। ‘প্রশাসনের কোন দুর্বলতা থাকলে তিনি ব্যবস্থা নিবেন।’

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ ও উত্তরের যৌথ আয়োজনে ‘গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল’ পূর্বক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

ডা. তাহের বলেন, আমাদের মনে হয়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিজেই দুর্বল ও অসহায়। যার বাস্তবতা রাষ্ট্রের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে ফুটে উঠেছে। মিটফোর্ডের ঘটনা থেকেই গোপালগঞ্জের ঘটনার সাহস দেখিয়েছে পতিত আওয়ামী লীগের দোসররা। আমরা অনতিবিলম্বে ‘মিস্টার অসহায়’ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে প্রত্যাহার করতে সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। 
    
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, যখন জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে একটি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং ১৯ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ হতে যাচ্ছে- ঠিক এই মুহূর্তে এনসিপির পদযাত্রায় গোপালগঞ্জের হামলা একটি অশনি সংকেত। 

তিনি বলেন, যেখানে এনসিপি সমাবেশ করার আগে প্রশাসনকে লিখিতভাকে জানিয়েছে। সেখানে প্রশাসন কী ভূমিকা রেখেছে?- গণমাধ্যমে দেখা গেছে যখন সমাবেশের মঞ্চ ভাংচুর করা হয়, তখন সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোন সদস্য উপস্থিত ছিলো না। 

তিনি আরও বলেন,  জাতি আজ দুই দিকে দুই ভাগ হয়ে গেছে। একদিকে গণতন্ত্রকামী, শান্তিকামী, দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা, অপরদিকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের সঙ্গি চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ধর্ষক, নৈরাজ্যকারী গোষ্ঠী। জনগণ এদের প্রতিহত করবেই, করবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের জনগণের জান ও মালের নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। গোপালগঞ্জের সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। 

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা এটিএম মাছুম বলেন, গোপালগঞ্জে সংঘটিত ন্যক্কারজনক ঘটনা মেনে নেওয়া যায়। এই ঘটনায় জড়িত আওয়ামী সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি প্রশাসনে থাকা আওয়ামী দোসরদেরও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। যাতে করে বাংলাদেশে আর কোনদিন স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারবে। যারা সন্ত্রাসীদের লালন-পালন করছে তারাও জাতির সামনে অপরাধী হিসেবে গণ্য হবে। ৫ আগস্ট যেই ঐক্যের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে সেই ঐক্যে ফাটল দেখা যাচ্ছে। তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অংশীজনদের জাতীয় স্বার্থে ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান জানান।  

জুলাই বিপ্লবে হাজার-হাজার মানুষ জীবন দিয়ে বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করার পরও সমাবেশে হামলা করার সাহস কারা কিভাবে পায় প্রশ্ন রেখে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, সরকারের ভিতরে ফ্যাসিবাদের দোসররা থাকায় ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। প্রশাসন থেকে যত দ্রুত ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিতাড়িত করা হবে, তত দ্রুত দেশের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আসবে, সরকারের ভাবমর্যাদা, গ্রহণযোগ্যতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা দেশে-বিদেশে বৃদ্ধি পাবে। তাই দেশ ও জাতির স্বার্থে সরকারের আইন প্রয়োগ কঠোর হতে তিনি আহ্বান জানান। 

সহকারী সেক্রেটারি সাবেক এমপি ড. এইচএম হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, ০৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর তার দোসররা কীভাবে বিপ্লবীদের উপর হামলা করার সাহস পায়? সেখানে প্রশাসন কী দায়িত্ব পালন করেছে? এই হামলা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের উপর আঘাত হেনেছে। যারা হামলা চালিয়েছে তাদেরকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। গোপালগঞ্জের ঘটনায় সরকারের দুর্বলতা প্রমাণিত হয়েছে। সরকারের সক্ষমতা প্রমাণে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রশাসনের ভিতরের এবং বাহিরের প্রত্যেককে চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। নতুবা বাংলাদেশের জনগণ লংমার্চ টু গোপালগঞ্জ কর্মসূচি পালনে বাধ্য হবে।
 
সভাপতির বক্তব্যে মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, গোপালগঞ্জ বাংলাদেশের বাহিরের অংশ নয়। বাংলাদেশেরই অংশ। তাই সরকারকে গোপালগঞ্জের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্র লীগকে বুঝতে হবে, এটা হাসিনার বাংলাদেশ নয়; এটা ছাত্র-জনতার বাংলাদেশ। ছাত্র-জনতার বাংলাদেশে সন্ত্রাস করার সুযোগ কেউ পাবে না। করলেও ছাড় পাবে না। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ মুক্ত বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে জামায়াতে ইসলামীর ঘোষিত ৭-দফা দাবি আদায়ে ১৯ জুলাইয়ের জাতীয় সমাবেশে দেশবাসীকে দলেদলে যোগদানের আহ্বান জানান তিনি।

সমাবেশ শেষে কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে এক বিশাল প্রতিবাদ মিছিল বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইট থেকে শুরু হয়ে প্রেসক্লাব, মৎস্য ভবন, শাহবাগ চত্বরে গিয়ে মিছিল শেষ হয়।

 

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
জেডসিএফ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি দ্বীপ ও সম্পাদক আতিক
জেডসিএফ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি দ্বীপ ও সম্পাদক আতিক
সন্ত্রাসী ভাড়া এনে এনসিপির নেতাদের ওপর হামলা হয়: রিপন
সন্ত্রাসী ভাড়া এনে এনসিপির নেতাদের ওপর হামলা হয়: রিপন
চেয়েছিলাম ডেমোক্রেসি, হয়ে যাচ্ছে মবক্রেসি- সালাহউদ্দিন
চেয়েছিলাম ডেমোক্রেসি, হয়ে যাচ্ছে মবক্রেসি- সালাহউদ্দিন