• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১
টপ নিউজ
গণগ্রেপ্তার নয়, গোপালগঞ্জে শুধু দোষীদেরই ধরা হচ্ছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ষড়যন্ত্রকারীরা নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না: দুদু শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাজ্যে সম্পদের মালিকানা বদলের হিড়িক হাসিনাঘনিষ্ঠদের চট্টগ্রামে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে কড়া নিরাপত্তা সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ৩৯ জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির দেশে গণতন্ত্রের সংকট: সজাগ থাকার আহ্বান মির্জা ফখরুলের জামায়াত আমিরকে দেখতে হাসপাতালে মির্জা ফখরুল জামায়াত আমিরকে দেখতে হাসপাতালে যাচ্ছেন মির্জা ফখরুল আ’লীগকে অবিলম্বে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে: আখতার

হাসিনা মানবজাতির কলঙ্ক: মির্জা ফখরুল

   ২০ জুলাই ২০২৫, ০১:২০ পি.এম.
বক্তব্য দিচ্ছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : সংগৃহীত

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক 

জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তিতে ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার মতভিন্নতায় হতাশ হওয়ার কিছু নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার সকালে শেরে বাংলা নগরে জিয়া উদ্যানে বৃক্ষরোপন কর্মসূচির উদ্বোধনকালে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘এখানে একজন শহীদের পিতা আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেছেন যে, আমরা আশা করেছিলাম গণঅভ্যুত্থানের পরে অতিদ্রুত রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত হবে, রাজনৈতিক কাঠামো তৈরি হবে, আমরা একটা নতুন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারব। বিষয়টা হচ্ছে যে, রাজনীতিটা অত সহজ পথ নয়… গোলাপের পাঁপড়ি ছড়ানো থাকে না… এখানেও সমস্যা থাকবে সেটাই রাজনীতি। কিন্তু এতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, ভিন্নমত থাকবে, বহুমাত্রিক পথ থাকবে, কেউ গণতন্ত্রের বিশ্বাস করবে, কেউ সমাজতন্ত্রের বিশ্বাস করবে, কেউ আপনার ওয়েলফেয়ার স্টেটে বিশ্বাস করবে… সব গুলোকে মিলিয়ে আমরা রেইনবো স্টেট একটা রংধনু… অনেকগুলো রং নিয়ে রংধনু উঠে… সেই রকম একটা রাষ্ট্র নির্মাণ করতে অনেক আগেই আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেই স্বপ্ন দেখেছিলেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১দফা দিয়েছেন…সেই ৩১ দফার মধ্যে প্রতিটি কথা... আজকে যে সংস্কারের প্রশ্নটা উঠেছে, সংস্কারের যে প্রস্তাবগুলো আসছে তার প্রত্যেকটি প্রস্তাব আমরা ২০২২ সালে দিয়েছি।’

‘তর্ক-বির্তক নয়’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি সেই বিষয়গুলো নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করতে চাই না। আমার কতজন শহীদ হয়েছেন, আমার কতজন নিহত হয়েছেন, আমরা কত ত্যাগ স্বীকার করেছি, কারা কী কাজ করেছি এই বিতর্কে আমি যেতে চাই না। কারণ ওটা আমার কাছে মনে হয় স্বার্থপরতার একটা ব্যাপার আছে। আমার দায়িত্ব হচ্ছে এই জাতিকে আমাকে উপরে তুলতে হবে।যে প্রাণগুলো গেছে, ‍যারা জীবন দিয়েছে তারা কিন্তু জীবন দিয়েছে ঘোষণা করেই দিয়েছে যে, আমরা ফ্যাসিস্টকে সরাবো, জাতিকে একটা স্বাধীন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য একটাই যে, আমরা সত্যিকার অর্থে একটা উদারপন্থি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে চাই, আমরা নতুন বাংলাদেশ চাই, পরিবর্তন চাই। আমরা দুর্নীতি চাই না, ঘুষ চাই না, আমরা হত্যা চাই না, নির্যাতন চাই না। আমরা মানুষ যেন সুস্থ ভাবে স্বাধীনভাবে কমফোর্টেবল ওয়েতে স্বস্তির সঙ্গে যেন চলাফেরা করতে পারে সেই ধরণের একটা রাষ্ট্র চাই। আমরা অত্যন্ত আশান্বিত যে, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব আমাদেরকে সেই লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।’

‘জাতীয়তাবাদী কৃষক দল’ ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এই দুই সংগঠনের উদ্যোগে জুলাই অভ্যুত্থান উপলক্ষ্যে ‘গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা সবুজ পল্লবে স্মৃতি অম্লান’ কার্যক্রম শীর্ষক নিম গাছ রোপনের এই অনুষ্ঠান হয়। ঢাকাসহ সারাদেশে যে বৃক্ষরোপন কর্মসূচি করছে এটি তারই অংশ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর জিয়াউর রহমানের সমাধি সংলগ্ন জিয়া উদ্যানে শহীদদের নিয়ে শহীদ সৈকত ও শহীদ আবু সাইদের নামে দুইটি নিম গাঠ রোপন করেন বিএনপি মহাসচিব।

‘হাসিনা হচ্ছে মানবজাতির কলঙ্ক’

গতকাল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এক অনুষ্ঠানে এক শহীদের মায়ের আহজারির কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ শহীদের সেই মা একটা কথাই বলছিলেন, যে ছেলেটা নিয়ে আমি স্বপ্ন দেখেছি, আমার পরিবার স্বপ্ন দেখেছি আমার ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছি। সেই ছেলেটাকে ওরা কেড়ে গেছে। কেড়ে নিয়ে গেছে করুণ ভয়াবহ মর্মান্তিক পাশবিকভাবে। তাকে গুলি করে মেরেছে, পরে গেছে এরপরে একটা ভ্যানের মধ্যে উঠিয়েছে। বেঁচে আছে না মরে গেছে সেটা না দেখে আরও ছয়-সাতটা লাশের সঙ্গে তাতে পুড়িয়ে দিয়েছে।”

‘‘ চিন্তা করতে পারেন …একটা স্বাধীন দেশের নাগরিক আমরা।১৯৭১ সালের যুদ্ধ করেছি একটা স্বাধীন দেশের জন্য… সেই দেশের পুলিশ প্রশাসন যা আমার রাষ্ট্রের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য দায়িত্ব পালন করে, যাদের বেতন আমাদের আমাদের প্রত্যেকের ট্যাক্সের টাকায় থেকে। তারা আজকে আমার ছেলেকে হত্যা করছে, পুড়িয়ে মারছে ….কি নির্মম নৃশংস অমানবিক। এজন্য হাসিনাকে কোনোদিন ক্ষমা করা যাবে না, হাসিনা হচ্ছে মানবজাতির একটা কলঙ্ক, হাসিনা হচ্ছে মায়েদের একটা কলঙ্ক। আমাদের প্রথম কাজ হবে এদের বিচার করা।”

‘আমাদের দ্বিতীয় কাজ হবে শহীদদের পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা, যারা আহত হয়েছে, চোখ হারিয়েছে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। তা না হলে ভবিষ্যতে জাতি আমাদের ক্ষমা করবে না। সেজন্য গতকালও প্রস্তাব করেছি, আজকেও প্রস্তাব করছি, আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে একটা ফান্ড রেইস করব যা মাধ্যমে এই পরিবারকে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করব। ইতিমধ্যে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাহেব আমরা বিএনপি পরিবারের মাধ্যমে এই কাজটা করেছেন।’ বলেন বিএনপি মহাসচিব।

‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন প্রসঙ্গে’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘আশা করি, আগামী দিনে যে নির্বাচনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন এই অন্তর্বতীকালীন সরকার যে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা জনগণের একটা সরকার তৈরি করতে পারব। যে সরকার আমার এই শহীদদের মূল্যায়ন করবেন, তাদের মর্যাদা দেবেন, একই সঙ্গে যেজন্য সংগ্রাম করেছেন বাংলাদেশে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবার সবরকম ব্যবস্থা গ্রহন করবে।”

কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলসহ চারজন শহীদদের স্বজনরা বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল একেএম শামসুল ইসলাম শামস, বাদলুর রহমান বাদল, সাইফ আলী খান, মোকছেদুল মোমিন মিথুন, জাহিদুল ইসলাম রনি, শফিকুল হক সাজু ও হাসনাইন নাহিয়ান সজীবসহ কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ভিওডি বাংলা/ডিআর

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
যুক্তরাজ্যে সম্পদের মালিকানা বদলের হিড়িক হাসিনাঘনিষ্ঠদের
যুক্তরাজ্যে সম্পদের মালিকানা বদলের হিড়িক হাসিনাঘনিষ্ঠদের
প্রধান উপদেষ্টার এই সহমর্মিতা স্মরণীয় হয়ে থাকবে: জামায়াত আমির
প্রধান উপদেষ্টার এই সহমর্মিতা স্মরণীয় হয়ে থাকবে: জামায়াত আমির
চট্টগ্রামে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে কড়া নিরাপত্তা
চট্টগ্রামে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে কড়া নিরাপত্তা