লজ্জা পাচ্ছে, আবার নীরবে প্রতিরোধও করছে


জামশেদ নাজিম
গোপালগঞ্জবাসী কেমন আছেন? এই প্রশ্নটা কি কেউ করেছেন? তারা কাঁদছে, রাগছে, লজ্জা পাচ্ছে, আবার নীরবে প্রতিরোধও করছে। তাদের বুকের ভেতর অনেক অভিমান, অনেক ক্ষোভ, আর হাজার বছরের ত্যাগের ইতিহাস!
হ্যাঁ, গোপালগঞ্জে কিছু ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু রাজনীতি যখন যুদ্ধে রূপ নেয়, আর সেই যুদ্ধ যদি সাধারণ মানুষের উঠানে নেমে আসে, তখন কি করার থাকে? গরিবের গায়ে কি ইজ্জত থাকে না? গোপালগঞ্জ জেলায় যা কিছু ঘটেছে তারা কেউ নেতাদের লোক না। গরীব, মেহনতি মানুষের প্রতিরোধ ছিল সেদিন।
আচ্ছা আপনার জেলার ইতিহাসকে কেউ যদি মাটিতে মাড়িয়ে যায়, আপনিও কি নীরব থাকবেন? যারা আজ গোপালগঞ্জকে নিয়ে নগ্ন ভাষায় সোশ্যাল মিডিয়া ভাসাচ্ছেন, একবার ভাবুন— আপনার বাড়ির উঠানে কেউ দাঁড়িয়ে যদি আপনাকে ব্যঙ্গ করে, আপনার পূর্বপুরুষদের অপমান করে— আপনি চুপ থাকবেন?
বঙ্গবন্ধু যদি গোপালগঞ্জে জন্ম না নিতেন, হয়তো আপনারাই আজ ইতিহাসের পাতা থেকে হারিয়ে যেতেন। এই গোপালগঞ্জ, যে গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধুকে জন্ম দিয়েছিল, আজ সেই গোপালগঞ্জকেই অপমান করা হচ্ছে!
একটা কথা মনে রাখবেন— বঙ্গবন্ধু খুনিদের হাতে খুন হয়েও বেঁচে ছিলেন, বেঁচে থাকতেন হাজার বছর। আফসোস, দুঃখজনকভাবে, ৫ আগস্টে জন্ম নেওয়ার সুযোগ দিয়ে, শেখ পরিবারেরই কেউ কেউ অবচেতন ভুল ও অবহেলার মাধ্যমে তাকে চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেলেছে। অথচ বঙ্গবন্ধুর জেলার মানুষ তার ঐতিহ্য ধরে রাখতে জিবন দিয়েছে।
যা-ই হোক, গোপালগঞ্জবাসী বারবার ইতিহাস, ঐতিহ্য মৃত্যুর মুখ থেক ফিরিয়ে এনেছে। ইতিহাসকে বাঁচিয়ে রেখেছে বুকের রক্তে, চোখের জলে। এসব কিছুই হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে। আজ যখন রাষ্ট্রযন্ত্র গোপালগঞ্জের মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে, তখন বিএনপির স্থায়ী ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সহানুভূতিশীল মনোভাব আমাকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। বিশেষ করে তারেক রহমান, আপনি যে মানবিকতা দেখিয়েছেন, তা কেবল রাজনৈতিক সহনশীলতা নয়—এটা বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার চেতনার প্রতিও এক শ্রদ্ধা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ কর্মীরা আজ দিশেহারা। তাদের নেতারা তাদের রেখে পালিয়েছে, তাদের জন্য কেউ নেই। শুধু বুকের ভেতর বঙ্গবন্ধুর ছবি, আর স্বাধীনতার একটা ধোঁয়াটে স্মৃতি!
তারেক রহমান, আপনি যদি এদের পাশে থাকেন, তাহলে ইতিহাস আপনাকে মনে রাখবে— তিন কোটি সাধারণ মানুষ আপনাকে মনে রাখবে!
এই দেশে এখনো যারা মানুষ— তারা কৃতজ্ঞতাকে ভুলে না। যেমন বঙ্গবন্ধুকে ভুলে নাই বলে গোপালগঞ্জ জেলার মানুষ আজও জীবন দেয়।
লেখক: কবি ও সাংবাদিক
ভিওডি বাংলা/ এমপি