গণপিটুনিতে ১৯
৩ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত ৭২ জন

 
                                            
                                    
চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দেশে রাজনৈতিক সহিংসতায় অন্তত ৭২ জন নিহত এবং ১ হাজার ৬৭৭ জন আহত হয়েছেন। একই সময়ে গণপিটুনিতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৯ জন। মানবাধিকার সংগঠন 'অধিকার'–এর প্রকাশিত ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
সংগঠনটি জানায়, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সংগৃহীত তথ্য এবং সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই তিন মাসে বিএনপির ১০৫টি এবং আওয়ামী লীগের (কার্যক্রম নিষ্ক্রিয়) ৪টি অভ্যন্তরীণ সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। বিএনপির সংঘাতে নিহত হয়েছেন ১৯ জন এবং আহত হয়েছেন ৯৭৩ জন। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের সংঘাতে ২ জন নিহত ও ২৪ জন আহত হয়েছেন।
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড: এপ্রিলে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার যৌথ বাহিনী গঠন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে। তবে এই সময়েও বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এপ্রিলে থেকে জুন পর্যন্ত ৮ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫ জন পুলিশের, ১ জন র্যাব, ১ জন কোস্টগার্ড এবং ১ জন যৌথ বাহিনীর সদস্যদের হাতে নিহত হন বলে দাবি করা হয়েছে।
গণপিটুনি ও সহিংসতা: প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গণপিটুনির ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি ও ব্যবস্থা গ্রহণে দুর্বলতার কারণে ১৯ জন গণপিটুনিতে প্রাণ হারিয়েছেন।
কারাগার পরিস্থিতি: দেশের কারাগারগুলোর ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত বন্দী থাকায় সেগুলোর অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ধারণক্ষমতার তিন গুণ বন্দী থাকার উল্লেখ করা হয়েছে। চিকিৎসা-সংকটের কারণে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত ২২ জন বন্দী মারা গেছেন, যাঁদের ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে অসুস্থতা থেকে সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ার কারণে।
নারী ও শিশু নির্যাতন: এই সময়ে ২০৮ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ধর্ষণের শিকারদের মধ্যে ৭৮ জন নারী এবং ১০৯ জন কন্যাশিশু। দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ১৩ জন কন্যাশিশু, আর ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হন ৩ জন। যৌতুকের কারণে ১১ জন নারী নিহত হন এবং যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ১৪ জন।
সীমান্তে সহিংসতা: বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ৯ জন বাংলাদেশি নিহত ও ৫ জন আহত হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। নিহতদের মধ্যে ৭ জন গুলিতে এবং ২ জন নির্যাতনে মারা যান। একই সময়ে নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ ১ হাজার ৭৮৩ জন বাংলাদেশিকে জোরপূর্বক ফেরত পাঠানোর অভিযোগও উত্থাপন করা হয়।
সাংবাদিক নির্যাতন: প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ৩০ জন সাংবাদিক আহত, ১৬ জন লাঞ্ছিত এবং ১১ জন হুমকির শিকার হয়েছেন। হামলার জন্য বিএনপি-জামায়াত কর্মী, প্রশাসনের সদস্য ও মাদক ব্যবসায়ীদের দায়ী করা হয়েছে।
ভিওডি বাংলা/ এমপি
 
                             
                         
                