পাবনায় মসজিদ নিয়ে সংঘর্ষে পৃথক দু’টি মামলা


পাবনার বেড়া উপজেলার তারাপুর গ্রামে মসজিদের বারান্দা নির্মাণকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের পর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারী করেছে প্রশাসন।
রোববার (২৭ জুলাই) সকালে বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোরশেদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে ১৪৪ ধারা জারী করা হয়।
এদিকে, হামলা, মারামারি, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় উভয়পক্ষ শনিবার রাতে বেড়া থানায় পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত হলেন, উপজেলার তারাপুর গ্রামের মৃত সুলতান হোসেনের ছেলে সেলিম হোসেন (৪৮)। রবিবার দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহােজতে পাঠানো হয়েছে।
বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোরশেদুল ইসলাম ১৪৪ ধারা জারীর তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘বেড়া উপজেলার চাকলা ইউনিয়নের তারাপুর গ্রামে নতুন মসজিদের বারান্দা নির্মাণকে কেন্দ্র করে দেশীয় অস্ত্র সহ মারামারি, অগ্নিসংযোগ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও অস্ত্র প্রদর্শণ সহ দাঙ্গা হাঙ্গামা ঘটছে। এছাড়া পুনরায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানা গেছে।’
তিনি আরও জানান, ‘এমন অবস্থায় ওই এলাকায় রবিবার ২৭ জুলাই সকাল দশটা থেকে পরদিন সোমবার ২৮ জুলাই সকাল দশটা পর্যন্ত ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এসময় সকল প্রকার আগ্নেয়াস্ত্র ও লাঠিসোঁটা বহন ও প্রদর্শন, যেকোনো ধরণের মাইকিং বা শব্দযন্ত্র ব্যবহার, পাঁচ বা অধিক সংখ্যক ব্যক্তির একসাথে চলাফেরা, সভা-সমাবেশ ও মিছিল ইত্যাদি নিষিদ্ধ থাকবে।’
এদিকে, দফায় দফায় সংঘর্ষ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, মারামারির ঘটনায় শনিবার (২৬ জুলাই) রাতে উভয়পক্ষ বেড়া থানায় পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেছেন।
বেড়া মডেল থানার ওসি ওলিউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, একপক্ষে তারাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল প্রামানিকের ছেলে আব্দুল মতিন প্রামানিক বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ৩২ জন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা নম্বর ৬।
আর অপরপক্ষে একইগ্রামের শাহ আলম এর স্ত্রী হোসনে আরা খাতুন বাদি হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় ৫২ জন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা নম্বর ৭।
শনিবার অভিযান চালিয়ে হামলায় জড়িত অভিযোগে মতিন প্রামানিকের দায়েরকৃত মামলার এজাহার নামীয় আসামি সেলিম কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি হোসনে আরা খাতুন গ্রুপের লোক।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক বছর আগে বেড়া উপজেলার তারাপুর গ্রামে পুরোনো মসজিদে মিলাদ মাহফিলে কিয়াম পড়া নিয়ে একটি দ্বন্দ্ব হয়। মসজিদের তৎকালীন ক্যাশিয়ার মতিন প্রামাণিকসহ একটি পক্ষ কিয়াম পড়ার পক্ষে অবস্থান নিয়ে নতুন মসজিদ নির্মাণ করেন। সম্প্রতি সেই মসজিদের বারান্দা নির্মাণের উদ্যোগ নেন তারা। কিন্তু একই গ্রামে দু’টি মসজিদ নির্মাণে আপত্তি জানায় অপরপক্ষ।
গত শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে মতিন প্রামাণিক গ্রুপ নতুন মসজিদের বারান্দা নির্মাণ করতে গেলে তাতে বাধা দেয় অপরপক্ষের লোকজন। এসময় হাঁসুয়া, ট্যাটা ও লাঠিসোটা নিয়ে উভয়পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। তাদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় পাঁচজনকে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতল ও পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহতদের মধ্যে হাদিস প্রামাণিক (৪০) বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দুপুরে মারা যান। তাঁর মৃত্যুর খবর জানাজানি হওয়ার পর এদিন বিকেলে ওই এলাকার ২০টি বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করে নিহতের স্বজন ও তাদের সমর্থকরা। খবর পেয়ে পুুলিশ, সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী টহল জোরদার করা হয়েছে।
বেড়া মডেল থানার ওসি ওলিউর রহমান জানান, ‘মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে নিহতের ঘটনায় রবিবার বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত তার পরিবার কোনো অভিযোগ বা মামলা করেনি।’
ভিওডি বাংলা/এম এস রহমান/এম
রাজশাহী- চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে বাস বন্ধ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক বাসচালককে মারধরের জেরে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে বাস চলাচল বন্ধ …

সিজু মিয়া হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
সাঘাটা থানার ভেতরে সিজু মিয়া হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের …

সড়ক দূর্ঘটনায় নিহতের মামলায় সানোয়ার গ্রেপ্তার
পাবনা প্রতিনিধি
পাবনায় সড়ক দূর্ঘটনায় তিনজন নিহত ও কয়েকজন আহত হওয়ার …
