পুরনো প্রতিষ্ঠানে নতুন সম্ভাবনা
এটিআইকে কৃষি বিদ্যালয়ে রূপান্তরের সময়ের দাবি


দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি গাইবান্ধা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (এটিআই)-কে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর পুনরায় জোরালো হয়েছে। ৮১ বছরের পুরনো এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি সকল প্রকার সম্ভাবনা ও অবকাঠামো থাকা সত্ত্বেও আজও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পায়নি। অথচ প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যেই জমি, স্থাপনা, প্রশিক্ষণ সুবিধা ও পরিবেশের দিক থেকে পূর্ণাঙ্গ একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নেবার উপযুক্ততা বহন করে।
১৯৫৪ সালে পাকিস্তান আমলে ভি-এইড নামে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ পরিবর্তন হয়েছে চারবার। তৎকালীন পাকিস্তান আমলে ভিএইড (ভিলেজ এগ্রিকালচারাল ইন্ডাষ্ট্রিয়াল ঢেভেলপমেন্ট) নামে শহরের বাংলাবাজার এলাকায় বিশাল ক্যাম্পাস নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। আমেরিকা সরকারের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত এই প্রতিষ্ঠানটিতে শুরুতে কৃষি বিভাগে চাকুরিরত কর্মচারীদের প্রথম বছরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো।
১৯৬১ সালে ভিএইড এর নাম পাল্টিয়ে এনডিটিআই (ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিং ইন্সিটিটিউট) রাখা হয়। তখন জাপান সরকার প্রতিষ্ঠানটিতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। আবার ১৯৬৯ সালে এনডিটিআই-এর নাম পাল্টিয়ে এইটিআই (এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন ট্রেনিং ইন্সটিটিউট) রাখা হয়। এসময় এসএসসি পাশ ছাত্রদের জন্য ২বছরের কৃষি প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করা হয়। ১৯৮৯-৯০ সালে প্রতিষ্ঠানটির নাম ফের পরিবর্তন করে এটিআই (এগ্রিকালচার প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউট) রাখা হয়। এসময়ে প্রশিক্ষণের মেয়াদকাল বাড়িয়ে ৩বছর করা হয় এবং ডিপ্লোমা কোর্সের সনদপত্র দেয়া হয়। প্রতিবছর ৬০জন করে ছাত্র এই প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার সুযোগ লাভ করে। পরবর্তীতে ২০১১ সাল থেকে এটিআইতে ৪বছরের ডিপ্লোমা কোর্স চালু করা হয়।
সময়ের পরিক্রমায় এটি হয়ে উঠেছে দেশের একটি অন্যতম কৃষি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। বর্তমানে এখানে ৪ বছরের ডিপ্লোমা কোর্সে প্রতিবছর প্রায় ২৫০ শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়ে থাকে। কর্মসংস্থানে সাফল্য এবং কৃষি ক্ষেত্রে দক্ষ জনবল তৈরির মাধ্যমে এটিআই এর সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে।
প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে ৪৭.৯৫ একর জমি, আধুনিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, আবাসিক হোস্টেল, ল্যাব, ক্লাসরুম, দপ্তর ভবন, সুবিশাল ৫টি পুকুর, লেক, কৃষি জমি, গবাদিপশুর ঘর, গেস্ট হাউজসহ নানা অবকাঠামো। মনোরম পরিবেশে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানটি শুধু কৃষি শিক্ষা নয়, পর্যটন সম্ভাবনাও বহন করছে। লেক ঘিরে গড়ে তোলা যেতে পারে নৌভ্রমণ ও শিশু পার্ক। কৃত্রিম স্রোতের মাধ্যমে সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে একটি আধুনিক কৃষিভিত্তিক শিক্ষানগরী হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।
ভৌগোলিক দিক থেকে গাইবান্ধা শহরের অদূরে গাইবান্ধা-সাঘাটা রোডে বাংলাবাজার থেকে বোর্ডবাজার ঘেষা অবস্থিত এটিআই। দক্ষিণে প্রাণিসম্পদ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পাশে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার, পশ্চিম পাশে প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, সদর উপজেলা অফিসসহ বহু সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অবস্থান এটিকে একটি শিক্ষাবান্ধব জোনে পরিণত করেছে।
এই এটিআই-কে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হলে উত্তরাঞ্চলের নদীভাঙন ও চরাঞ্চল অধ্যুষিত জেলা চিলমারী, রৌমারী, রাজীবপুর, ফুলছড়ি, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, গাইবান্ধা সদর ছাড়াও বগুড়া, কুড়িগ্রাম, রংপুর, জামালপুর, লালমনিরহাটসহ বহু জেলার শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার দরজা খুলে যাবে। একইসাথে স্থানীয়ভাবে বহুমাত্রিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, বাজার ব্যবস্থাপনার প্রসার, আবাসন প্রকল্প ও কৃষি প্রযুক্তির সম্প্রসারণ এবং গবেষণাভিত্তিক জ্ঞান বিস্তারে বিপ্লব ঘটতে পারে।
গাইবান্ধার কৃষি উন্নয়ন, শিক্ষা প্রসার এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য এটিআই-কে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর এখন সময়ের দাবি।
ভিওডি বাংলা/ইমন মিয়া/এম
প্রকাশ্য দিবালোকে নিজ বাড়িতে প্রবীণ অধ্যাপককে কোপালো দুর্বৃত্তরা
পাবনা পৌর শহরের কালাচাঁদপাড়ায় প্রকাশ্য দিবালোকে নিজ বাড়িতে প্রবীণ অধ্যাপক …

পুলিশ সদস্যকে র্যাংক ব্যাজ পরালেন পুলিশ সুপার নিশাত এঞ্জেলা
গাইবান্ধা জেলা পুলিশের উদ্যোগে আয়োজিত এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে পদোন্নতিপ্রাপ্ত এক …

সুন্দরগঞ্জে নদীভাঙনে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি
সুন্দরগঞ্জে তিস্তা নদীর তীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে শ্রীপুর …
