শিগগিরই জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা আসবে: আইন উপদেষ্টা


আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সব ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই আগামী জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা আসবে যে নির্বাচনে সকলেই ভোট দিতে পারবেন। তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়েও ভয়াবহ তথ্য রয়েছে। তবে আগামী জাতীয় নির্বাচনটি হবে অনেক ভালো নির্বাচন।’
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, বর্তমান সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করেছে। এ সরকারের সংস্কার কার্যক্রম পরবর্তী সরকার এসে অবশ্যই ধরে রাখবে। বিশেষ করে আইনি সংস্কার, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও ডিজিটালাইজেশন। রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের কারণে কয়েক হাজার রাজনৈতিক নেতা, কর্মী এবং সাধারণ মানুষ হয়রানি থেকে মুক্তি পেয়েছে।
রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার
রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলার বিষয়ে জেলা পর্যায়ে গঠিত কমিটি এবং আইন ও বিচার বিভাগের এজাহার, চার্জশিটসহ বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনার পর ১৫ হাজারেরও বেশি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। সূচারুভাবে সকল ভূক্তভোগীকে এই সুযোগ চলমান রাখার লক্ষ্যে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এছাড়া সাইবার আইনের অধীনে ৪০৮টি স্পিচ অফেন্স সংক্রান্ত মামলা এবং জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে দায়ের করা ৭৫২টি হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এসব মামলা প্রত্যাহারের কারণে কয়েক লাখ রাজনৈতিক নেতা, কর্মী ও স্বাধীন মতের মানুষ হয়রানি থেকে রেহাই পেয়েছে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকারের কার্যকালে আইন মন্ত্রণালয়ের দৈনন্দিন কার্যক্রমে লক্ষণীয় গতিশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত এক বছরে মন্ত্রী পর্যায়ে নিষ্পত্তিকৃত নথির সংখ্যা ১ হাজার ২৮৩টি। বিগত সরকারের একই সময়ে ৮৩৪টি নথি নিষ্পত্তি হয়েছিল। গত এক বছরে আইন মন্ত্রণালয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগসহ অন্যান্য দফতরে ৩৯১টি বিষয়ে আইনি মতামত প্রদান করেছে। যা গত সরকারের আমলে ১৮০টি ছিল। এসময়ে সনদ, এফিডেভিট, দলিলসহ ৩৬ ধরনের মোট ১ লাখ ৫৯ হাজার ৫৪৪ ডকুমেন্ট সত্যায়ন হয়েছে যা আগের তুলনায় দ্বিগুণ। আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে রেকর্ড ১২টি অংশীজন মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে।
নতুন দায়িত্ব হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত বিভিন্ন সংস্কার কমিশন, গুম সংক্রান্ত অপরাধ তদন্ত কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে আইন মন্ত্রণালয় থেকে সাচিবিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। দেশে প্রথমবারের মতো বিধিমালা ও প্রবিধানগুলোকে কোডিফাই করার কাজ শুরু হয়েছে।
আসিফ নজরুল বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর ফ্যাসিষ্ট আমলে নিয়োগকৃত সকল আইন কর্মকর্তা পালিয়ে যাওয়ার কারণে গত একবছরে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আইন কর্মকর্তাকে নিয়োগ করতে হয়েছে। সারাদেশের বিভিন্ন আদালত ও ট্রাইব্যুনালে ৪ হাজার ৮৮৯ জন সরকারি আইন কর্মকর্তা এবং অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে ২৭৪ জন অ্যাটর্নিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিচারক ও প্রসিকিউটর নিয়োগ করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগে পাঁচজন বিচারপতি, হাইকোর্ট বিভাগে ২৩ জন বিচারপতি নিয়োগে সাচিবিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
ভিওডি বাংলা/ এমপি