তালা উপজেলায় মরদেহ দাফনে চরম সংকট


সাতক্ষীরার তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নে দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ। এতে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, কৃষিজমি সবই পানিতে তলিয়ে রয়েছে। চরমে পৌঁছেছে বিশুদ্ধ পানির সংকট ও পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব। এই জলাবদ্ধতার কারণে এবার দেখা দিয়েছে এক ভয়াবহ সমস্যা- মরদেহ দাফনে চরম সংকট।
শুত্রুবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের পাঁচরোখী গ্রামের মরহুম আব্দুস সোহবান শেখের মৃত্যুর পর তাকে পৈতৃক কবরস্থানে দাফনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কিন্তু কবরস্থান পুরোপুরি পানিতে তলিয়ে থাকায় মরদেহ দাফন করা সম্ভব হচ্ছিল না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, স্বজনরা বিকল্প হিসেবে ডুমুরিয়া উপজেলার আরশ নগরে মামার বাড়িতে দাফনের প্রস্তাব দেন। তবে মরহুমের বড় ছেলে ডা. সহিদুল ইসলাম তা নাকচ করে দেন। শেষ পর্যন্ত পানির মধ্যেই বালির বস্তা দিয়ে চারপাশ ঘিরে কবর খুঁড়ে দাফন করা হয়েছে।
মজিবার রহমান শেখ বলেন, তিন বছর ধরে এই পানি আমাদের স্বাভাবিক জীবন ধ্বংস করে দিয়েছে। সাংবাদিক, এনজিওরা আসেন, কথা বলেন, কিন্তু সমাধান কিছুই হয় না। কৃষিকাজ বন্ধ, কাজ নেই, ঘর থেকেও বের হতে পারি না।
তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইতোমধ্যে এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পানির গতি বাড়াতে বিভিন্ন খালের মুখে থাকা নেটপাটা ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করা হয়েছে। তবে কেশবপুরের উজানের পানি না সরালে আশপাশের আরও ১০টি গ্রাম স্থায়ী জলাবদ্ধতায় পড়বে। নোয়াপাড়া খাল দিয়ে কিছু পানি সরানো গেলেও নরনিয়া খাল ও ভদ্রা নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশনে বড় বাধা সৃষ্টি হয়েছে। ভদ্রা নদী খনন করলেই স্থায়ী সমাধান সম্ভব।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপা রাণী সরকার বলেন, জলাবদ্ধতা উপজেলার অন্যতম প্রধান সমস্যা। ইতোমধ্যে কয়েকটি খালের প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করা হয়েছে। আমি নিজেও একাধিকবার এলাকা পরিদর্শন করেছি। দ্রুত পানি অপসারণে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ