বিএনপি পরীক্ষিত গণতন্ত্রের দল- আবদুস সালাম


ভোট ঠেকাইতে গিয়ে আবারও ফ্যাসিবাদকে ডেকে না আনতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম। তিনি বলেন, দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নির্বাচনের উপযোগী নয় বলে যারা বলছেন, তাদেরকে বলছি; ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে ৮ আগস্ট দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন ছিল। তখন তো পুলিশ ছিল না। কাজেই ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন সবাই মিলে করেছি তারা অন্তত ভোট ঠেকাইতে গিয়ে আবারও ফ্যাসিবাদকে ডেকে আনিয়েন না।
রোববার ১৭ রাজধানীর এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আবদুস সালাম। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৮০ জন্মদিন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আজকে সারাদেশে রাজধানীর মোহাম্মদপুরকে খারাপ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে কারা? সেটা ভাবতে হবে। কারা মোহাম্মদপুরের কপালে এমন একটি খারাপ চিহৃ একেঁছে। মূলত এই এলাকা ঘিরে আজকে চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির যে রিপোর্ট উঠে আসছে তা শুরু হয়েছে আওয়ামী লীগ আমলে। আজকে নতুন করে অনেকেই বিএনপিকে সেই জায়গায় নিতে চায়। আওয়ামী লীগ এবং কিছু লোক যারা আমাদের সঙ্গে থেকে সুযোগ সুবিধা নিয়েছে তারাও আমাদেরকে সেই জায়গায় নিতে চায়। কিন্তু আমরা বলি; বিএনপি আর আওয়ামী লীগ এক নয়।আওয়ামী লীগ পরীক্ষিত একটা সন্ত্রাসী ও দখলবাজ দল। আর বিএনপি হলো পরীক্ষিত গণতন্ত্রের দল। যখন ৭১ সালে ২৫ মার্চে শেখ মুজিব চলে গেল পাকিস্তান। তখন বুকে সাহস নিয়ে নিজের জীবন বিপন্ন করে মেজর জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
আবদুস সালাম বলেন, ৭২ থেকে ৭৫ দেশ চালাতে ব্যর্থ আওয়ামী লীগ। তখন রাস্তায় রাস্তায় মানুষ মরে পড়ে থাকতো। বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে তখন দাফন করত আঞ্জুমানে মফিদুল। যার নাম এরআগে কখনো কেউ শুনে নাই। ত্রাণ সামগ্রি সারা পৃথিবী থেকে আসতো ,সেই ত্রাণ পাওয়া যেত সীমান্তের ওপারে। যাদের জন্য আসতো তারা পাইতো না। তখন শেখ মুজিব বলেছিলো সারাদেশ থেকে চেয়ে যা নিয়ে আসি তা আমার চারপাশের চোরের দল চাটার দল সব খেয়ে ফেলে। তখন আওয়ামী লীগ নেতারা বলতো- এতো কষ্ট নির্যাতন সহ্য করেছে আওয়ামী লীগ তাই কিছু খেয়ে লই; এই যে দেশও খেয়েছে শেখ মুজিবকেও খেয়েছে।
বিগত ১৭ বছরে শেখ হাসিনা তার বাবাকে বিক্রি করতে করতে এমন জায়গায় নিয়ে গেল; ওর বাবারে আবার দ্বিতীয় বার মারল। আজকে শেখ মুজিবকে যে অপমান তার জন্য দায়ী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, শেখ মুজিবের ছবি সংসদে ঝুলিয়ে রাখতে আইন করতে হয়েছিল এবং পাহারায় পুলিশ লাগত। কিন্তু জিয়াউর রহমানের ছবি পাহারায় পুলিশের প্রয়োজন পড়েনি। কারণ জিয়াউর রহমান এই দেশে এমন শাসক ছিলেন যার কোনো দুর্নাম ছিলো না। যিনি নিজের বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন দেখে নাই। যেটা ন্যায় তিনি সেটাই করেছেন। তাঁর দলও যদি অন্যায় করেছে দলকেও ছাড়ে নাই। শেখ হাসিনার পুত্র জয় আইসিটি সেক্টর থেকেই ৬০ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। যারা আইসিটি সেক্টরে কাজ করে তারা বলছেন। তাই অন্তর্বর্তী সরকারকেও বলব; ওই জয়ের পেতাত্মা, জুনাইদ আহমেদ পলকের পেতাত্মারা এখনো আইসিটি সেক্টরে ব্যবস্থা করছেন। কিভাবে করে? এটা তো বিএনপির দায়িত্ব না; সরকারের দায়িত্ব।
স্থানীয় প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বিএনপিকে কোনো চাঁদাবাজ ও দখলবাজ নাই। চাঁদাবাজ ও দখলবাজ থাকলেও তারা থাকতে পারবে না। যদি কেউ করে তাহলে তাকে গ্রেপ্তার করবেন। কিন্তু তারপরও ঘটনা ঘটার পর কেন বিএনপির নাম আসে। বিএনপির নাম তো আসা উচিত নয়; আসলে তো পুলিশের নাম আসবে। কারণ আপনি ধরেন না কেন?
সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের দোসরদের গ্রেপ্তার করুন, অন্যথায় গণপিটুনিতে মারা গেলে জনগণকে দায়ি করবেন না। শেখ হাসিনা দেশের মধ্যে একটা অরাজকতা সৃষ্টি করতে চায়। শেখ হাসিনাকে তার অপকর্মের দায়ে ফাঁসি দিতে হবে এবং তারপক্ষে যে সকল সাংবাদিক লিখেছে তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
আবদুস সালাম বলেন, আমরা জনগণের জন্য রাজনীতি করি। ১৭ বছর নেতাকর্মীদের বুকে আগুন জ্বলছে। তাদের কেউ বাড়িতে থাকতে পারে নাই, কেউ তার সন্তানকে দেখতে পারে নাই। কেউ গুলি খেয়েছে, কেউ গুম হয়েছে আবার অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আওয়ামী লীগ দখল করে নিয়েছে। ভারত যেভাবে পুশ ইন করতেছে তাকে বিএনপির সরকার ছাড়া কেউ থামাতে পারবে না। ধমক দিতে পারবে না।
ভিওডি বাংলা/ এমপি