• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

নদী ভাঙনে বিলীন হওয়ার পথে আশ্রয়ণ প্রকল্প

পটুয়াখালী প্রতিনিধি    ১৯ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৩৬ এ.এম.
ছবি-ভিওডি বাংলা

পটুয়াখালীর মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়নের পশ্চিম খাজুরা গোড়া খালে নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্প এখন নদী ভাঙনের হুমকিতে। গৃহহীনদের নতুন আশার আলো দেখাতে নির্মিত ঘরবাড়ি আজ নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায়। এতে ৭১টি পরিবার পড়েছে চরম দুর্ভোগে। ঘর পেলেও পাচ্ছেন না বসবাসের উপযোগী পরিবেশ-নেই স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা কিংবা কর্মসংস্থানের সুযোগ। ফলে আশ্রয়ের বদলে প্রকল্পটি এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। 

আশ্রয়ণের বাসিন্দা লাইলী বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা যে ঘরে থাকি, সেটা মানুষ তো দূরের কথা-গরু-ছাগল রাখারও উপযুক্ত নয়।”

অন্যদিকে জেলে নুর ইসলাম বলেন, ‘ঘরের টিন ক্ষয়ে গেছে, দরজা-জানালা নেই। সামান্য বৃষ্টিতেই পানি ঢোকে। পলিথিন ও ত্রিপল দিয়ে কোনোমতে টিকে আছি।’

২০০৫ সালে খাপড়াভাঙ্গা নদীর তীরে ৮০ পরিবারের জন্য এ প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়। উদ্দেশ্য ছিল জেলেদের নিরাপদ আবাসন নিশ্চিত করা। কিন্তু দুই বছরের মাথায় ঘূর্ণিঝড় সিডরে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রকল্পটি। এরপর আর সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

নদীতে দ্রুতগতির ট্রলার চলাচলের কারণে ভাঙন আরও তীব্র হচ্ছে। বর্তমানে তিন শতাধিক মানুষ যে কোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার শঙ্কায় আছেন। ইতিমধ্যে অন্তত ৯টি পরিবার প্রকল্প ছেড়ে চলে গেছে।

বাসিন্দা জালাল হাওলাদার (৫৫) বলেন, ‘প্রকল্পটি বিএনপি সরকারের সময়ে হয়েছিল। তাই বর্তমান সরকার মেরামতে নজর দেয়নি।’
 
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঘরের টিনে মরিচা, বেড়া ভেঙে পড়েছে। অনেক পরিবার পলিথিন দিয়ে ঘর ঢেকে দিন কাটাচ্ছে। নেই সুপেয় পানি, স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার কিংবা শিশু শিক্ষালয়। ফলে শিশুরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

বাসিন্দা কবির হোসেনের ভাষায়, ‘অন্য কোথাও জায়গা নেই বলেই এখানে আছি। না হলে আমরাও চলে যেতাম।’

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, দূরের ট্রলারগুলো দ্রুতগতিতে চলায় ভাঙন আরও বেড়েছে। কলাপাড়া উপজেলা ফিশিং ট্রলার মাঝি ও মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন মাঝি বলেন, ‘আমাদের স্থানীয় ট্রলার আস্তে চলে। কিন্তু বাইরের ট্রলারগুলোর গতিই ভাঙনের মূল কারণ।’

লতাচাপলী ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মিজানুর রহমান হাওলাদার জানান, দ্রুত সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. ইয়াসীন সাদেক বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর মেরামত ও নদী ভাঙন রোধে জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ভিওডি বাংলা/জা

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ভারতে আটক ৩৯ বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর
ভারতে আটক ৩৯ বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর
মাদকবিরোধী অভিযানে নেশা জাতীয় ইনজেকশনসহ আটক ১
মাদকবিরোধী অভিযানে নেশা জাতীয় ইনজেকশনসহ আটক ১
রাজবাড়ীতে শিশু খাদ্যে ভেজাল, প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ টাকা জরিমানা
রাজবাড়ীতে শিশু খাদ্যে ভেজাল, প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ টাকা জরিমানা