পূর্বের নিয়মে নির্বাচন হতে পরে না : পীর সাহের চরমোনাই


দেশ যখন আগুনের মতো জ্বলছিলো তখন ছাত্র-জনতা রাজপথে নেমে এসেছিলো অন্যায়, খুন-খারাবী ও বৈষম্য থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য। তারা রক্ত দিয়ে দেশকে উদ্ধার করেছে। যদি কোন অশুভচক্র চাপ প্রয়োগ করে প্রধান উপদেষ্টাকে সংস্কারের আগে নির্বাচনে ঘোষনা দিতে বাধ্য করে তাহলে আমরা পরিস্কার বলছি, আমরা ছাত্র-জনতা কিন্তু রাজপথে ছাড়ি নাই। যতদিন পর্যন্ত দেশের আইন-শৃংখলা সুন্দর না হবে, কাংঙ্খিত সংস্কার না হবে, বিচার দৃশ্যমান না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত বাংলার জমিনে পুর্বের নিয়মে নির্বাচন হতে পারে না।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিকাল তিনটায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত “জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে পীর সাহেব চরমোনাই উপর্যুক্ত মন্তব্য করেছেন।
চরমোনাই বলেন, বিগত ৫৪ বছরে যে পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়েছে সেই নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কারই হলো সংস্কারের প্রধান লক্ষ্য। সেই সংস্কারটাই হলো বিশ্বের বহুদেশের মতো পিআর পদ্ধতির নির্বাচন। এর মাধ্যমে বহুদেশে শান্তি এসেছে। কালোটাকার দৌরাত্ম, মাস্তানি ও সন্ত্রাস বন্ধ করার একমাত্র উপায় হলো পিআর পিদ্ধতির নির্বাচন। বিভিন্ন জরিপেও উঠে আসছে যে, অধিকাংশ মানুষই পিআর চায়। পিআর আজকে দেশের সকল ধারার মানুষের দাবীতে পরিনত হয়েছে।
তিনি বলেন, সংস্কার দৃশ্যমান হতে হবে। নির্বাচনের আগেই জুলাই সনদের আইনী স্বীকৃতি দিতে হবে। নির্বাচনের পরে জুলাই সনদের আইনী স্বীকৃতি কেউ দিয়ে দেবে সেটা আশার গুড়ে বালি। সবাইকে আহবান জানাবো, টেন্ডারবাজী, রাহাজানি, সন্ত্রাস থেকে এবং বিদেশি অধিপত্য থেকে মুক্তির জন্য একমাত্র পদ্ধতি হলো পিআর পদ্ধতি। এই দাবী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কর্মসূচি চালিয়ে যাবে। তিনি জোড় দিয়ে বলেন, আমরা রাজপথ ছাড়ছি না।
আতাউর রহমান বলেন, এই সরকারের আমলেই জুলাই সনদের আইনীভিত্তি নিশ্চিত করতে হবে কারণ পরবর্তী কেউ তা বাস্তবায়ন করবেন সে আশা করা যায় না। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার আচরণ রহস্যজনক। তিনি নিজেই বলছেন, সংস্কার না হলে দেশ আগের ধারায় ফিরে যাবে অথচ তিনি নিজেই জুলাই সনদের আইনী ভিত্তি নিশ্চিত না করেই নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। মাওলানা গাজী আতাউর রহমান প্রশ্ন করে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা কার চাপে গণমানুষের প্রত্যাশাকে উপেক্ষা করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে দিলেন?
তিনি বলেন, কুমিল্লা বিএনপির এক নেতা একজন বোর্ড চেয়ারম্যানের কলিজা খুলে নেয়ার হুমকি দিয়েছে। এই দৈত্য-দানবদের কারণে বিদ্যমান পদ্ধতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব না। তাই দেশকে রক্ষা করতে হলে এমনকি বিএনপি নেতাদের নিরাপত্তার জন্যও পিআর পদ্ধতিই একমাত্র সমাধান। মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না হলে কেবল সাক্ষী গোপাল হওয়ার জন্য ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে নির্বাচনে যাবে না। বরং দেশের মানুষকে সাথে নিয়ে ভোটের অধিকার রক্ষা করার জন্য আন্দোলন করে যাবে ।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন, মহানগর উত্তরের সভাপতি ও দলের যুগ্মমহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, দলের যুগ্মমহাসচিব ও মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমাদ আব্দুল কাউয়ুম, সহ প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক কেএম শরীয়াতুল্লাহসহ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিনের নেতৃবৃন্দ।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ