ওয়ান টাইম প্লাস্টিক কাপে চা-কফি পান বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি


চা-কফি পান না করা মানুষ খুঁজে পাওয়া আজকাল প্রায় অসম্ভব। শহরের প্রতিটি মোড়, অফিস বা বাজারে চা-কফির দোকান আছে। কিন্তু অনেক দোকানে চা-কফি পরিবেশন হয় একবার ব্যবহারযোগ্য বা ওয়ান টাইম প্লাস্টিক কাপে। এ ধরনের কাপ মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে।
প্লাস্টিক কণার মাধ্যমে শরীরে নানাভাবে ক্ষতি ঘটতে পারে। হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হরমোনজনিত সমস্যা এবং সন্তান ধারণ ক্ষমতার ক্ষতি হতে পারে। শিশু ও গর্ভের শিশুর বিকাশেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে কাপে গরম চা ঢাললে প্লাস্টিক গলে চায়ে মিশে যায়। গবেষকরা জানাচ্ছেন, একটি কাপ চায়ে প্রায় ২৫ হাজার মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকে।
পরিবেশবিদরা বলছেন, কাগজের কাপেও রাসায়নিক ও মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকে, যা গরম পানীয়ের সংস্পর্শে শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এগুলো থাইরয়েডসহ বিভিন্ন গুরুতর রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়া, প্লাস্টিক কাপ পরিবেশে ৫০ বছর পর্যন্ত টিকে থেকে মাটি, পানি ও বাতাসে মাইক্রোপ্লাস্টিক ছড়িয়ে বাস্তুতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। বাংলাদেশে বছরে ৮৬ হাজার ৭০০ টনের বেশি ওয়ান টাইম প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যার অধিকাংশই আসে খাবার প্যাকেজিং থেকে।
রাজধানীর চায়ের দোকানি আলিম মিয়া, আক্কাস আলী ও নিজামউদ্দিন জানান, ক্রেতার চাহিদার চাপেই তারা এই কাপ ব্যবহার করতে বাধ্য। মোহাম্মদপুর টাউনহল বাজারের ব্যবসায়ী সুজন মিয়া বলেন, প্রতিদিন প্রায় ১ লাখ ওয়ান টাইম প্লাস্টিক কাপ বিক্রি হয়।
বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ অনুযায়ী ওয়ানটাইম প্লাস্টিক কাপের ব্যবহার সীমিত করার বিধান আছে। এ ব্যবহারে দণ্ড ও জরিমানা আরোপ করা যেতে পারে।
পরিবেশবিদরা বলছেন, প্লাস্টিক ব্যবহারের পুরোপুরি এড়ানো সম্ভব না হলেও অনেকটা কমানো সম্ভব। ব্যবহার করতে হলেও ভালো মানের প্লাস্টিক বেছে নেওয়া, ব্যবহারবিধি মেনে চলা এবং পরিবেশবান্ধব বিকল্প খুঁজে বের করা জরুরি। প্লাস্টিক পণ্য রিসাইকেল করাও স্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
ভিওডি বাংলা/জা