‘কাটা দিয়ে কাটা তুলতে হয়’: রাশেদ খান


সম্প্রতি দেশের একটি টেলিভিশন চ্যানেলে অনুষ্ঠিত টকশো-তে দেওয়া গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের আংশিক বক্তব্য নিয়ে সমালোচনা করায় অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যের একহাত নিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘পিনাকী ভট্টাচার্য দাদা প্রমাণ করে দিলেন কাটা দিয়ে কাটা তুলতে হয় (শত্রুকে শত্রু দিয়ে ঘায়েল করতে হয়)।
পাঠকদের জন্য রাশেদ খানের পোস্টটি তুলে ধরা হলো-
‘প্রিয়, পিনাকী ভট্টাচার্য দাদা..
আজকাল ফটোকার্ড ও গণমাধ্যমের শিরোনাম এমন হচ্ছে যে, পুরো বক্তব্যের প্রতিনিধিত্ব করে না। এতে পাঠক বিভ্রান্ত হয় এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ঘায়েল করার সুযোগ পায়। ঠিক গ্লোবাল টেলিভিশনে নুরুল হক নুরের টকশোর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কয়েকটি গণমাধ্যমের হেডলাইন এমন যে, মনে হচ্ছে নুরুল হক নুর আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার পক্ষে মতামত দিচ্ছেন। অথচ পুরো বক্তব্য শুনলে বোঝা যাবে, নুরুল হক নুর আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বলছেন। এ বিষয়ে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য দাদাও দেখলাম নুরুল হক নুরকে নিয়ে কালের কণ্ঠের করা একটি সংবাদ প্রচার করেছেন। কমেন্টে আবার প্রথম আলোর আরেকটা নিউজ যোগ করে দিয়েছেন। অথচ তারা প্রথম আলোর বিপক্ষের মানুষ। কিন্তু নুরুল হক নুরকে ঘায়েল করতে প্রথম আলোর করা নিউজ লিংক শেয়ার করলেন। আবার বসুন্ধরার বিরুদ্ধে তারা সব সময় সোচ্চার। তবে নুরুল হক নুরকে ঘায়েল করতে বসুন্ধরার মালিকানাধীন কালের কণ্ঠের সংবাদ প্রচার করলেন। পিনাকী ভট্টাচার্য দাদা প্রমাণ করে দিলেন কাটা দিয়ে কাটা তুলতে হয় (শত্রুকে শত্রু দিয়ে ঘায়েল করতে হয়)।
একটা ঘটনা বলি, কিছুদিন আগে জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে ৪টি সংগঠনের যৌথ সংবাদ সম্মেলন করার বিষয়ে একটা পোস্টারিং করে আয়োজকরা। সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন সেটা শেয়ার করেন। কিন্তু গণঅধিকার পরিষদের নাম থাকায় পিনাকী দাদা সেটা শেয়ার করতে রাজি হননি। পরবর্তীতে গণঅধিকার পরিষদের নাম কেটে তিনি প্রচার করেন।
পিনাকী ভট্টাচার্য দাদার বিরুদ্ধে আমার কখনোই বক্তব্য দেওয়ার ইচ্ছে নেই, ছিলও না। কিন্তু তিনি যখন আমাদের ঘায়েল করতে আসেন, তখন আমাদের জবাবটা দেওয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
দেখেন তিনি নুরুল হক নুর বা গণঅধিকার পরিষদকে নিয়ে কয়েকটা ভিডিও করেছিলেন। আমি লাইন ধরে ধরে দেখিয়ে দিয়েছিলাম যে, তিনি কিভাবে সত্যের সঙ্গে মিথ্যা বা মিথ্যার সঙ্গে সত্যের আশ্রয় নিয়েছিলেন। এরপরে তিনিও আর কিছু বলেননি, আমিও তাকে নিয়ে আর কোনো মন্তব্য করিনি।
পরিশেষে বলি, ইলিয়াস হোসাইন ভাইয়ের বাংলা এডিশনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমি ইলিয়াস হোসাইন ভাইয়ের আমন্ত্রণে উপস্থিত হয়ে বক্তব্যে বলেছিলাম, পিনাকী দাদা, ইলিয়াস হোসাইন ভাই ও কনক সরোয়ার ভাইয়েরা দেশের জন্য অনেক ভূমিকা রেখেছেন। তারা দেশে আসুক আমরা বিমানবন্দরে তাদের ওয়েলকাম জানাতে অপেক্ষা করব। তাদের সংগ্রাম আমরা শিকার করি।
পিনাকী ভট্টাচার্য দাদা একজন জ্ঞানী মানুষ, তার প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে, হেডলাইন বা ফটোকার্ড দেখেই সিদ্ধান্ত নেবেন না। পুরো সংবাদ বা বক্তব্য পড়ে মন্তব্য করবেন। আপনি বিদেশ থেকে লড়াই করেছেন। মনে রাখবেন নুরুল হক নুর জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অ্যারেস্ট হন এবং ১০ দিন রিমান্ডের পর কোর্টে তুললে ২ আগস্ট তিনি ঘোষণা দেন ৯০% সরকারের পতন হয়ে গেছে, ১০% ধাক্কা দেন।
দাদা, আপনার মনে রাখা উচিত, সরকার পতন না হলে নুরুল হক নুরের কিন্তু ফাঁসি হতো। আপনি গণঅভ্যুত্থানের পরেও দেশে আসেননি, ভবিষ্যতেও আসবেন কি জানি না। তবে শুধু এতটুকু অনুরোধ করব, রাজপথে যারা রক্ত বিসর্জন দিয়ে নেতা হয়েছে, তাদের ক্যারিয়ার ধ্বংস করতে একের পর এক ভিডিও বানিয়েন না। আপনি সারাক্ষণ ভারত বিরোধিতা করেও কিন্তু ঠিকই ভারত হয়ে ফ্রান্সে যেতে পেরেছেন। আমরা কিন্তু পরিস্থিতি খারাপ হলে কখনো ভারতে ঢুকতে পারব না, ঢোকার মানসিকতাও নাই। যে আপনি ভারত বিরোধিতা করেও ভারতে নিরাপদ আশ্রয় পান, সেই আপনাকে নিয়ে কিন্তু বহু রহস্য থেকে যায়। আবার যে আপনি অনেক ইসলামিক মূল্যবোধের বক্তব্য প্রচার করেন, সেই আপনি কেনো আজও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেননি? এই দেশের মানুষকে সহজে ধর্মের বয়ান শুনিয়ে বিভ্রান্ত করা যায়। আর সেই পথের একজন সফল ব্যক্তি আপনি...।’
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ