• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

অন্তর্বর্তী সরকারকে জবাবদিহিতা করতে হবে : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক    ২২ আগস্ট ২০২৫, ০৫:০৭ পি.এম.
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

গুম ঘটনাবলী ‘জনসমক্ষে আনা এবং গণশুনানি’ করতে অন্তবর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার বিকালে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘আমি খুব পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, আমাদের যে অন্তবর্তীকালীন সরকার আছে তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে এই গুম কমিশনকে পাবলিকলি নিয়ে আসার, পাবলিক শুনানি করার। তারা ব্যর্থ হয়েছে এই ইস্যুগুলো তাদের আত্মীয়দের, তাদের মায়েদের, তাদের ভাইদের যে কান্না সেই কান্নাকে বন্ধ করার। এটার জন্য তাদেরকে(অন্তবর্তীকালীন সরকার) অবশ্যই জবাবদিহি করতেই হবে।'

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আমাদের একটা দাবি ছিল এসব ঘটনার বিচার করতে হবে। আমরা এইটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি যে, এই বাচ্চাগুলোর সঙ্গে আমরা সারাক্ষন আছি, তুলির(সানজিদা ইসলাম তুলি) মায়ের সঙ্গে সারাক্ষণ আছি এবং আমরা শেষ পর্যন্ত যতক্ষণ পর্যন্ত না এদের বিচার চূড়ান্ত হবে আমরা তাদের সঙ্গেই থাকব। আমরা এইটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি যে, এই বাচ্চাগুলোর সঙ্গে আমরা সারাক্ষন আছি, তুলির(সানজিদা ইসলাম তুলি) মায়ের সঙ্গে সারাক্ষণ আছি এবং আমরা শেষ পর্যন্ত যতক্ষণ পর্যন্ত না এদের বিচার চূড়ান্ত হবে আমরা তাদের সঙ্গেই থাকব।”

তিনি বলেন, ‘‘একটা কথা আমরা খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, প্রথম দিন থেকে আমরা এই গুম হওয়া পরিবারের সঙ্গে আছি। আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের সঙ্গে আছি। আমরা আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছয় বছর মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটক থেকেছেন। আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব নির্বাসিত হয়েছিলেন.. এখনো আছেন।”

‘‘ আমরা যারা নেতৃত্ব করেছি তার মধ্যে একজনও বাকি নেই যে, যার বিরুদ্ধে এক‘শ, দেড়‘‘শ, দুই‘শ, তিন‘শ, চার‘শ পর্যন্ত মামলা নেই এবং সেই মামলাতে গ্রেফতার হইনি। তাই এ কথা ভাবাটা ভুল হবে, যে বিএনপি এই বিষয়গুলোকে এড়িয়ে যাবে।”

গুম-খুনের শিকার স্বজনদের কষ্টের বিষয়টি উল্লেখ করতে বিএনপি মহাসচিব আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘‘ সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ে, আন্দোলনে নামা অনেকেই গুম হয়ে গেল। এক পরিবারের সাতজন পর্যন্তও গুম হলো। স্বজনহারা ছোট বাচ্চাদের দেখলে কষ্ট হয়, কারণ তাদের একসময় আরও ছোট অবস্থায় দেখেছিলাম। আজ তারা বড় হয়েছে।”

রাজধানীর মানিক মিয়ার এভিনিউতে মায়ের ডাক এর আয়োজনে আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষ্যে গুম ঘটনা নিয়ে ‘মানববন্ধন ও চিত্র প্রদর্শনী’র এই অনুষ্ঠান হয়।

‘বিচারের জন্য ভোট চাই’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘বিএনপি নির্বাচন অবশ্যই চায়, এই নির্বাচন চায় এই বিচারকে(গুমের ঘটনার) নিশ্চিত করার জন্য, বিচারগুলোকে ত্বরান্বিত করার জন্য।”

‘‘ আমাদের কাছে গুম বা ডিজ-এপিয়ারেন্স বিষয়টা বই বা খবরের কাগজের একটা তথ্য ছিল। এই অনুষ্ঠানে একজন বলল যে, ল্যাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে এটা হয়। আমাদের দেশে এটা(গুম) আগে ছিলো না। এই প্রথম ভয়াবহ দানব হাসিনা সরকার তার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে এই গুম এদেশে নিয়ে এসেছে। আমাদের ৬০ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে, আমাদের প্রায় বিশ হাজার মানুষকে বিনা বিচারে এক্সট্টা জুডিশিয়াল কিলিং করা হয়েছে, ১৭‘শ নেতা কর্মীকে গুম করা হয়েছে। আমরা এখন পর্যন্ত তার কোন সদোত্তর পাইনি।”

‘হাসিনার বিচার করতেই হবে’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আজকে এই প্রত্যাশা করব যে, আমাদের এই শিশুগুলো যারা পিতা হারিয়েছে, বোনেরা যারা ভাই হারিয়েছে, মায়েরা যারা সন্তান হারিয়েছে তাদের সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য এই সরকার চেষ্টা করবে বের করে নিয়ে আসার। সে যেই হোক না কেন, যারাই হোক না কেন, যত বড় শক্তিশালী হোক না কেন, এর চেয়ে ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অপরাধ আর কিছু হতে পারে না।”

‘‘আমরা সবাই জানি, যে ইনফোর্স ডিজএপিয়ারেন্স হচ্ছে সম্পূর্ণভাবে একটা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং সেই অপরাধের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। আজকে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, হাসিনা এই হত্যাকাণ্ডগুলোর জন্য দায়ী, হাসিনা এই গুমের জন্য দায়ী, হাসিনার বিচার অবশ্যই হতে হবে। এই দেশের মাটিতে হতে হবে এবং তার সর্বোচ্চ শাস্তি হতে হবে।”

তিনি বলেন, ‘‘ আপনারা কেউ নিরাশ হবেন না। জনগণের আন্দোলন কখনো ব্যর্থ হয় না, আজ পর্যন্ত হয়নি। এর প্রমাণ আপনারাই আপনারাই আন্দোলন করে সেটাকে সফল করেছেন।”

‘‘ আপনারাই দেখবেন, বিশেষ করে আমার তরুনেরা, যুবকেরা, এই শিশুরা দেখবে তাদের পিতা, তাদের ভাইয়ের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে সেটার বিচার তারা দেখে যেতে পারবে। সবশেষে আমার দলের পক্ষ থেকে আমি বলতে চাই যে, আমরা এই আন্দোলনের সঙ্গে ছিলাম, আমরা এই আন্দোলনের সঙ্গে আছি এবং এই আন্দোলনের শেষ পর্যন্ত যতদিন পর্যন্ত না আমরা এদের শাস্তি দিতে পারব ততদিন পর্যন্ত আমরা তাদের সঙ্গে আছি।”

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশের গুম ঘটনার তদন্ত সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য ধন্যবাদও জানান বিএনপি মহাসচিব।

‘মায়ের ডাক’ এর প্রধান সানজিদা ইসলাম তুলির সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে গুম হওয়া পরিবারের সদস্যরা এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
উমুক মার্কায় ভোট দিলে বেহেশত পাওয়া যাবে: আযম খান
উমুক মার্কায় ভোট দিলে বেহেশত পাওয়া যাবে: আযম খান
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো আপস নয়: বাবর
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো আপস নয়: বাবর
শাহবাগে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সমাবেশ চলছে
শাহবাগে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সমাবেশ চলছে