এবছর এক হাজার ৫৬ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ, টার্গেট ৪শ’কোটি টাকা
টাঙ্গাইলে পেঁপের বাম্পার ফলন


টাঙ্গাইলে পাহাড়িয়া গড়াঞ্চল মধুপুরে পেঁপের বাম্পার বাম্পার ফলন হয়েছে। আশানুরুপ দামও পাচ্ছেন কৃষকরা। একারনে পেপে চাষ করে কৃষকদের মুখে এবার হাসি ফুটেছে। উপজেলার নিজাবাড়ী ও রানিয়ান এলাকায় সরজমিনে দেখা যায়,নতুন কৃষি উদ্যোক্তা শাহাজামাল সাত বিঘা জমি লিজ নিয়ে উপলেডি জাতের পেঁপে চাষ করেছেন । তার এ ৭ বিঘা জমির পেঁপে বাগানে খরচ হয়েছে তার প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকা। তার বাগানে ইতেমধ্যে প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজার কেজি পেপে বিক্রি হয়েছে ।প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন তিনি। বাজারদর এমন অবস্থা থাকলেও তার বিক্রির পরিমাণ দাড়াতে পারে ২০ থেকে ২২ লাখ টাকা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের তথ্যমতে, এ বছর এক হাজার ৫৬ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ হয়েছে। যা প্রায় ৩৫-৪০ মেট্রিক উৎপাদন সম্ভব। যার বাজার মূল্য দাঁড়াবে ৪ শত কোটি টাকা।
জানাযায়, ঢাকাসহ দেশের সব জেলার সঙ্গে মধুপুরে যোগাযোগব্যবস্থা ভালো হওয়ায় এই এলাকার পেঁপের চাহিদা রয়েছে। মধুপুর উৎপাদিত পেঁপে চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ হয়ে থাকে। এ এলাকায় সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হচ্ছে টপলেডি জাতের পেঁপে। মধুপুরের মিলাবাড়ী, তাইঘাট, ইদিলপুর, টেলকি, বেরিবাই, গারো বাজার, দোখলা, আলোকনিয়া, লাউমুলা, অরণখোলাসহ বিভিন্ন এলাকার চাষিরা দেশীয় জাতের পাশাপাশি টপলেডি, গ্রীনলেডি, থাইসহ নানা জাতের পেঁপে চাষ করেছেন কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, পেঁপে চাষে জমি প্রস্তুত থেকে শরু করে গাছ থেকে পেঁপে তোলা পর্যন্ত বিঘাপ্রতি প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। দাম ভালো থাকলে বিঘাপ্রতি দেড় থেকে দুই লাখ টাকার বেশি পেঁপে বিক্রি করা যায়। এ কারণে উপজেলার ইউনিয়নেই কমবেশি পেঁপের আবাদ হয়ে থাকে। এ ছাড়া চাষিদের পেঁপে জমি থেকে বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে হয় না। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা এসে জমি থেকেই পেঁপে কিনে নিয়ে যান।
পেপে চাষী শাহাজামান জানান, ৭ বিঘা জমির পেঁপে বাগানে খরচ হয়েছে তার প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকা। তার বাগানে ইতেমধ্যে প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজার কেজি পেপে বিক্রি করেছেন। প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন তিনি। বাজারদর এমন অবস্থা থাকলেও বিক্রির পরিমাণ দাড়াতে পারে ২০ থেকে ২২ লাখ টাকা। এ বছর থেকে পেপে চাষকে বাণিজ্যিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি।
রানিয়ান গ্রামের কৃষক মজনু মিয়া জানান, দুই বছরের জন্য দুই বিঘা জমি লিজ নিয়ে ১৫শ’ পেপের চারা রোপন করেছেন তার খরচ হয়েছে ৫ লক্ষ টাকা। ভালো ফলন হয়েছে এ বছর পেপের দাম ভালো থাকায় ১২ লক্ষ টাকা মত বিক্রি করতে পারবেন তিনি।
পেঁপে ব্যবসারী হাজিজুল জানান, আমি প্রতি বছর ১০-১২ লক্ষ টাকার পেঁপে বাগান কিনেন। এবছর ১৭ লক্ষ টাকার পেঁপে বাগান কিনেছেন। প্রতি গাছে দেড় থেকে দুই মন করে পেঁপে ধরেছে। এ বছর ভালো লাভ থাকবে তিনি আশা করছেন।
উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, তার দায়িত্বরত এলাকা হিজাবাড়ী ইউনিয়ন ছোট বড় মিলে ১২টি বাগান রয়েছে। প্রতিদিন কৃষকদের সাথে কথা বলে নানাভাবে পরামর্শ দিয়ে থাকেন তিনি, যাতে করে ফলন ভালো হয় ও অধিক দামে নিয়ে কৃষকরা বিক্রি করতে পারেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রকিব আল রানা জানান, মধুপুরে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রচুর পরিমাণে পেঁপে চাষ হয়েছে। চারা রোপণ থেকে শুরু করে উৎপাদন পর্যন্ত কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তিন ধরনের পেপে উৎপাদন হয়। টপ লেডি, রেড লেডি, সুইট লেডি, মনুপুরের টপ লেডি পেঁপে বেশি চাষ হয়। কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীগণ প্রতিনিয়ত মাঠে গিয়ে ভিজিট করেন। যাতে করে আরো বেশি পেঁপের ফলন ভালো হয়।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ