নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন !

নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন অনুষ্টিত হবে। শুধু নির্বাচন আয়োজনের জন্যই এ সরকার গঠিত হবে। এবং এর মেয়াদ থাকবে তিন মাস। নতুন এ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কে হবেন তা এখনো নির্ধারিত হয়নি। তবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস নতুন সরকারের প্রধান পদে থাকছেন না, এটা মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তবে কোন ফর্মূলায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান নিয়োগ হবে তা নিয়ে চলছে বিশ্লেষন।জুলাই সনদের খসড়ায়ও এটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার (বিরোধীদলের) এবং জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দলের মনোনীত একজন প্রতিনিধির সমন্বয়ে ৫ সদস্যের কমিটি গঠিত হবে। এই কমিটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগে ব্যর্থ হলে বিচার বিভাগ থেকেও দু’জন প্রতিনিধি এই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
তবে এখন যেহেতু নির্বাচিত সরকার বা জাতীয় সংসদ নেই, একেবারেই ভিন্ন প্রেক্ষাপট বিরাজ করছে- তাই আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কে হবেন বা কোন পদ্ধতিতে সরকার প্রধান বাছাই করা হবে তা এখনো নির্ধারিত হয়নি। আশা করা হচ্ছে, অচীরেই একটা সিদ্ধান্ত আসবে। এ বিষয়গুলো নিয়ে সরকার এবং দেশের রাজনৈতিক দলগুলো ছাড়াও কূটনৈতিক মহল বেশ তৎপর।
সূত্রমতে, রাষ্ট্রপতি পদে মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর আয়ু শেষ হয়ে আসছে। এর আলামত ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। গত ১৬ আগস্ট রাতে অনেকটা হঠাৎ করেই বিদেশস্থ বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনগুলো থেকে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর ছবি নামানোর নির্দেশ দেয়া হয়। নির্দেশটি ছিল অলিখিত। যে কারণে মিশনগুলোর অনেকেই বিভ্রান্তিতে পড়ে গিয়েছিলেন- এটি আদৌ সঠিক কিনা। পরবর্তীতে অবশ্য, সরকারের তরফ থেকে পরিষ্কারভাবে মৌখিক নির্দেশ দেয়ার পর সবগুলো মিশন থেকেই ছবি নামানোর কাজ সম্পন্ন হয়।
কিন্তু এর শেষ পরিণতি কি, তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে। সরকারের তরফ থেকে বলা হয়, ছবির স্থানটি আপাততঃ খালি থাকবে। তার পরও এ নিয়ে আলোচনা শেষ হচ্ছে না। মোটামুটি সবারই এটা বুঝ হয়ে গেছে যে, রাষ্ট্রপতি পদে সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর আয়ু শেষ হয়ে এসেছে। রাষ্ট্রপতি পদে পরিবর্তন নিয়ে যাতে বড় ধরনের কোনো আলোড়ন সৃষ্টি না হয়, দেশবাসীর মাথায় আগে থেকেই ‘সেট’ হয়ে থাকে মূলতঃ এজন্যই ছবি নামানোর কাজটা আগে করা হয়েছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, দল দু’টি নির্বাচন ঠেকানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে আসছে। প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না। অবশেষে দেখা যাচ্ছে, তাদের এসব চেষ্টা কোনোই কাজে আসছে না। ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাদের দেখানো পথে এখন আর হাঁটছেন না। তিনি লন্ডনের চুক্তি অনুযায়ীই চলছেন। আদতে এর বাইরে যাওয়ার সুযোগও নেই তাঁর। তাঁর নিজেরও তো ‘এক্সিট’র অপরিহার্যতা রয়েছে। ড. ইউনূস এটা ভালো করেই বোঝেন যে, তিনি না চাইলেও নির্বাচন হয়ে যাবে এবং তাকে সরে যেতে হবে। তবে তা মোটেই সম্মানজনক হবে না তাঁর জন্য।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এমন স্বার্থপর আচরণে চরমভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছে জামায়াত এবং এনসিপি। তারা এখন প্রকাশ্যেই ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় সমালোচনা করছেন। ১৬ আগস্ট দলের এক আলোচনায় সভায় দেয়া বক্তৃতায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, “যাকে গণঅভ্যুত্থানের পরে সরকারপ্রধান বানানো হয়েছে উনি লন্ডনে গিয়ে সিজদা দিয়ে এসেছেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কোনো ঘটনা আছে কি না অন্তর্র্বতীকালীন সরকারপ্রধান একটি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সাথে বসে প্রেস কনফারেন্স করছেন। তিনি দাবি করেন, সেদিনই সরকারকে লন্ডনে ‘বিক্রি করে’ দেওয়া হয়েছে।”
ভিওডি বাংলা/ এমএইচপি