• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

দীর্ঘ ১১ বছর পর নেত্রকোনা জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন

নেত্রকোণা প্রতিনিধি    ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০৭:১৬ পি.এম.
ছবি: ভিওডি বাংলা

দীর্ঘ ১১ বছর পর নেত্রকোনা জেলা বি এন পির সম্মেলনের শোর জুরে সুরে বেজে উঠেছে।দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান এঁর নির্দেশক্রমে সারা দেশের ন্যায় সম্মেলনে  দলের নেতাকর্মীরাও নতুন কমিটি গঠনে উজ্জীবীত।
 
ময়মনসিংহ বিভাগের  খুবই গুরুত্বপূর্ণ জেলা নেত্রকোনা । আর তাই এই জেলাকে ঘিরে একটা বাড়তি দৃষ্টি বিভিন্ন  জেলা সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের। আগামী ৩০ শে আগস্ট সোমবার ঐতিহাসিক মোক্তার পাড়া মাঠে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বিপুল উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে সম্মেলনকে ঘিরে জেলার  নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক প্রাণের সঞ্চার ফিরে এসেছে। রংবেরঙের বিভিন্ন পেস্টুন, গেইট, তোড়ন নির্মাণ করে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে  পুরো জেলা শহর জুড়ে, ফলে উচ্ছ্বসিত হয়ে নেতাকর্মীরা মাঠে গনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। সম্মেলন পরবর্তী একই সঙ্গে কাউন্সিলও অনুষ্ঠিত হবে সম্মেলন উপলক্ষে নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ ও গতিশীলতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন । কাউন্সিলর ও নেতাকর্মীদের ঘরে ঘরে চষে বেড়াচ্ছেন। যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন তৃণমূলে।

দীর্ঘ ৬বছর আহব্বায়ক কমিটি দিয়ে চলা এই দলটি এবার ১০টি  উপজেলা ও ৫ টি পৌরসভা কমিটির অন্তর্ভূক্ত ১৫১৫ জন ভোটার সরাসরি ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে গনতন্ত্রমূখী এই দলটি দলের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক  নির্বাচন করবেন।  সম্মেলনকে সামনে রেখে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে ব্যাপক উৎসাহ ও উৎসবের আমেজ।

আসন্ন নেত্রকেনা জেলা বিএনপির  সন্মেলনে সভাপতি পদে ২ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৩ জন হেভিওয়েট  প্রার্থীর নাম শুনা যাচ্ছে। নির্বাচনে সভাপতি পদের জন্য লড়বেন বর্তমান জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক জেলা বিএনপির নির্বাচিত সাধারন সম্পাদক বিশিষ্ট অর্থোপেডিক সার্জন  ডাঃ মোঃ আনোয়ারুল হক ছাতা প্রতিকে । এ পদের জন্য অন্য প্রার্থী হলেন- নেত্রকোনা জেলা ছাত্রদলের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক জেলা বিএনপির  সাবেক নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক বিজ্ঞ জিপি এডভোকেট মাহফুজুল হক চেয়ার প্রতিক। 

অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে লড়বেন বর্তমান জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী মাছ প্রতিক,  জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম মনিরুজ্জামান দুদু, ফুট বল, জেলা যুবদলের সাবেক সহ সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন খান রনি,গরুর গাড়ি। 

নির্বাচন নিয়ে কয়েকজন ভোটারের সাথে কথা বললে তারা বলেন, আমরা সৎ, আদর্শবান ও ত্যাগী নেতাদেরকেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত করতে চাই। যারা তৃণমূলের সাধারণ নেতাকর্মীদের সুখে-দুঃখে সব সময় পাশে থাকবেন।

সভাপতি প্রার্থী সাবেক জেলা বিএনপির  নির্বাচিত সাধারন সম্পাদক  বর্তমান  আহ্বায়ক অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আনোয়ারুল হক বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। তাই আমরা স্বাধীনভাবে দলের সম্মেলন করতে পারছি। বিএনপির সম্মেলনকে ঘিরে নেত্রকোনা জেলা জুড়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। আশা করি, নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে দল আরও সুসংগঠিত হবে ও শক্তিশালী হবে।নেত্রকোণা জেলা বিএনপি'র সভাপতি পদ  কোনো ব্যক্তি স্বার্থে নয়, বরং আমাদের দলের পুনর্গঠন, জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধার এবং আগামী দিনের সংগ্রামে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে যাওয়ার তাগিদ থেকেই।
আমার কাছে এই পদ কোনো মর্যাদার প্রতীক নয় — এটি একটি দায়িত্ব, একটি দায়বদ্ধতা, একটি আত্মত্যাগের অঙ্গীকার। আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি ধাপে ছিল ত্যাগ, সংগ্রাম ও সংকল্পের গল্প,দুর্দিনে আমি সকল প্রকার প্রতিকূলতার মধ্যে  দলের সাথে ছিলাম এবং ভবিষ্যতেও থাকবো । সভাপতি পদে জয়ী হওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

সভাপতি প্রার্থী জেলা  বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সাবেক জেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির নির্বাচিত সাধারন সম্পাদক বিজ্ঞ জিপি এডভোকেট মাহফুজুল হক বলেন, আগামী ৩০  আগস্ট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আমাদের সম্মেলন। ছাত্ররাজনীতি থেকে শুরু করে দীর্ঘ চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আমি এখানে এসেছি। ছাত্র জীবন থেকে শহীদ জিয়ার একজন স্বাচ্ছা পরিক্ষিত  সৈনিক হিসেবে  আমি তৃণমূল বিএনপির সাথে সবসময়ই ছিলাম এখনও আছি এবং থাকবো। আশা করি তারা  আমাকে সভাপতি পদে ভোটে জয়যুক্ত করবেন।

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী বর্তমান জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম হিলালী  বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার আমাদের মামলা-হামলা করে নানারকম অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। তাদের অত্যাচারে অসংখ্য মামলার হুলিয়া মাথায় নিয়ে আমাদের পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। তবুও আমি দলের নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকবো। আমি আশা করি, দলীয় নেতাকর্মীরা ভোট দিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে আমাকে বিজয়ী করবেন।

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী বর্তমান জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক  এস এম মনিরুজ্জামান দুদু বলেন, আমি মনে করি বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে হবে। আমি বাল্যকাল থেকেই বিএনপির আদর্শের একজন সৈনিক। বিগত দিনে আমি সরকারের নির্যাতনের শিকার হয়েছি ও বহুবার জেল খেটেছি। আমি আশা করি এই নির্বাচনে কাউন্সিলাররা আমাকে ভোট দিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত করবেন।  

আরেক সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সাবেক ছাত্রনেতা ও মৃত্যুঞ্জয়ী  যুবদল নেতা   আব্দুল্লাহ আল মামুন খান রনি  বলেন, বিগত সরকারের আমলে আমার উপর অসংখ্যবার  হামলা মামলা ও  নির্যাতন হয়েছে, কেন্দ্র ঘোষিত সকল কর্মসূচিতে ঢাকায় এবং নেত্রকোনায় শত শত নেতাকর্মী নিয়ে সম্মুখ ভাগে থেকে  স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালন করেছি,  রাজপথে থেকে টিয়া সেলের সামনে বুক পেতে দিয়েছি,বার বার কারা নির্যাতনের শিকার হয়েছি গুম থেকে আল্লাহর  রহমতে বেঁচে এসেছি  বিএনপির মূল লক্ষ্য হলো গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করা। তারই প্রমাণ ৩০  তারিখের নির্বাচন। আমরা ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হতে চাই। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং তরুণ প্রতিনিধি হিসেবে সবার সাথে থাকতে চাই। আমি আশা করি বিগত দিনের আমার ত্যাগ তিতিক্ষাকে বিচার করে ভোটাররা আমাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করবেন ইনশাআল্লাহ।

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বাঁশখালীতে ছাত্রদলের উপর শিবিরের হামলা
বাঁশখালীতে ছাত্রদলের উপর শিবিরের হামলা
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে বিএনপির মোটরসাইকেল শোডাউন
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে বিএনপির মোটরসাইকেল শোডাউন
ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মহিলা মেম্বারকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ
ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মহিলা মেম্বারকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ