ইবিতে আন্তঃহল বিতর্ক
যুক্তি-তর্কের লড়াইয়ে জয়ী খালেদা জিয়া হল


সলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রশিবিরের আয়োজিত তিনদিন ব্যাপী আন্তঃহল বিতর্ক প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব শেষ হয়েছে। এতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে খালেদা জিয়া হল ডিবেটিং সোসাইটি।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বেলা ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়না চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হল ও খালেদা জিয়া হল ডিবেটিং সোসাইটির মধ্যে চূড়ান্ত পর্বের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। সরকারি দলে লালন শাহ হল ডিবেটিং সোসাইটি ও বিরোধী দলে খালেদা জিয়া হল ডিবেটিং সোসাইটির বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করেন।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মু. মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে ছিলেন আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন ও অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। এসময় বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজন কমিটির আহ্বায়ক এবং শাখা শিবিরের আন্তর্জাতিক ও বিতর্ক সম্পাদক হাসানুল বান্না অলি-সহ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে ছিলেন সাবেক জাতীয় টিভি বিতার্কিক ও ইবি ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য খালিদ হাসান ও সাইফুর রহমান। এছাড়াও স্পিকার হিসেবে ইবি ডিবেটিং সোসাইটির সদস্য সচিব দিদারুল ইসলাম রাসেল ও সময় নিয়ন্ত্রক হিসেবে খালেদা জিয়া হল ডিবেটিং সোসাইটির কার্যনির্বাহী সদস্য সাবরিনা খাতুন দায়িত্ব পালন করেন। বিতর্কের মোশন ছিল ‘আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাথে ধর্মীয় শিক্ষার সমন্বয়ই টেকসই উন্নয়নের পথ’।
জানা যায়, চ্যাম্পিয়ন হিসেবে বিরোধী দল ও রানার্স আপ হিসেবে
সরকারি দলকে ঘোষণা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় এক নেতাকে সেরা বিতার্কিক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরে চ্যাম্পিয়ন দলকে ট্রফি-সহ ও ৪ হাজার টাকা ও রানার্স আপ দলকে ট্রফিসহ ৩ হাজার টাকা পুরস্কৃত করা হয়।
বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মুশফিকুর রহমান, মন্ত্রী হিসেবে মিশুক শাহরিয়ার ও সাংসদ হিসেবে ইয়াসিন আলী, বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে মুমতাহিনা রিনি, উপনেতা হিসেবে তাজমিন রহমান ও সাংসদ হিসেবে তাসলিমা আরেফিন অথি অংশগ্রহণ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, ‘একটা জাতিকে যদি গড়ে তুলতে হয় তাহলে জাতির মধ্যে লজিক থাকতে হবে। কেন এটা হয়ছে? দেশ কেন এরকম হলো? এই প্রশ্নগুলো যখন মানুষ ছুঁড়তে পারে তখন দেশ ক্রমাগত সমৃদ্ধির দিকে যেতে থাকে। আমরা উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে দেখে থাকি কোন আইন পাশ করার আগে তাদের ছায়া সংসদে তার যৌক্তিকতা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক হয়। আর এই যোগ্যতা তৈরি হবে ডিবেটের মাধ্যমে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একজন ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট হবে ইউনিভার্সাল নলেজ ক্যাপাসিটি সম্পন্ন। কারণ এইটা নলেজ ক্রিয়েশনের জায়গা। এই জায়গা থেকে আমি আপনাদেরকে আহ্বান জানাবো আপনাদের ডিবেট ক্লাবগুলোতে আসা উচিত, ডিবেট চর্চা করা উচিত, এতে আপনাদের নিজের জায়গাটা বুঝতে পারবেন, নিজের নলেজ লেভেলটা ভালো গেইন করতে পারবেন।’
তিনি এসময় শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে বলেন, ‘শিক্ষায় যদি ধর্মীয় মূল্যবোধ না থাকে তাহলে সে শিক্ষা আসলে ভালো মানুষ কখনোই তৈরি হতে পারে না। কারণ শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য যদি ডেভেলপমেন্ট অব বডি হয়, তখন মানুষ শিক্ষিত জনসংখ্যায় রুপান্তরিত হয় কিন্তু মানুষ হয়ে উঠে না। মানুষ হয়ে উঠতে হলে আদর্শ ও মূলবোধ এই দুইটার সমন্বয় করতে হয়।
শিক্ষার উদেশ্য হচ্ছে সামাজিকীকরণের আওতায় নিয়ে এসে পারিবারিক বন্ধন গুলো আরো সুদৃঢ় করা। সেটা যদি না ঘটে তাহলে শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য সফল হয় না। প্রযুক্তির চোখ ধাঁধা উন্নয়নের সাথে নৈতিকতা থাকা আবশ্যক। চায়না ও মালেশিয়ার উন্নয়নের ধারা একই। এই দুইটা দেশের মধ্যে পার্থক্য হলো— চায়নায় সেক্যুলার আছে মালেশিয়ায় ধর্ম আছে। চায়নায় আত্মহত্যার হার বেশি কিন্তু মালেশিয়ায় শতভাগ কম।’
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ