যশোরে বিএনপি'র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন


যশোরে বর্ণাঢ্য র্যালী ও সমাবেশের মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে টাউন হল মাঠে জড়ো হতে থাকেন জেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এসময় তারা বাদ্যের তালে তালে শ্লোগান দিতে দিত যোগ দেন র্যালীতে। এতে পুরো শহরজুড়ে সৃষ্টি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। বিকেল ৫টায় টাউন হল মাঠ থেকে শুরু হয়ে র্যালীটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে মনিহার মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
এর আগে টাউন হল মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বিএনপির সংগ্রামী ভূমিকা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেন। তিনি বলেন, আজকে দেশে গণতন্ত্রের কণ্ঠ রুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। চারদিকে আবারো ফ্যাসিবাদী প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে। রাজনীতির আকাশে ঘন কালো মেঘ জমেছে। শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বন্ধ করে দিয়েছেন শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য। কারণ তিনি ভালো করেই জানতেন, যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়, তাহলে আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। এজন্যই দিনের ভোট রাতে করেছেন। জনগণের সামনে দাঁড়িয়ে ভোট দেওয়ার সাহস তাঁর কখনোই ছিল না। জনগণের শক্তিকে তিনি ভয় পান, বিএনপিকে তিনি ভয় পান।
অমিত বলেন, একটি গোষ্ঠী এখন আবারও নির্বাচনকে বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। তারা চায় না জনগণের ভোটাধিকার ফিরে আসুক। তারা চায় না সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার গঠিত হোক। আওয়ামী লীগের মতো তারাও বিএনপিকে ভয় পাচ্ছে। দেশের ছাত্রসমাজের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিতে ডাকসু নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। এভাবে জনগণকে বঞ্চিত করে বেশিদিন ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। তিনি আরও বলেন, বিগত ১৭ বছরে বিএনপিকে নানা জুলুম, নির্যাতন ও দমনপীড়নের মধ্য দিয়ে দুর্বল করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে টিকে আছে, এবং আগামীতেও টিকে থাকবে। কারণ বিএনপির শক্তি হলো দেশের সাধারণ মানুষ। জনগণের ভালোবাসা ও আস্থাই বিএনপির সবচেয়ে বড় সম্পদ। বর্তমান সরকারও উপলব্ধি করতে পেরেছে নির্বাচিত সরকার ছাড়া কোনোভাবেই দেশের উন্নয়ন সম্ভব না। এজন্য তারাও নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি করেছে। কিন্তু একটি গোষ্ঠী তা বানচালের চেষ্টা চালাচ্ছে।
অমিত প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, আমরা যে বাংলাদেশ গড়তে চাই, সেখানে কোনো মানুষ ক্ষুধার্ত থাকবে না, কোনো মানুষ দারিদ্র্যে জর্জরিত হবে না। থাকবে আইনের শাসন, মানবাধিকার ও স্বাধীন গণমাধ্যম। জনগণের ভোটে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই সেই বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। অমিত রাজপথে থেকেই গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার রবিউল ইসলাম। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতারাও এতে বক্তব্য দেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অংশ হিসেবে সকাল ১০টায় জেলা বিএনপির কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে সকাল সাড়ে ১০টায় গাছের চারা বিতরণ করা হয়, যা জেলা ছাত্রদলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে শহরের নয়টি ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রোপণ করা হবে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আগামীকাল ও পরশু জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে জেলা বিএনপি।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ