রামগতি-কমলনগরে লোডশেডিংয়ে জনজীবন পঙ্গু


লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগরে পল্লী বিদ্যুতের অব্যবস্থাপনা এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। বিদ্যুতের নামে কোটি কোটি টাকা বিল আদায় করা হলেও সাধারণ মানুষ পাচ্ছেন কেবল ভোগান্তি আর হতাশা।
দুই উপজেলায় মোট ১ লাখ ১৬ হাজার গ্রাহক বিদ্যুতের আওতায় থাকলেও, বাস্তবে তারা দিন-রাত মিলিয়ে ১২ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎহীন জীবনযাপন করছেন। বাকি সময় লো-ভোল্টেজের যন্ত্রণায় বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে, ঘরে-বাইরে কাজকর্ম থমকে যাচ্ছে। দিনে ১০-১২ বার লোডশেডিং, রাতেও অন্ধকারে অতিষ্ঠ মানুষ।
গ্রাহকরা জানান, প্রতিদিন নিয়ম করে ১০ থেকে ১২ বার লোডশেডিং দেওয়া হয়। বিদ্যুতের নামে যা সরবরাহ করা হয়, তা এতটাই দুর্বল যে ফ্যান ঘোরে না, ফ্রিজ চলে না, এসি-মোটর সবকিছু পুড়ে যাচ্ছে। এই অবস্থা বছরের পর বছর চললেও কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই। অসুস্থ ও বৃদ্ধ মানুষগুলো বিদ্যুৎ না থাকায় চরম কষ্ট পাচ্ছে। ছোট শিশুদের ঘুম ভাঙছে গরমে কান্নাকাটি করে। মায়েরাও সন্তানকে নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন।
অভিযোগ জানাতে বারবার কল করা হলেও বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তারা ফোন ধরেন না। কখনো ধরলেও শুধু সান্ত্বনা দিয়ে দায়িত্ব এড়িয়ে যান। জনগণের টাকায় বেতন নিয়ে যদি জনগণের ফোনই না ধরেন, তবে এ অফিস রাখা কার স্বার্থে এ প্রশ্ন এখন সর্বত্র।
কমলনগরের এক মসজিদের ইমাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন: গরমে বিদ্যুৎ না থাকায় মসজিদের ভেতরে নামাজ আদায় করতে কষ্ট হয়। মুসল্লিদের অবস্থা শোচনীয়। বিদ্যুতের নামে এই যন্ত্রণা কোথায় গিয়ে থামবে?
অভিভাবকরা বলছেন, রাতভর অন্ধকারে ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছে না। বাচ্চা আর অসুস্থ বৃদ্ধদের অবস্থা ভয়াবহ।
ব্যবসায়ীরা ক্ষোভে ফুঁসছেন দোকান, কল-কারখানা বন্ধ রাখতে হয়; প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে। মানুষ প্রশ্ন তুলছে বিদ্যুতের নামে এই প্রতারণা আর কতদিন চলবে?
বিল পরিশোধে দেরি হলে জরিমানা, সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার হুমকি সবই ঠিক আছে, কিন্তু বিদ্যুৎ দেওয়ার সময় কোথায় তাদের দায়বদ্ধতা?
একজন ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ী বলেন: আমরা বিদ্যুতের জন্য বিল দিই, কিন্তু বিদ্যুৎ পাই না। বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ জানাতে গেলে কোনো কর্ণপাত নেই। অসুস্থ ও বৃদ্ধদের জন্য বিদ্যুতের এই সংকট যেন মৃত্যুদণ্ডের শামিল।
সাধারণ মানুষের একটাই দাবি: জনগণের টাকা খেয়ে, জনগণকে কষ্ট দেওয়া বন্ধ করো। বিদ্যুতের নামে এই প্রহসন আর সহ্য করা হবে না।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ