নেপালে জেন-জিদের পছন্দের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী সুশীলা কারকি


নেপালের প্রবীণ আইন বিশেষজ্ঞ ও সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কারণে তরুণদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে জেন-জিদের আন্দোলনের মুখে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি পদত্যাগে বাধ্য হন।
জেন-জিদের সিদ্ধান্তে কারকি: বুধবার নতুন নেতৃত্ব নিয়ে জেন-জি আন্দোলনকারীরা ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। চার ঘণ্টার এই বৈঠকে পাঁচ হাজারেরও বেশি সদস্য অংশ নেন। তাদের অধিকাংশই সুশীলা কারকির পক্ষে সমর্থন দেন। জেন-জি নেত্রী রক্ষা বাম জানিয়েছেন, সেনাপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা শেষে কারকির নামকে আনুষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হবে।
প্রথমে কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন শাহকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে বিবেচনা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। এরপর ঐকমত্যে উঠে আসে সুশীলা কারকির নাম।
সাহসি বিচারক হিসেবে খ্যাতি: ২০১৬ সালে নেপালের প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি হন কারকি। সততা, নির্ভীকতা ও ব্যক্তি স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য তিনি পরিচিত। ১৯৭৯ সালে বীরাটনগরে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করে ২০০৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পদে আসীন হন।
তার নেতৃত্বে নেপালের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দুর্নীতির দায়ে ক্ষমতাসীন মন্ত্রী জয়া প্রকাশ গুপ্ত কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হন। শান্তিরক্ষী মিশনে দুর্নীতি, নিজগড় ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পসহ নানা সংবেদনশীল মামলার রায় দিয়ে তিনি সংস্কারপন্থি বিচারক হিসেবে পরিচিতি পান। নারীদের সন্তানের নাগরিকত্বের অধিকার সম্পর্কেও তিনি যুগান্তকারী রায় দেন।
শিক্ষাজীবন ও অভিশংসন বিতর্ক: ১৯৭৫ সালে ভারতের বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর এবং ১৯৭৮ সালে নেপালের ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নেন কারকি।
২০১৭ সালে কিছু রায়ের কারণে সরকারের বিরাগভাজনে পড়েন তিনি। পার্লামেন্টে তার বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব আনা হলেও সেটি শেষ পর্যন্ত পাস হয়নি। পুলিশপ্রধান নিয়োগ নিয়ে বিরোধই এ বিতর্কের মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল।
ব্যক্তিগত স্মৃতি: গত জুলাইয়ে হিমালয়ান টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কারকি জানান, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার দিনগুলো এখনো তাকে আবেগাপ্লুত করে। সেখানে তিনি শুধু পড়াশোনা নয়, নাচ শেখার সুযোগও পেয়েছিলেন। বিএইচইউ থেকে চাকরির প্রস্তাব পেলেও তিনি দেশে ফিরে আসেন।
বর্তমানে নেপালের তরুণদের কাছে দুর্নীতিবিরোধী দৃঢ় অবস্থান ও নির্ভীক মনোভাবের কারণে কারকিই হয়ে উঠেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মুখ।
ভিওডি বাংলা/জা