ফিলিস্তিন রাষ্ট্র থাকবে না, এই জায়গা আমাদের: নেতানিয়াহু


ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা করেছেন যে ভবিষ্যতে কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠিত হবে না। একই সঙ্গে তিনি অধিকৃত পশ্চিম তীরে নতুন একটি বসতি স্থাপনের প্রকল্প অনুমোদন করেছেন-যা বিশ্লেষকরা বলছেন ভবিষ্যতে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনা আরও সংকুচিত করবে।
জেরুজালেম থেকে শুক্রবার রিপোর্ট-নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার পশ্চিম তীরের মা’লে আদুমিমে এক অনুষ্ঠানে প্রস্তাবিত এই প্রকল্পে চুক্তি স্বাক্ষর করেন এবং বলেন, “আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করছি-কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হবে না। এই জায়গা আমাদের।”
সরকারীভাবে “ইস্ট-১” বা “ই-ওয়ান” নামে পরিচিত এই প্রকল্পটি প্রায় ১২ বর্গকিলোমিটার এলাকায় বিস্তৃত; এতে প্রায় ৩,৪০০টি নতুন বাসযোগ্য ইউনিট নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। বাস্তবে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পশ্চিম তীরের ভৌগোলিক সংযোগ ও পূর্ব জেরুজালেমের সঙ্গে কিছু এলাকায় সংহতির ক্ষতি ঘটতে পারে-ফলে বহু ইসরায়েলি বসতি পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত হবে এবং কিছু অংশ পূর্ব জেরুজালেম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্লেষকরা মনে করেন এই সম্প্রসারণ পরিকল্পনা পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের ভৌগোলিক সংযোগ ধ্বংস করবে এবং ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনাগুলো কার্যত খর্ব করে দেবে।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনাহের বক্তব্যে বলা হয়, পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রই এই অঞ্চলে শান্তির চাবিকাঠি। তিনি দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে “অপরিহার্য” আখ্যা দেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলে অঞ্চলটিতে স্থায়ী শান্তি ফিরতে পারে বলে আশাব্যঞ্জক করেন। রুদেইনাহ আরও অভিযোগ করেন, ইসরায়েলি বসতিগুলো আন্তর্জাতিক আইনের অপমর্যাদা এবং নেতানিয়াহু এই অঞ্চলের ভবিষ্যৎ ধ্বংসের পথে এগোচ্ছেন।
১৯৬৭ থেকে অধিকৃত পশ্চিম তীরের ইসরায়েলি বসতিগুলো আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে অবৈধ বলে বিবেচিত-এমনকি ইসরায়েলের নিজস্ব অনুমোদন সত্ত্বেও। নেতানিয়াহু দীর্ঘদিন ধরে অধিকৃত ভূখণ্ডে বসতি স্থাপনের নীতির সমর্থক এবং তিনি ও অসলো চুক্তি ও দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের বিরোধিতা করেছেন। ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর প্রথম মেয়াদে তিনি পূর্ব জেরুজালেমে হার হোমা বসতি গঠনে ভূমিকা নিয়েছিলেন এবং পরে বলেছিলেন, তার শাসনামলে কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন হবে না।
সম্প্রতি ইসরায়েলের অধিবাসী এবং কট্টর ডানপন্থি নীতি সমর্থকরা ও অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচের মতানুযায়ী ই-ওয়ান জাতীয় প্রকল্পগুলো হলে ফিলিস্তিনকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলা হবে-এমন আশঙ্কা প্রকাশ পেয়েছে।
আন্তর্জাতিক স্তরে এই ইস্যুটি সমালোচনার মুখে রয়েছে এবং ফিলিস্তিনি নেতারা বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রকে অবিলম্বে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে চলেছেন।
সূত্র: আল-জাজিরা ও স্থানীয় প্রতিবেদন
ভিওডি বাংলা/জা