বিরল গ্লোসি আইবিস পাখি রাজশাহী গোদাগাড়ীর বিলে


গ্লোসি আইবিস (Glossy Ibis), বৈজ্ঞানিক নাম Plegadis falcinellus, বাংলাদেশের জলাভূমি ও বিলাঞ্চলে বিরল হলেও অত্যন্ত আকর্ষণীয় এক জলচর পাখি। আজ শনিবার রাজশাহীর গোদাগাড়ীর মহিষালবাড়ি বিলের একটি ডোবা থেকে ছবিগুলো তোলা হয়। এর আগে জয়পুহাটের গৌরিপাড়া এলাকায় এই প্রজাতির পাখি বাসা বাঁধার ঘটনা।
বৈশিষ্ট্য ও চেহারা
গ্লোসি আইবিস একটি মাঝারি আকারের পাখি, দৈর্ঘ্য ৪৮ থেকে ৬৬ সেন্টিমিটার এবং ডানা ৮০ থেকে ১০৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। বৈশিষ্ট্যপূর্ণ সরু, বাঁকা ঠোঁট এবং মাথায় পালক থাকে। ব্রিডিং অবস্থায় এদের গাঢ় খয়েরি ও সবুজ-মেরুন রঙের পালক সূর্যালোকে ঝলমলে দেখায়। অবিবাহিত অবস্থায় পালক তুলনামূলকভাবে ম্লান।
বাসস্থান ও বিচরণ
গ্লোসি আইবিস সাধারণত বিল, খাল, হ্রদ, নদী ও লবণাক্ত জলাভূমিতে বিচরণ করে। এরা সাধারণত একত্রে দলবদ্ধ হয়ে খাবার খায় এবং রাতে গাছের ডালে বিশ্রাম নেয়। গৌরিপাড়া এলাকায় বাঁশঝাড়ের ওপর এদের বাসা বাঁধার খবর পাওয়া গেছে, যা স্থানীয়দের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা।
খাদ্যাভ্যাস:
গ্লোসি আইবিস মূলত জলজ পোকামাকড়, শামুক, কাঁকড়া, ছোট মাছ, ব্যাঙ ও ব্যাঙের লার্ভা খেয়ে থাকে। এরা মাটির নরম স্তরে ঠোঁট দিয়ে খুঁড়ে খাবার খুঁজে বের করে। শীতকালে এদের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন দেখা যায়, কারণ শীতকালে খাদ্য সংকট বেড়ে যায়।
প্রজনন ও কলোনি গঠন:
গ্লোসি আইবিস সাধারণত মে থেকে জুলাই মাসে প্রজনন করে। এরা সাধারণত ৩ থেকে ৪টি ডিম দেয়, যা উভয় পিতা-মাতা ২০ থেকে ২৩ দিন পর্যন্ত ইনকিউবেট করে। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়ার পর, পিতা-মাতা আরও ৬ থেকে ৭ সপ্তাহ পর্যন্ত তাদের লালন-পালন করে। গৌরিপাড়ায় এই পাখির কলোনি গঠনের ঘটনা বাংলাদেশের জন্য একটি বিরল ও গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশগত ঘটনা।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ