অমীমাংসিত ৫ রহস্য, যার ব্যাখ্যা আজও মেলেনি


পৃথিবী, প্রকৃতি ও মহাবিশ্বের অনেক অজানা বিষয়কে জানার চেষ্টা মানব সভ্যতার শুরু থেকেই চলছে। প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের উন্নতির পরও কিছু রহস্য আজও অব্যাখ্যিত থেকে গেছে। এসব রহস্য কেবল বিজ্ঞানীদের নয়, সাধারণ মানুষকেও ভাবিয়ে তোলে, কখনও কৌতূহল, কখনও ভয়ের জন্ম দেয়।
নিচে এমনই ৫টি অমীমাংসিত রহস্য তুলে ধরা হলো
১. বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল
আটলান্টিক মহাসাগরের মায়ামি, বারমুডা ও পুয়ের্তো রিকোকে যুক্ত করলে যে ত্রিভুজাকার এলাকা তৈরি হয়, সেটিই বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এখানে জাহাজ ও বিমান রহস্যজনকভাবে হারিয়ে গেছে। ১৯৪৫ সালে মার্কিন নৌবাহিনীর ‘ফ্লাইট ১৯’ নামের পাঁচটি বোম্বার বিমান একসঙ্গে উধাও হয়। গবেষকরা নানা ব্যাখ্যা দিয়েছেন-অস্বাভাবিক চৌম্বক ক্ষেত্র, প্রবল ঝড় বা সমুদ্রের অস্থির স্রোত। তবে কিছু ঘটনা এখনও কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা ছাড়াই ঘটে যাচ্ছে।
২. ভয়নেচ পাণ্ডুলিপি
১৯১২ সালে ইতালির এক পুরোনো মঠ থেকে আবিষ্কৃত হয় ভয়নেচ ম্যানুস্ক্রিপ্ট। এটি অচেনা অক্ষর, অদ্ভুত প্রতীক ও অজানা ভাষায় লেখা, যা এখনও কোনো ক্রিপ্টোগ্রাফারও ডিকোড করতে পারেনি। পাতায় অদ্ভুত উদ্ভিদ, নক্ষত্রমণ্ডল ও মানবসদৃশ চিত্র রয়েছে। কালি ও কাগজের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ বলে, এটি কোনো আধুনিক প্রতারণা নয়। এর উদ্দেশ্য বা সত্যিকার অর্থ আজও রহস্যময়।
৩. স্টোনহেঞ্জ
ইংল্যান্ডের উইল্টশায়ারে দাঁড়িয়ে আছে প্রাচীন পাথরের বৃত্ত-স্টোনহেঞ্জ। এর বয়স প্রায় ৪-৫ হাজার বছর। বিশাল পাথরগুলো কীভাবে আনা ও স্থাপন করা হয়েছিল, তা আজও স্পষ্ট নয়। এটি প্রাচীন জ্যোতির্বিদ্যা কেন্দ্র ছিল নাকি ধর্মীয় আচার-এ নিয়েও বিতর্ক আছে। আশ্চর্যের বিষয়, স্টোনহেঞ্জের অবস্থান সূর্য ও চাঁদের গতিবিধির সঙ্গে মিলে যায়।
৪. টাংগুসকা বিস্ফোরণ
১৯০৮ সালের ৩০ জুন, সাইবেরিয়ার টাংগুসকা অঞ্চলে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। প্রায় ২,০০০ বর্গকিলোমিটার বনভূমি ধ্বংস হয়। ধারণা করা হয়, এটি কোনো উল্কা বা ধূমকেতুর বিস্ফোরণ। কিন্তু বিস্ফোরণের কোনো ক্রাটার বা উল্কার টুকরো পাওয়া যায়নি। এর প্রকৃত কারণ আজও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।
৫. নাজকা লাইনস
পেরুর দক্ষিণ মরুভূমিতে রয়েছে বিশাল রেখাচিত্র-নাজকা লাইনস। এখানে পাখি, বানর, মাকড়সা ও জ্যামিতিক আকার রয়েছে। মাটির উপর থেকে এগুলো বোঝা যায় না, শুধু আকাশ থেকে দেখা যায়। হাজার বছর আগে আকাশে ওঠার প্রযুক্তি না থাকলেও মানুষ কীভাবে এত নিখুঁত চিত্র এঁকেছিল, তা রহস্য। ধারণা করা হয়, এগুলো ধর্মীয় আচার, দেবতাদের উদ্দেশ্যে বার্তা বা এমনকি ভিনগ্রহীদের জন্য তৈরি হয়েছিল।
এগুলো মানব সভ্যতার সবচেয়ে বড় অমীমাংসিত রহস্যগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের উন্নতির পরও আজও এদের সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
ভিওডি বাংলা/জা