লিবিয়ার উপকূলে শরণার্থী নৌকায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৫০


উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার উপকূলে সুদানি শরণার্থী বহনকারী একটি নৌকায় অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, নৌকায় মোট ৭৫ জন ছিলেন, যার মধ্যে ২৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। বেঁচে যাদেরকে চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
আইওএম এক্স-এ পোস্টে বলেছে, "সমুদ্রপথে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঠেকাতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।"
এ ধরনের ঘটনা পূর্বেও ঘটেছে। গত মাসে ইয়েমেন উপকূলে একটি নৌকা ডুবে অন্তত ৬৮ শরণার্থী নিহত হয়েছিল। আইওএম জানিয়েছে, কেবল গত বছরই ভূমধ্যসাগরে অন্তত ২,৪৫২ অভিবাসী মারা গেছে বা নিখোঁজ হয়েছে। এটি ইউরোপমুখী যাত্রায় বিশ্বের অন্যতম প্রাণঘাতী রুট।
২০১১ সালে লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশটি ইউরোপগামী অভিবাসীদের ট্রানজিট রুটে পরিণত হয়। বর্তমানে লিবিয়ায় প্রায় ৮ লাখ ৬৭ হাজার অভিবাসী অবস্থান করছে। গাদ্দাফির শাসনামলে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা তেলসমৃদ্ধ লিবিয়ায় কাজ পেত, কিন্তু তার পতনের পর দেশটি প্রতিদ্বন্দ্বী মিলিশিয়াদের সংঘাতে জর্জরিত।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউরোপগামী শরণার্থীরা বিপজ্জনকভাবে ভূমধ্যসাগর পারাপার করছে। আগস্টে ইতালির লাম্পেদুসা দ্বীপের কাছে দুটি নৌকা ডুবে অন্তত ২৭ জন নিহত হয় এবং জুনে লিবিয়া উপকূলে দুটি নৌকা ডুবে অন্তত ৬০ জন নিহত বা নিখোঁজ হয়।
মানবাধিকার সংগঠন ও জাতিসংঘ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, লিবিয়ায় শরণার্থী ও অভিবাসীরা নিয়মিত নির্যাতন, ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন অভিবাসন ঠেকাতে লিবিয়ার কোস্টগার্ডকে সরঞ্জাম ও অর্থ সহায়তা প্রদান করেছে। তবে এই কোস্টগার্ডের সঙ্গে নির্যাতন ও অপরাধে জড়িত মিলিশিয়াদের সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়া, ইউরোপের দেশগুলো রাষ্ট্রীয় উদ্ধার অভিযান ধাপে ধাপে বন্ধ করায় সমুদ্রযাত্রা আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। ফলস্বরূপ, সংঘাত ও নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা বহু মানুষ লিবিয়ায় আটকা পড়ছে এবং অমানবিক পরিস্থিতিতে বন্দিশিবিরে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছে।
ভিওডি বাংলা/জা