মাদারীপুরে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত


মাদারীপুরে উৎসবমুখর পরিবেশে হয়ে গেল নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) পড়ন্ত বিকালে এই বাইচ দেখতে আড়িয়াল খাঁ’র পাড়ে ভিড় করেন কয়েক হাজার দর্শক। দীর্ঘদিন পর এমন আয়োজন দেখে আনন্দে মেতে ওঠেন তারা। আগামীতে বৃহৎ আকারে এই আয়োজন করার কথা জানান আয়োজক মহসিন খান।
সরেজমিনে দেখা যায়, কাঁসর ঘণ্টার টুংটাং আওয়াজ, আর জলের ছলাৎ ছলাৎ শব্দ। মাঝিমাল্লার হাতে থাকা বৈঠা চলছে সমানতালে, সাথে হৈহুল্লুড়ে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা যেন এক উৎসবে পরিনত হয়, গোটা এলাকা। আড়িয়াল খাঁ নদের পাড়ে শিশু-কিশোরসহ নানান বয়সের মানুষ। কেউবা আবার ট্রলারে করে উপভোগ করে এই নৌকাবাইচ।
হবিগঞ্জ থেকে চরবাজিতপুর পর্যন্ত তিন কিলোমিটার চলে এ আয়োজন। আলাদাভাবে এতে অংশ নেয় বাঁশকান্দি এক্সপ্রেস, ময়ূরপঙ্খি, বাঘা, টাইটানিকসহ বাহারী নামের ৮টি নৌকা। যা দেখে আনন্দে মেঠে ওঠেন দর্শকরা। জামাই স্বপন বয়রা আর শ্বশুর বাদশা মাতুব্বর ধরে রাখে প্রতিযোগিতার প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান। সবাইকে আনন্দ দিতে এমন নৌকাবাইচে অংশ নিতে পেরে খুশি মাঝি-মাল্লারাও। ইতিহাস আর ঐতিহ্য বহন করে এ নৌকাবাইচ। অনুষ্ঠান দেখতে যান কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক হেলেন জেরিন খানসহ অনেকেই।
জানা যায়, মিনি সুইজারল্যান্ড রেস্টুরেন্ট ও পার্কের আয়োজনে অনুষ্ঠানে প্রথম প্রতিযোগিকে পুরষ্কার হিসেবে দেয়া হয় একটি ঘোড়া। এছাড়া ফ্রিজ, টিভিসহ প্রত্যেকের জন্য ছিল আলাদা পুরষ্কার। আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ বছরের বিশেষ বিশেষ দিনে আয়োজনের দাবি দর্শকদের।
কালিরবাজার এলাকা থেকে আসা দর্শনার্থী রুবেল মিয়া বলেন, পুরো পরিবার নিয়ে এই নৌকাবাইচ দেখতে এসেছি। খুবই আনন্দ পেয়েছি। অনেকদিন পর এই আয়োজন সবাইকে মজা দিয়েছে।
খাগদি থেকে আসা দর্শনার্থী প্রিয়া আক্তার বলেন, ইজিবাইকে মা-বাবা এবং চাচিকে নিয়ে এই নৌকাবাইচ দেখতে এসেছি। হবিগঞ্জ সেতুর উপর দাঁড়িয়ে নৌকাবাইচ দেখতে পারাটা আলাদা একটি অনূভূতি হয়। প্রতিবছর আমরা এই উৎসব দেখতে চাই।
নৌকাবাইচে অংশ নেয়া মাঝি ও প্রথম অধিকার স্বপন বয়রা বলেন, প্রথম হওয়ার আনন্দই আলাদা। তার সাথে ৭৫ জন মাঝিমাল্লাকে একসাথে গুছিয়ে অংশ নেয়া বড় ব্যাপার। যেকোন স্থানে প্রতিযোগিতা হলে অংশ নেয়ার ইচ্ছা আছে।
আয়োজক মহসিন খান বলেন, আড়িয়াল খাঁ নদের দুইপাড়ে অন্তত ৫০ হাজার দর্শক জড়ো হয়। এত মানুষ হবে বুঝতে পারিনি। এলাকবাসী আনন্দ নিয়েই পুরো আয়োজন উপভোগ করেছে। সবার সহযোগিতা পেলে আগামীতে আরও বৃহৎ আকারে নৌকাবাইচের আয়োজন করা হবে।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, নৌকাবাইকে ঘিরে কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত হয়। তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে থানা পুলিশ, নৌপুলিশ ও তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ দায়িত্ব পালন করেন। খুবই সুন্দরভাবে এই অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ