প্লাস্টিক বোতল দিয়ে রাজশাহী তানোরে বাড়ি নির্মাণ


রাজশাহীর তানোর উপজেলার সরনজাই ইউনিয়নের ভাগনা গ্রামের বিদেশ ফেরত আলমগীর হোসেন পরিবেশের ক্ষতিকারক রংবেরঙের পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার করে স্বল্প খরচে স্বপ্নের বাড়ি নির্মাণ করে সবাইকে অবাক করেছেন। বাড়ি নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং কয়েক দিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে পরিবারসহ সেখানে বসবাস শুরু করবেন তিনি।
বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রাণকেন্দ্র তানোর উপজেলায় এটি প্রথম প্লাস্টিক বোতল দিয়ে নির্মিত বাড়ি হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ২৫ হাজার প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে সুনিপুণভাবে নির্মিত এই বাড়িতে রয়েছে দুইটি বেডরুম, টয়লেট ও বাথরুম। বোতলসহ সিমেন্ট, বালি, কাঠ এবং রঙ্গিন টিন দিয়ে ছাউনি তৈরি করা হয়েছে। মোট খরচ হয়েছে প্রায় আড়াই লাখ টাকা।
আলমগীর হোসেন জানান, তিনি দীর্ঘদিন বিদেশে রাজমিস্ত্রির কাজ করেছেন। ইউটিউবে একটি ভিডিও দেখে দেশে ফিরে এমন বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময় শুরু করেন। বিভিন্ন দোকানপাট ঘুরে মাত্র ১২ হাজার টাকা খরচে ২৫ হাজার বোতল সংগ্রহ করেন। এই বাড়ি তৈরিতে মোট খরচ হয়েছে প্রায় ৪ লাখ টাকা, যেখানে প্লাস্টিক ছাড়া একই ধরনের বাড়ি নির্মাণে খরচ হত ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা। বর্তমানে বাড়ির ফিনিশিং কাজ চলছে।
বাড়ি নির্মাণে সময় লেগেছে ছয় মাস। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন বাড়িটি দেখতে আসছেন। কয়েক দিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে আলমগীর পরিবারসহ সেখানে বসবাস শুরু করবেন। প্লাস্টিক বোতল বালি ও মাটি দিয়ে ভরে ইট হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, সিমেন্ট দিয়ে দেয়াল ও পিলার তৈরি করা হয়েছে। উপরে টিনের চালা আছে। বাড়িটি ভূমিকম্প প্রতিরোধী এবং বুলেটপ্রুফ।
স্থানীয়রা বলেন, শুরুতে আলমগীরের এই কাজকে পাগলামি মনে করলেও এখন দেখছেন প্লাস্টিক বোতল দিয়ে অসাধারণ একটি বাড়ি নির্মাণ করেছেন তিনি। কম খরচে এমন বাড়ি তৈরি করে তিনি ইতিহাস গড়েছেন। অনেকেই এই ধরনের বাড়ি নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
এ বিষয়ে তানোর উপজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমান বলেন, “এ ধরনের বাড়ির নির্মাণে খরচ কিছুটা কম হবে তা নিশ্চিত। তবে বোতলবাড়ির টেকসইতা ও পরিবেশবান্ধবতা পরীক্ষা নিরীক্ষা করা প্রয়োজন।” উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) লিয়াকত সালমান বলেন, “প্লাস্টিক পরিবেশ দূষণ করে, কিন্তু তানোরে আলমগীর সেই প্লাস্টিককে ইতিবাচক কাজে লাগিয়ে পরিবেশবান্ধব বাড়ি নির্মাণ করেছেন, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ