রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) থেকে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে আওতামুক্ত থাকবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম, পানি, বিদ্যুৎ ও পরিবহন সেবা।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অফিসার্স সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন।
মোক্তার হোসেন বলেন, ‘এ সিদ্ধান্তে আমরা হতাশ। কারণ, দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সুবিধা আছে। এটি আমাদের না দেওয়ায় আমরা কমপ্লিট শাটডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) কর্মরতদের সন্তানদের ভর্তির ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বা পোষ্য কোটা স্থগিত রাখারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট সভা।
রোববার বিকেলে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীবের বাসায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিকেল ৫টার পর সভা শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ইফতেখারুল আলম মাসউদ। তিনি জানান, সিন্ডিকেট সভায় প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত বহাল হয়েছে। পাশাপাশি শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) জুবেরী ভবনে শিক্ষক লাঞ্ছনার যে ঘটনা ঘটেছে, তার তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ জন্য সিন্ডিকেট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। পাশাপাশি বিচার বিভাগীয় তদন্তও হবে।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বলেন, ‘শনিবার প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় ভর্তি স্থগিতের যে ঘোষণা করা হয়েছে, সেই বিষয়টি সিন্ডিকেটকে জানানো হয়েছে। সিন্ডিকেট এই সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন দিয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় আজ থেকে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। এটা আমরা শুরু করছি না। আমাদের সংশ্লিষ্ট বডিগুলোতে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হবে।’
জুবেরী ভবনে শিক্ষক লাঞ্ছনাকে নজিরবিহীন ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শনিবার একজন উপ-উপাচার্য এভাবে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন। এ জন্য সিন্ডিকেট নিন্দা জ্ঞাপন করেছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এ ছাড়া নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য সিন্ডিকেট বিচার বিভাগীয় তদন্তেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
স্থানীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্কের জন্য একটি লিঁয়াজো কমিটি গঠনের কথাও জানান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার। তিনি বলেন, ‘আমরা আশঙ্কা করছি, নানাভাবে খবর পাচ্ছিলাম যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকাগুলোর সঙ্গে কোনো ধরনের গোলমাল লাগিয়ে দেওয়া হতে পারে। এমন অপচেষ্টার ব্যাপারে আমরা অবগত ছিলাম। এ ব্যাপারে শক্তিশালী একটি তদন্ত কমিটি করেছি। সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে একটি লিঁয়াজো কমিটি করা হয়েছে।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, রাকসু নির্বাচন যথাসময়েই হবে। গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু রাকসু নির্বাচন। আশা করছি, যথাসময়ে হবে। এখন পর্যন্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা যারা নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, তারা একটি কর্মসূচি পালন করেছেন। কিন্তু রাকসুর কার্যক্রম এর আওতামুক্ত ছিল। রাকসুর ব্যাপারে সিন্ডিকেট থেকে সিদ্ধান্ত দেওয়ার কিছু নেই। রাকসু যেন যথাসময়ে হয়, সে জন্য সিন্ডিকেটের পক্ষ থেকে সব পক্ষের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরতদের সন্তানদের ভর্তির জন্য আগে থেকেই ৪ শতাংশ পোষ্য কোটা ছিল। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব। এরপর থেকেই শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পোষ্য কোটাকে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা দাবি করে একের পর এক আন্দোলন শুরু করেন।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ