৬ দশক পর জাতিসংঘে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট


সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল-শারা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে রবিবার নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন। প্রায় ছয় দশক পর কোনো সিরীয় প্রেসিডেন্ট এই বৈশ্বিক মঞ্চে অংশ নিচ্ছেন। সর্বশেষ ১৯৬৭ সালে সিরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান সাধারণ পরিষদে যোগ দিয়েছিলেন। খবর এপি’র।
গত বছরের ডিসেম্বরে বিদ্রোহীদের আকস্মিক অভিযানে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হলে সিরিয়ার প্রায় ১৪ বছরের দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটে। বিদ্রোহীদের নেতৃত্ব দেন আল-শারা, যিনি পরে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন।
ক্ষমতায় আসার পর থেকে তিনি আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠন এবং পশ্চিমা বিশ্বের আস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। যদিও তার নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম একসময় যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত ছিল। এ কারণে শুরুতে আন্তর্জাতিক মহলে শঙ্কা থাকলেও এখন পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে।
আল-শারা সহাবস্থান ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিলেও দেশটি এখনও নাজুক অবস্থায় রয়েছে। সম্প্রতি কিছু এলাকায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। নতুন সরকারের সঙ্গে যুক্ত কিছু যোদ্ধার বিরুদ্ধে দ্রুজ ও আলাওয়ি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শতাধিক মানুষ হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
জাতিসংঘ অধিবেশনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি সিরিয়ার যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতি পুনর্গঠনের জন্য আরও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত মে মাসে সৌদি আরবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিল হলেও ২০১৯ সালের কংগ্রেসপাসকৃত সিজার সিরিয়া অ্যাক্ট বহাল রয়েছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কও আলোচনার বড় ইস্যু। আসাদের পতনের পর থেকে ইসরায়েল সিরিয়ার সামরিক স্থাপনায় শতাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে এবং দক্ষিণে একটি বাফার জোন দখল করেছে। আল-শারা সম্প্রতি দাবি করেছেন, আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে এবং দ্রুতই নিরাপত্তা চুক্তি হতে পারে। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এটিকে এখনো “ভবিষ্যতের স্বপ্ন” বলেই উল্লেখ করেছেন।
এদিকে রবিবার সিরিয়ার নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আগামী ৫ অক্টোবর দেশটিতে প্রথম পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে ভোট হবে ইলেক্টোরাল কলেজের মাধ্যমে। প্রতিটি প্রদেশের নির্বাচনি সংস্থা দুই-তৃতীয়াংশ আসনে ভোট দেবে, আর অবশিষ্ট এক-তৃতীয়াংশ আসনে সরাসরি প্রার্থী মনোনীত করবেন প্রেসিডেন্ট আল-শারা। কর্তৃপক্ষের দাবি, দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের কারণে বিপুলসংখ্যক মানুষ নথিপত্র হারিয়েছেন বা শরণার্থী শিবিরে রয়েছেন, তাই সরাসরি নির্বাচন এখন সম্ভব নয়।
ভিওডি বাংলা/ আরিফ