বিসিবি নির্বাচন ঘিরে নাটকীয়তা, ভোটার তালিকা প্রকাশেই অনিশ্চয়তা


বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে শুরুতেই তৈরি হয়েছে জটিলতা ও বিতর্ক। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) ছিল বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের শেষ সভা। নির্ধারিত সময়ের তিন ঘণ্টা পর শুরু হয়ে সভা গভীর রাতে শেষ হলেও মূল উদ্দেশ্য-কাউন্সিলর বা ভোটার তালিকার খসড়া অনুমোদন-হয়নি। ফলে নির্ধারিত তফসিল অনুযায়ী ভোটার তালিকা প্রকাশ না হওয়ায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায়।
তফসিল অনুযায়ী, সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় ভোটার তালিকা প্রকাশের কথা ছিল। তার আগে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে জমা দিতে হতো কাউন্সিলর মনোনয়ন। কিন্তু সময়সীমা পেরিয়ে রাত ৯টার পরও আসতে থাকে ফরম। এমনকি সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদের নামও আসে অনেক দেরিতে। বোর্ড পরিচালক ইফতেখার রহমান জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময় শেষ হলেও আসা সব নাম নোটসহ নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে, তবে সেগুলোর বৈধতা নির্ধারণ করবে কমিশন।
এদিকে আদালতের হস্তক্ষেপে জটিলতা আরও বেড়েছে। দ্বিতীয় দফায় সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট হয়, যা পরে চেম্বার আদালত স্থগিত করে। তবু রায়ের প্রভাব পড়ে পুরো প্রক্রিয়ায়।
সবচেয়ে বেশি বিতর্ক তৈরি হয়েছে সভাপতির একক সিদ্ধান্ত নিয়ে। পরিচালক ইফতেখার রহমান মিঠু স্বীকার করেছেন, সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সভাপতি আমিনুল ইসলাম নিজে, অন্যদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই। এমনকি নজিরবিহীনভাবে তিনি নিজেই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। কেন প্রধান নির্বাহীর বদলে সভাপতি স্বাক্ষর করলেন, সে প্রশ্নের জবাবে বোর্ড মুখপাত্র ইফতেখার কিছু বলতে পারেননি।
অন্যদিকে, সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টার হস্তক্ষেপের অভিযোগও উঠেছে। সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল অভিযোগ করেছেন, ‘এটা নির্বাচন নয়, সিলেকশন চলছে।’ একই সুরে ক্লাব প্রতিনিধি ও সাবেক কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, সরকারের একটি অংশ ইচ্ছাকৃতভাবে প্রভাব খাটাচ্ছে। কয়েকজন কাউন্সিলর তো বিসিবি ঘেরাওয়ের হুমকিও দিয়েছেন।
ফলে বিসিবি নির্বাচন ঘিরে তৈরি হয়েছে অচলাবস্থা। খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ না হওয়ায় তফসিলের পরবর্তী ধাপও ঝুলে গেছে। আগামী ৬ অক্টোবর পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন হওয়ার কথা। সেদিন রাতেই সভাপতি ও সহ-সভাপতি বাছাইয়ের ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু ভোটার তালিকা নিয়েই যখন ধোঁয়াশা, তখন নির্বাচন কতটা স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হবে-তা নিয়ে বাড়ছে সংশয়।
ভিওডি বাংলা/জা