প্রহসনে পরিণত হয়েছে ভোট প্রক্রিয়া
জাকসু নির্বাচন নিয়ে ছাত্রদলের অভিযোগ


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার শিক্ষক লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা দাবি করেন জাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ৮টি প্যানেলের মধ্যে ৫টি প্যানেল নির্বাচন বর্জন করে। দুইজন নির্বাচন কমিশনার পদত্যাগ করেছেন। ভোট গ্রহণ চলাকালেই ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কারণে কয়েকজন স্বনামধন্য শিক্ষক নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে নিজেদেরকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। অব্যবস্থাপনা, কারচুপির সিস্টেম, সমন্বয়হীনতা, মিসইনফরমেশন ও ডিজইনফরমেশনের ছড়াছড়ি সর্বোপরি একটি প্যানেল ও কিছু ব্যক্তিবিশেষকে জেতানোর লক্ষ্যে বিষয়টি নির্বাচনী প্রহসনে পরিণত হয়েছে। আমরা বারংবার প্রশাসন ও দায়িত্বশীলদের অবহিত করেও আমাদের অভিযোগগুলোর কোন সমাধান পাইনি।
ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের আনা অভিযোগগুলো হলোÑ ছবিসহ ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও অমোচনীয় কালির ব্যবস্থা না থাকায় জালভোটের সুযোগ তৈরি; নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্স পাঠানো, ভোটারের সংখ্যার চাইতে বেশি ব্যালট সরবরাহ এবং অতিরিক্ত ৩ হাজার ব্যালট ছাপানো; একটি নির্দিষ্ট দলের সমর্থক হিসেবে পরিচিত ব্যক্তির এক অখ্যাত প্রাইভেট কোম্পানি থেকে ব্যালট পেপার ও ওএমআর মেশিন কেনা; বিভিন্ন হলে জালভোট, ব্যালট পেপার নিচে পড়ে থাকা, প্রভোস্টদের সরাসরি হস্তক্ষেপ, এমনকি নারী সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেওয়া; নির্বাচনী আচরণ সম্পর্কে পোলিং অফিসারদের ধারণা কম থাকা; ভোটের সংখ্যা ও ঘোষিত ফলাফলের মধ্যে অসঙ্গতি; ব্যালটে অনেক প্রার্থীর নাম না থাকা, তাৎক্ষণিক নাম যোগ করা; বহিরাগতদের উপস্থিতি, প্রার্থীর এজেন্টদের হয়রানি এবং অধিকাংশ পোলিং অফিসারের অজ্ঞতা; নির্ধারিত সময় পেরিয়ে ভোটগ্রহণ, সিসিটিভি ফুটেজ ও ভোটারের তালিকা প্রকাশ না করাও ছাত্রদল প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল মনোনীত ভিপি প্রার্থী শেখ সাদী হাসান বলেন, জাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উত্তরণের শুভ সূচনার যে প্রত্যাশা, সার্বিকভাবে কারচুপি ও অব্যবস্থাপনার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেই প্রত্যাশার অকাল মৃত্যু ঘটেছে। ফ্যাসিস্টের সময়ের নির্বাচন নামের প্রহসনের প্রক্রিয়াকে বিলুপ্ত করে আমরা একটি পরিচ্ছন্ন নির্বাচনী ব্যবস্থার যে স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেই স্বপ্নও ভেঙ্গে গেছে। তারপরেও আমরা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সার্বিক অনিয়ম সম্পর্কে প্রশাসনকে লিখিতভাবে অবগত করেছি। কিন্তু তারা অভিযোগগুলোর বিষয়ে বিষয়ে কালক্ষেপন ও শৈথিল্য প্রদর্শন করছেন, দায় এড়ানোর মনোভাব দেখাচ্ছেন।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ