মেটার নতুন স্মার্ট গ্লাস ঘিরে বিতর্ক ও সম্ভাবনা


প্রযুক্তির নতুন যুগে প্রবেশ করছে স্মার্ট গ্লাস। মেটা সম্প্রতি উন্মোচন করেছে রে-ব্যান ডিসপ্লে, যেখানে চশমার ভেতরেই স্ক্রিন যুক্ত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক কনেক্ট সম্মেলনে প্রথমবার জনসম্মুখে আনা এই ডিভাইসকে অনেকে প্রযুক্তির পরবর্তী বড় ধাপ হিসেবে দেখছেন।
এই স্মার্ট গ্লাস দিয়ে মেসেজ পাঠানো, ইনস্টাগ্রাম ভিডিও দেখা, ছবি ও ভিডিও তোলা, কল রিসিভ করা এমনকি রিয়েল-টাইম কথোপকথন ট্রান্সক্রিপশন সম্ভব। এর সঙ্গে যুক্ত নিউরাল ব্যান্ড নামের বিশেষ রিস্টব্যান্ড ব্যবহারকারীর হাতের বৈদ্যুতিক সংকেতকে ইনপুটে রূপান্তর করে। ফলে ফোনে যেসব কাজ করা হয়, তার অনেকটাই এখন চশমায় করা সম্ভব।
তবে নতুন প্রযুক্তিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন। বিশ্লেষক আনশেল স্যাগ মনে করেন, স্মার্ট গ্লাস ও এআই ওয়্যারেবল ডিভাইসের গোপনীয়তা ও সামাজিক শিষ্টাচার নিয়ে আমরা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছি। ক্যামেরাসহ একটি ডিভাইস যখন মানুষের মুখে থাকবে, তখন তার ব্যবহার সীমিত করার পরিবেশ তৈরি হওয়াই স্বাভাবিক।
সমালোচকদের মতে, স্মার্ট গ্লাস ব্যবহারে গোপনীয়তা লঙ্ঘনের ঝুঁকি বাড়বে। ছবি বা ভিডিও ধারণের সময় চশমায় সতর্কবার্তা আলো জ্বলেও তা সহজে বোঝা যায় না। ফলে ব্যক্তিগত জায়গা ছাড়াও গাড়ি চালানোর মতো ক্ষেত্রে ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা সংস্থা অতীতে ভিআর হেডসেট ব্যবহারের বিরুদ্ধে সতর্ক করলেও স্মার্ট গ্লাস নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক অবস্থান নেয়নি। এর মধ্যেই অ্যামাজন ডেলিভারি ড্রাইভারদের জন্য স্মার্ট গ্লাস তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে।
শুধু গোপনীয়তা নয়, ডেটা নিরাপত্তাও বড় উদ্বেগের বিষয়। মেটার পূর্ব ইতিহাস ভালো না হওয়ায় অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করছেন। অন্যদিকে, গুগলও একই প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। ২০১৩ সালে চালু হওয়া গুগল গ্লাস তীব্র সমালোচনার মুখে শেষ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়।
তবে নতুন প্রজন্মের স্মার্ট গ্লাস দেখতে সাধারণ চশমার মতো হওয়ায় বিশ্লেষকদের ধারণা, এবার আগের মতো তীব্র সমালোচনা নাও হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রযুক্তিটি জনপ্রিয় হবে—এটা প্রায় নিশ্চিত। তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে: সমাজ কি গোপনীয়তার নিয়ম মেনে চলতে পারবে? আর কোম্পানিগুলো কি ব্যবহারকারীর তথ্য ও আস্থা রক্ষায় দায়িত্বশীল হবে?
সূত্র: গিজমডো
ভিওডি বাংলা/ আরিফ