রাজশাহী পবায় বায়াবাজার সড়ক যেন মরণফাঁদ!


রাজশাহীর পবা উপজেলার বায়া বাজার থেকে তানোরের কাশিমবাজার পর্যন্ত সড়কটি দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। প্রায় ১৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সড়কটি দুই উপজেলার মানুষের জন্য অন্যতম প্রধান যোগাযোগ পথ হলেও এখন তা যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষার শুরু থেকে এই রাস্তায় খানাখন্দ, গর্ত ও কর্দমাক্ত হয়ে আছে। একটু বৃষ্টিতেই গর্ত হওয়ায় দুর্ভোগ বাড়ে চলাচলকারীদের। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা পড়েন বিড়ম্বনায়। বড় বড় গর্ত আর রাস্তায় পানি জমে থাকায় ভোগান্তির শেষ নেই পথচারীদের। এমন অবস্থায় এই রাস্তায় বন্ধ হয়ে গেছে ভ্যান ও ইজিবাইক চলাচল। কোথাও ইট সরে সৃষ্টি হয়েছে গর্ত। কোথাও আবার বৃষ্টির পানি জমে থাকায় বেড়েছে ভোগান্তি।
তানেরা উপজেলার সায়েদ আলী নামের এক বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করছি। পুরো বর্ষায় ভাঙা রাস্তা মাড়িয়ে চলাচল করা খুব কষ্টের। বৃষ্টি হলে রাস্তায় পানি জমে। পানি সরে গেলে রাস্তা কাদা হয়ে যায়। ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজে যেতে কষ্ট হয়। অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে হয় কোলে করে।’
তিনি বলেন, রাস্তার বিষয়ে অনেকবার আবেদন করেছি। কিন্তু আজও কোনো কাজ হয়নি। বায়া বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম বলেন, ‘প্রতিদিন মালামাল নিয়ে যেতে আমাদের ভীষণ কষ্ট হয়। গাড়ি আটকে যায়, কখনও উল্টে যাওয়ার উপক্রম হয়। এতে পরিবহন ব্যয় যেমন বাড়ছে, তেমনি ঝুঁকিও বাড়ছে। মাত্র কয়েকদিন আগে ট্রাক উল্টে গেছে এই সড়কে।’
একই অভিযোগ কাশিমবাজার এলাকার কৃষকদের। তারা জানান, উৎপাদিত ফসল বাজারে আনতে গিয়ে অতিরিক্ত সময় ও খরচ গুনতে হচ্ছে। এতে কৃষি উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
মাসুম আলী নামে একজন বলেন, ‘আমাদের এই অঞ্চল কৃষি প্রধান। আমাদের এই দিকে প্রচুর পরিমাণে ফসল উৎপন্ন হয়। এই ফসল আমাদের বিক্রির জন্য শহরে নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু তানোরে প্রবেশের এই রাস্তা ভাঙা থাকায় এই পাশ দিয়ে গাড়ি চলাচল করতে চায় না। আমরা অতিদ্রুত এই সড়কের সংস্কার চাই।’
স্থানীয় পথচারী এবং বাসিন্দারা আরও জানান, এ সড়কটি সংস্কারের জন্য বহুবার দাবি জানানো হলেও এখনো কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। মাঝে মাঝে কিছু মেরামতের কাজ হলেও তা টেকসই হয় না। ফলে বছরের পর বছর ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
তবে সড়কের সংস্কার নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী জানিয়েছেন আশার বাণী। পবা উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমরা এই সড়কের কাজের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদা পাঠিয়েছি। এখন শুধু অনুমোদন বাকি। আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের ভিতরেই সড়কের কাজ শুরু হবে।’
বায়া বাজার থেকে কাশিমবাজার সড়কটি দ্রুত সংস্কার না হলে এ অঞ্চলের যোগাযোগ, শিক্ষা ও কৃষি ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ