• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১
টপ নিউজ
মেধা কাজে লাগালে বিশ্বে স্বনামধন্য হওয়া যায় - আবদুস সালাম হোয়াটসঅ্যাপের নতুন চমক ‘শিডিউল কল’ ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের পূজা প্রস্তুতি পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের দায়িত্ব রাষ্ট্র নেবে: আমিনুল হক ডাকসুর নেত্রীদের ‘গৃহদাসী’ মন্তব্য করে চাকরি হারালেন ব্র্যাক গবেষক ক্যান্সার আক্রান্ত হেফাজত নেতা মাওলানা ফারুকী’র পাশে তারেক রহমান ১৩ দিনে ১৬ হাজার কোটি টাকা রেমিট্যান্স এরদোগানের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল আঙ্কারা মোহাম্মদপুর মহিলা কলেজের নবীনবরন অনুষ্ঠানে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে তারেক রহমানের বাণী

জামায়াতের প্রার্থী বাছাই শেষ, নির্বাচনী প্রস্তুতি জোরেশোরে

নিজস্ব প্রতিবেদক    ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:২৮ পি.এম.
ছবি: সংগৃহীত

জামায়াতে ইসলামী আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৮টি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। তবে তৃণমূল পর্যায়ের ভোটে বাছাই করা এই প্রার্থীদের মধ্যে দু’টি আসনে প্রকাশ্য অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

জ্যেষ্ঠ নেতারা জানিয়েছেন, যদি নির্বাচনী জোট গঠন হয় বা কোনো দলের সঙ্গে সমঝোতা হয়, তবে শরিক দলের সমর্থনে প্রার্থী সরিয়ে নেওয়া হতে পারে। তাই কিছু আসনে প্রার্থী পরিবর্তন সম্ভব। জামায়াত বিএনপির বিকল্প হিসেবে নিজেদের শক্তিশালী করতে চাইছে, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে।

জ্যেষ্ঠ নেতা আরও বলেন, পিআরের দাবি আদায় না হলে বিদ্যমান পদ্ধতিতে নির্বাচনে ভালো ফল পাওয়া কঠিন। তাদের প্রার্থীরা পিআরের পক্ষে বলছেন এবং ভোট চাইছেন। গত বছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে এবং চলতি বছরের জুলাইয়ে জামায়াত প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের জরিপ করেছে। এই অনুযায়ী, রংপুর বিভাগের ৩৩ আসনের সব, খুলনার ৩৫টি, রাজশাহীর ৩৯টি আসনের ১০-১২টি, বরিশালের ২১ আসনের তিনটি, চট্টগ্রামের ৫৮ আসনের ১২টি, সিলেটের ১৯ আসনের তিনটি, ময়মনসিংহের ২৪টি আসনের দু’টি এবং ঢাকার ৭১ আসনের কয়েকটি আসনে বিএনপির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। তবে জোট বা সমঝোতা হলে কিছু আসন ছেড়ে দেওয়া হবে।

জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরা 
দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান ঢাকা-১৫ আসনে, যুদ্ধাপরাধের দায়ে ১৪ বছর কারাভোগের পর মুক্ত এটিএম আজহারুল ইসলাম রংপুর-২, দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার খুলনা-৫, নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান রাজশাহী-১, ডা. তাহের কুমিল্লা-১১, সহকারী সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম খান সিরাজগঞ্জ-৪, হামিদুর রহমান আযাদ কক্সবাজার-২ আসনে প্রার্থী হবেন।

যুদ্ধাপরাধের মামলায় দণ্ডিত সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমিন পাবনা-১, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছোট ছেলে মাসুদ সাঈদী পিরোজপুর-১, আরেক ছেলে শামীম সাঈদী পিরোজপুর-২, মীর কাসেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার মীর আহমদ বিন আরমান ঢাকা-১৪ আসনে নির্বাচন করবেন। 

ঠাকুরগাঁও-১ আসনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি দেলওয়ার হোসেন সাঈদী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। কক্সবাজার-১ আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে লড়বেন স্থানীয় নেতা আব্দুল্লাহ আল ফারুক। জামায়াত সূত্র জানিয়েছে, এই আসনে আগে জয়ী হলেও ‘হেভিওয়েট’ নেতা প্রতিহত করা কঠিন।

বিতর্কিত প্রার্থীরা বাদ পড়তে পারেন
স্থানীয় নেতাদের আপত্তি ও অসন্তোষের কারণে নরসিংদী-৫ (রায়পুরা) আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের পর নবগঠিত গাজীপুর-৬ আসনের প্রার্থী এখনও চূড়ান্ত হয়নি। বাগেরহাটে সীমানা পুনর্নির্ধারণের কারণে চারটি আসনের মধ্যে একটি আসনে প্রার্থী পুনর্নির্ধারণ করতে হবে।

জানুয়ারিতে সম্ভাব্য প্রার্থী বাছাই শুরু হয়। কুষ্টিয়া জেলার চারটি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা ফেব্রুয়ারিতে জেলা নেতাদের ভোটে অনুমোদিত হয়। কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে মজলিসে শূরার সদস্য ফরহাদ হুসাইনের নাম আসে, তবে মে মাসে ওয়াজের বক্তা আমির হামজার নাম ঘোষণা করা হয়। তিনি সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত বক্তব্যে সমালোচিত হন। আগের ওয়াজে তিনি ভারতের অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানার রূপ-লাবণ্য নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন।

জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের জানিয়েছেন, হামজাকে সতর্ক করা হয়েছে। তিনি ইতোমধ্যে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তার প্রার্থীতা পুনর্মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

ভিন্ন চিন্তা ও প্রার্থী বাছাই পদ্ধতি
জামায়াতের রুকনরা (সদস্য) প্রার্থী হন। দলীয় পদ বা মনোনয়ন চাওয়ার সুযোগ নেই। জেলা ও উপজেলা নেতারা গোপন ভোটে প্রার্থী নির্বাচন করেন। কেন্দ্র অনুমোদন দিলে প্রার্থী চূড়ান্ত হয়। পার্লামেন্টারি বোর্ড তৃণমূলের বাছাই পরিবর্তন করতে পারে।

সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম বলেন, অন্য দল থেকে যোগদান করে মনোনয়ন নেওয়া যায় না। যোগ্য হলে দলের নেতাকর্মীরাই নির্বাচন করবে। আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে বাইরের প্রার্থী আনারও সম্ভাবনা আছে। স্থানীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য ও জাতীয়ভাবে পরিচিত কেউ চাইলে বিবেচনা করা হবে। অমুসলিমরাও প্রার্থী হতে পারবে।

সমঝোতা হলে আসন ছাড়
জামায়াত ১৯৯৬ সালের পর এককভাবে নির্বাচন করেনি। ২০০১ সালে ৩১, ২০০৮ সালে ৩৮, ২০১৮ সালে ২২ আসনে বিএনপির সঙ্গে জোট করেছিল। এবার জামায়াত চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলনসহ কয়েকটি দলের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করছে।

ডা. আবদুল্লাহ তাহের বলেন, সমঝোতা হলে প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে সরে যাবেন। দলীয় স্বার্থে কোনো আসন ছাড়তে হলে তা প্রার্থীরা মানবেন। সমঝোতার কারণে জয়ের সম্ভাবনাযুক্ত আসনও ছাড়তে কোনো দ্বিধা থাকবে না। উদাহরণস্বরূপ, রংপুর-৪ আসনে জামায়াতের জয় সম্ভব, তবে সমঝোতা হলে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনকে আসন ছেড়ে দেওয়া হবে। বরিশাল ও উত্তরবঙ্গেও এমন ছাড় দেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে।

নজিরবিহীন অসন্তোষ
পাবনা-৫ (সদর) আসনে মাওলানা ইকবাল হোসেনকে বাদ দেওয়ার দাবিতে স্থানীয় একটি গোষ্ঠী বিক্ষোভ করেছে। তারা আব্দুস সোবহানের ঘনিষ্ঠ আব্দুর রহিমকে প্রার্থী করার দাবি জানিয়েছে। ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসনে ছাত্রশিবিরের নেতারা প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। দলের শৃঙ্খলা রক্ষায় সাবেক আমির জসিম উদ্দিনের সাংগঠনিক পদ স্থগিত করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম-১৫ আসন নিয়েও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। দুইবারের সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরীকে মহানগরের আমির পদ থেকে সরানো হয়েছে, তবে প্রার্থী করা হয়েছে। অন্য সাবেক এমপি ও নায়েবে আমির আ ন ম শামসুল ইসলাম প্রার্থী তালিকায় নেই।

জ্যেষ্ঠ নেতারা বলেন, প্রার্থী তালিকা নিয়ে স্থানীয় নেতাদের অসন্তোষ থাকলেও দলের শৃঙ্খলা ও নির্বাচনী প্রস্তুতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব পেয়েছে।

ভিওডি বাংলা/জা

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
দুই দিকের প্রস্তাব ও রাজনৈতিক বিশ্লেষণ
দুই দিকের প্রস্তাব ও রাজনৈতিক বিশ্লেষণ
মামলা করলেন আখতার হোসেন
মামলা করলেন আখতার হোসেন
পিআর হলে দলীয় স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে: সালাহউদ্দিন
পিআর হলে দলীয় স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে: সালাহউদ্দিন