ভারতে জেন-জি বিক্ষোভ:
লাদাখে বিজেপি কার্যালয়ে আগুন, নিহত ৪


ভারতের লাদাখে চীন সীমান্ত ঘেঁষা অঞ্চলে জেনারেশন জেড (জেন-জি) তরুণদের বিক্ষোভে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এই আন্দোলন শুরু হয়। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন, আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন।
বিক্ষোভকারীরা বিজেপির আঞ্চলিক কার্যালয়ে আগুন ধরিয়েছে। স্থানীয় আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বে চলা শান্তিপূর্ণ অনশন ও পদযাত্রা দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। তবে বুধবার শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নেয়।
লাদাখে আন্দোলনের মূল দাবি রাজ্য মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং সংবিধানিক সুরক্ষা। ২০১৯ সালে মোদি সরকার জম্মু-কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে লাদাখকে আইনসভাহীন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বানায়। এতে স্থানীয়দের রাজনৈতিক অধিকার ও কর্মসংস্থান সীমিত হয়ে গেছে।
শিক্ষক ও আন্দোলন নেতা সোনাম ওয়াংচুক বলেন, তরুণদের মধ্যে এক ধরনের বিস্ফোরণ ঘটেছে-এটি জেন-জি প্রজন্মের ‘বিপ্লব’। তিনি উল্লেখ করেন, আন্দোলন সহিংস হয়ে ওঠার জন্য তার কোনো আহ্বান ছিল না, বরং সতর্ক করেছিলেন।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পুলিশের ৩০ জনের বেশি সদস্য আহত হয়েছেন। পুলিশকে আত্মরক্ষায় গুলি চালাতে হয়েছে। স্থানীয় সমন্বয়ক জিগমাত পালজোর বলেন, এটি লাদাখের ইতিহাসে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিন।
লাদাখে জনগোষ্ঠীর ৯০ শতাংশ তফসিলি জনজাতি। তারা ভারতের সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের আওতায় স্বায়ত্তশাসন ও সংবিধানিক সুরক্ষা চাচ্ছে। বর্তমানে রাজ্য মর্যাদা বা তফসিলের সুরক্ষা না দেওয়ায় তরুণদের মধ্যে ক্ষোভ তীব্র হয়েছে।
লাদাখ অঞ্চলের ভৌগোলিক গুরুত্বও বড়। এখানে ভারতের এবং চীনের সীমান্তে গুরুত্বপূর্ণ পাহাড়ি গিরিপথ, বিমানঘাঁটি ও সরবরাহপথ রয়েছে। ২০২০ সালে ভারত-চীন সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অন্তত ২০ ভারতীয় ও ৪ চীনা সেনা নিহত হয়েছিল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক সিদ্দিক ওয়াহিদ মনে করেন, ২০১৯ সালের মোদি সরকারের পদক্ষেপ এখন বুমেরাং হিসেবে ফিরে আসছে। আগে কাশ্মির অশান্তির কেন্দ্র ছিল, এখন লাদাখও তার সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে।
ভিওডি বাংলা/জা