বিশ্ব জন্মনিরোধ দিবস আজ


বিশ্ব জন্মনিরোধ দিবস পালিত হচ্ছে। ২০০৭ সাল থেকে দিনটি পরিকল্পিত পরিবার গঠন ও জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশের এবারের মূল স্লোগান: ‘পরিকল্পিত পরিবার, সুস্থ সমাজ’।
আজ শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) পরিসংখ্যান বলছে, দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির ব্যবহার এখনও আশানুরূপ নয়। বিশেষ করে পুরুষদের অংশগ্রহণ খুবই কম। স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণের ক্ষেত্রে এই হার প্রায় নগণ্য। নারীরাই তুলনামূলকভাবে এগিয়ে থাকলেও তাদের অংশগ্রহণও প্রত্যাশিত মাত্রায় পৌঁছায়নি।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যবহৃত জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলোর মধ্যে রয়েছে: খাবার বড়ি (পিল), কপারটি, ইনজেকশন, লিগেশন, ইমপ্ল্যান্ট, কনডম ও ভ্যাসেকটমি। এর মধ্যে কনডম ও ভ্যাসেকটমি ছাড়া সবই নারীর জন্য। সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় খাবার বড়ি।
বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ (বিডিএইচএস) ২০২২-২৩ অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের ৬৪ শতাংশ দম্পতি আধুনিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। তবে ব্যবহারকারীর মধ্যে ৯১ শতাংশ নারী এবং মাত্র ৯ শতাংশ পুরুষ। গত ৫০ বছরে পুরুষদের অংশগ্রহণ খুব সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
গবেষণা বলছে, ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও প্রায় ১০ শতাংশ দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারছেন না। মূল কারণ: উপকরণের সংকট এবং কোথায় পাওয়া যায় তা জানা না থাকা।
সব জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীরই কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, যা ব্যবহারকারীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। যেহেতু নারীরা প্রধান ব্যবহারকারী, তাই ঝুঁকি তাঁদেরই বেশি।
সরকার বর্তমানে মাত্র ৩৭ শতাংশ জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী সরবরাহ করছে, বেসরকারি খাত ৬০ শতাংশ এবং এনজিও ৩ শতাংশ।
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রচার-প্রচারণার অভাবে দম্পতিদের সচেতনতা যথেষ্ট বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। আশির দশকে ঘরে ঘরে প্রচারের ফলে যে সাফল্য এসেছিল, সরকারের মনোযোগের অভাবে তা আজ কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভবিষ্যতের জনবিস্ফোরণ রোধে এখন থেকেই যৌথ দায়িত্ববোধ তৈরি করা জরুরি। জন্মনিয়ন্ত্রণ শুধুমাত্র নারীর নয়, স্বামী-স্ত্রী উভয়ের অংশগ্রহণ ছাড়া টেকসই হবে না।
ভিওডি বাংলা/জা