গ্রেপ্তার লাদাখি অ্যাক্টিভিস্ট সোনম ওয়াংচুক


লাদাখকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদার দাবিতে আন্দোলনকারী ও র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কারজয়ী অ্যাক্টিভিস্ট সোনম ওয়াংচুককে জাতীয় নিরাপত্তা আইন (এনএসএ) এর আওতায় গ্রেপ্তার করেছে প্রশাসন। এ আইনে দীর্ঘ সময় জামিন ছাড়াই আটক রাখার সুযোগ রয়েছে।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) লাদাখ পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। সরকারি সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার রাতেই বা শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে তাকে লাদাখের বাইরে নেওয়া হতে পারে। খবর এনডিটিভির।
এর আগে বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সহিংসতায় চারজন নিহত ও অন্তত ৫০ জন আহত হওয়ার পর ওয়াংচুককে দায়ী করছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাদের দাবি, তার উসকানিমূলক বক্তব্যেই সমবেতরা সহিংস হয়ে ওঠে। তবে ওয়াংচুক বলেছেন, “আমি যে কোনো সময় এই দাবির জন্য গ্রেপ্তার হতে রাজি। কিন্তু মনে রাখবেন, জেলে থাকা সোনম ওয়াংচুক সরকারের জন্য বাইরে আন্দোলনের চেয়েও বড় সমস্যা হবে।”
গ্রেপ্তারের পর লাদাখে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর আগের দিনই ওয়াংচুকের অলাভজনক প্রতিষ্ঠান স্টুডেন্টস এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল মুভমেন্ট অব লাদাখ (সেকমল)–এর বৈদেশিক অনুদান গ্রহণের নিবন্ধন বাতিল করে সরকার।
অভিযোগ অস্বীকার করে ওয়াংচুক বলেন, তার সংগঠন বিদেশি দাতাদের অর্থ নেয়নি, বরং জাতিসংঘ ও সুইস ও ইতালির কিছু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন করেছে এবং সব কর পরিশোধ করেছে। “তারা এটাকে বিদেশি অনুদান ভেবেছে। আমি এটাকে ভুল মনে করি, তবে এতে আপত্তি নেই।”
২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা হয়। শুরুতে উচ্ছ্বাস থাকলেও পরে রাজনৈতিক শূন্যতার কারণে ক্ষোভ বাড়ে। বৌদ্ধ অধ্যুষিত লেহ ও মুসলিম অধ্যুষিত কারগিলের বিভিন্ন সংগঠন মিলে এখন রাজ্যের মর্যাদা ও সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবি তুলছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওয়াংচুক অনশন চালালেও সরকার লেহ অ্যাপেক্স বডি (এবিএল) ও কারগিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্সের (কেডিএ) সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি করছিল। এক বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, কিছু রাজনৈতিক স্বার্থসন্ধানী ব্যক্তি আলোচনার প্রক্রিয়া ভণ্ডুল করার চেষ্টা করছে।
ওয়াংচুকের গ্রেপ্তারে বিরোধীদের তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে। জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বলেন, “এটা দুঃখজনক। বিজেপি কখনও প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি। সহিংসতাকে আমি সমর্থন করি না, তবে এ পরিস্থিতি তৈরির জন্য সরকার দায়ী।”
কংগ্রেস নেতা গুলাম আহমদ মীর বলেন, “ওয়াংচুক কখনও সহিংসতা উসকে দেননি। বিজেপি সরকার লাদাখের সমস্যাগুলো সামলাতে ব্যর্থ হয়ে এখন তার গ্রেপ্তারকে ঢাল বানাচ্ছে।”
ভিওডি বাংলা/ আরিফ