ডাকসু নির্বাচনের অনিয়ম ঢাকতে মিথ্যাচার করছে প্রশাসন : ঢাবি ছাত্রদল


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে নতুন করে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ছাত্রদল। গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জনসংযোগ দপ্তর কর্তৃক প্রকাশিত বিবৃতিকে ভিত্তিহীন ও অস্পষ্ট উল্লেখ করে পাল্টা বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে সংগঠনটি।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মল্লিক ওয়াসি উদ্দিন তামীর পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদল পাল্টা অভিযোগ করে জানায়, ‘শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নির্বাচনের অংশীদার হিসেবে প্রার্থীদের পেশ করা আবেদনপত্রগুলো এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থীদের কর্তৃক উত্থাপিত ১১টি অভিযোগের বিষয়ে ভালোভাবে বিশ্লেষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা ব্যতীত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই বিবৃতিটি প্রকাশ করেছে।’
ছাত্রদল নেতারা বলেন, ভোটার উপস্থিতির বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কর্তৃক উত্থাপিত সন্দেহের বিষয়টি নির্বাচনের দিনের সম্পূর্ণ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ছাড়া নিরসন করা সম্ভব নয়। তাই ভোটকেন্দ্রের সিসিটিভি ফুটেজ পাবলিক ডকুমেন্ট নয় সেটি জেনেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে প্রার্থীরা তা ব্যক্তিগতভাবে পর্যালোচনার আবেদন করেছেন। তদুপরি যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসারে ডাকসু ও হল সংসদের গঠনতন্ত্র অনুসারে তিন দিনের মধ্যেই আবেদন করার পরে বারবার মনোযোগ আকর্ষণের আন্তরিক প্রচেষ্টা করা হয়। এরপর সংবাদ সম্মেলন করে সুনির্দিষ্ট ১১টি অনিয়ম ও অসংগতির অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেগুলোকে সারবত্তাহীন ও অনির্দিষ্ট কেন বলা হলো, তা অত্যন্ত অস্পষ্ট।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণেশ চন্দ্র রায় (সভাপতি) এবং নাহিদুজ্জামান শিপন (সাধারণ সম্পাদক) আশা করছেন যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দ্রুত ও স্বচ্ছভাবে ২০২৫ সালের ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে হওয়া অনিয়মের অভিযোগগুলো তদন্ত করবে।
তারা বিশ্বাস করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশেষজ্ঞদের দিয়ে এই তদন্ত করাবে এবং সব সন্দেহ দূর করে অভিযোগগুলোর সত্য ও ন্যায্য জবাব অতি দ্রুত শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরবে।
সংগঠনটি আরও অভিযোগ করে, ভোটার তালিকা পোলিং এজেন্টদের হাতে না থাকায় প্রকৃত ভোটার উপস্থিতি যাচাই সম্ভব হয়নি। নির্বাচনের আগেই ছবি ও তথ্য প্রকাশ নিয়ে আইনি জটিলতা তৈরি হলেও গোপনীয়তা বজায় রেখে কেবল উপস্থিতির তথ্য পর্যালোচনার সুযোগ চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাও বিবৃতিতে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে, যা ছাত্রদলের মতে প্রশাসনের স্বচ্ছতার অভাবকে স্পষ্ট করেছে।
অন্যদিকে, প্রশাসন নীলক্ষেতে ব্যালট পেপার ছাপানোর অভিযোগ অস্বীকার করলেও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের বরাতে ছাত্রদল দাবি করেছে যে ব্যালট ছাপানো আসলেই নীলক্ষেতেই হয়েছে। তাদের মতে, এ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিবৃতি মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই নয়।
এছাড়া যথাসময়ে ও যথানিয়মে অভিযোগ দাখিলের পরও প্রশাসন ‘২ সপ্তাহ পর অভিযোগ উত্থাপিত’ করবে বলে উল্লেখ করায় ছাত্রদল এটিকে শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করার অপকৌশল হিসেবে দেখছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ