রাজশাহী চারঘাটে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান


রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার হাবিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবনটি সাত বছর আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হলেও এখনো সেখানে চলছে পাঠদান। দেয়াল ও ছাদের ফাটল, খসে পড়া পলেস্তারা, কোথাও কোথাও বেরিয়ে আসা রড সব মিলিয়ে ভবনটি এখন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য আতঙ্কের আরেক নাম।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়ের একতলা ভবন নির্মিত হয় ১৯৯৩ সালে। ২০১৮ সালে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে। তবুও ২১৮ জন শিক্ষার্থী এখনো ওই জরাজীর্ণ ভবনে মাত্র ১৭ সেট বেঞ্চে পড়াশোনা করছে। নির্মাণকালে দেওয়া ৩৯ সেট বেঞ্চের মধ্যে ২২টি নষ্ট হয়ে গেছে।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, তিন কক্ষবিশিষ্ট ভবনের একটি কক্ষকে ছোট করে অফিস রুম তৈরি করা হয়েছে। ফলে শিক্ষকরা গাদাগাদি করে সেখানে বসছেন। ক্লাস চলাকালে ছাদ থেকে সিমেন্ট খসে পড়ছে, নাজুক ফ্যানের রড যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি করছে।
সহকারী শিক্ষিকা শরিফা খাতুন জানান, কিছুদিন আগে ক্লাস নেয়ার সময় ছাদের রডসহ ফ্যান খুলে পড়ে তিনি আহত হন। তিনি বলেন, “আমি বেঁচে গেছি, কিন্তু প্রতিদিনই ভয় হয়—শিক্ষার্থীদের কোনো ক্ষতি হয়ে গেলে কী জবাব দেবো?” ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সোহানুর রহমান জানায়, বই-খাতা ভিজে যায় বৃষ্টির পানিতে।
আবার বেঞ্চ সংকটে গাদাগাদি করে ৫-৬ জন বসতে হয়। অভিভাবক রাবেয়া খাতুন বলেন, “স্কুল নিরাপদ জায়গা জানতাম। কিন্তু এখন স্কুল মানেই আমাদের কাছে ভয়। মেয়েকে ভেতরে রেখে আমি বাইরে অপেক্ষা করি।” স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, এখানে শিক্ষার্থী থাকলেও ক্লাসরুম ও বেঞ্চের অভাব ভয়াবহ। অন্য বিদ্যালয়ে অব্যবহৃত ভবন থাকলেও এ বিদ্যালয়টি এখনো অবহেলিত।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সাইফুর রহমান জানান, “বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেও প্রতিকার পাইনি। ১৯৯৪ সালের পর নতুন বেঞ্চও পাওয়া যায়নি। শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে।” উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “ভবনের চাহিদার তালিকায় এ বিদ্যালয়ের নাম প্রথমেই পাঠানো হয়। কিন্তু এ বছরও নতুন ভবনের বরাদ্দ হয়নি।”
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ