নড়াইলে ৭২ ঘন্টার মধ্যে হত্যা রহস্য উন্মোচন করল পুলিশ


নড়াইল সদর উপজেলায় আকবর ফকির (৬০) নামের এক ইজিবাইক চালককে গলা কেটে ও পুরুষাঙ্গ বিচ্ছিন্ন করে হত্যার ঘটনায় মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। হত্যার সঙ্গে জড়িত প্রধান আসামি বাবু সরদার (৫৯) কে গ্রেফতার করেছে নড়াইল জেলা পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সদর উপজেলার আউড়িয়া ইউনিয়নের বুড়িখালি গ্রামের একটি বাঁশবাগান থেকে আকবর ফকিরের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের হাত-পা গামছা দিয়ে বাঁধা ছিলো। মরদেহের গলা ও পুরুষাঙ্গ কাটা অবস্থায় পাওয়া যায়। নিহত আকবর ফকির আউড়িয়া ইউনিয়নের শড়াতলা গ্রামের মৃত মমিন ফকিরের ছেলে এবং তিনি পেশায় ইজিবাইক চালক ছিলেন।
এ ঘটনায় নিহতের ছেলে নাজির ফকির বাদী হয়ে সদর থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-২৮, তারিখ-২৭/০৯/২০২৫, ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০)।
এরপর জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও থানা পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাটির রহস্য উদঘাটন ও আসামি গ্রেফতারের জন্য অভিযান শুরু করে।
পুলিশের গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে লোহাগড়া উপজেলার মশাঘুনি এলাকায় ব্র্যাক অফিসের সামনে মহাসড়ক থেকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আসামি বাবু সরদারকে গ্রেফতার করা হয়।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. রবিউল ইসলাম বিকালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গ্রেফতারকৃত বাবু সরদার প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে।
আটককৃত বাবু ফকির স্বীকারোক্তি মোতাবেক তিনি জানান, দীর্ঘদিনের পারিবারিক বিরোধ, জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্ব, স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের প্রতি ভিকটিমের খারাপ আচরণ এবং কন্যা-পুত্রবধূর প্রতি কু-নজরের কারণে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আকবর ফকিরকে হত্যা করেছে বাবু সরদার।
পরিকল্পনা অনুযায়ী সে স্থানীয় বাজার থেকে একটি চাকু ও ফার্মেসি থেকে ২০টি অ্যালার্জির ট্যাবলেট কেনে। পরে কোমল পানীয়ের সঙ্গে ওই ট্যাবলেট মিশিয়ে আকবর ফকিরকে পান করায়। ভিকটিম অচেতন হয়ে পড়লে তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে গলা কেটে হত্যা করে এবং পুরুষাঙ্গ কেটে পাশের ডোবায় ফেলে দেয়।
এসপি আরও জানান, বাবু সরদার আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) নূর-ই-আলম সিদ্দিকী, নড়াইল সদর থানার ওসি মো. সাজেদুল ইসলাম ও ডিবি ওসি আব্দুল খালেক।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ