• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১
টপ নিউজ
মালদ্বীপে রফিকুল আলম মজনুকে সংবর্ধনা শারদীয় দুর্গাপূঁজা উপলক্ষে ঢাকেশ্বরী মন্দির পূঁজা মন্ডপ পরিদর্শনে বিএনপি চীফ প্রসিকিউটর বনাম শেখ হাসিনার মামলার ৫৪তম সাক্ষ্যগ্রহণ আজ মেধা কাজে লাগালে বিশ্বে স্বনামধন্য হওয়া যায় - আবদুস সালাম হোয়াটসঅ্যাপের নতুন চমক ‘শিডিউল কল’ ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের পূজা প্রস্তুতি পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের দায়িত্ব রাষ্ট্র নেবে: আমিনুল হক ডাকসুর নেত্রীদের ‘গৃহদাসী’ মন্তব্য করে চাকরি হারালেন ব্র্যাক গবেষক ক্যান্সার আক্রান্ত হেফাজত নেতা মাওলানা ফারুকী’র পাশে তারেক রহমান ১৩ দিনে ১৬ হাজার কোটি টাকা রেমিট্যান্স

গাজায় যুদ্ধবিরতি:

ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক    ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৩৩ পি.এম.
যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু-ছবি সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় তাৎক্ষণিক যুদ্ধ বন্ধে ২০ দফা পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাউস। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এই প্রস্তাব মানা হলে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। প্রায় দুই বছর ধরে চলা গাজা যুদ্ধে ৬০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের হামলায় পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা।   

হোয়াইট হাউসের পরিকল্পনায় মূল কথাগুলো সংক্ষেপে-উভয়পক্ষ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জীবিত ও মৃত জিম্মিদের ফেরত দেবে; গাজাতে মানবিক সহায়তা অবাধে প্রবেশ করবে; গাজার অস্থায়ী প্রশাসন হবে অরাজনৈতিক টেকনোক্র্যাট কমিটি; এবং গাজার পূর্ণ পুনর্গঠন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক তহবিল ও তত্ত্বাবধান থাকবে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই পরিকল্পনা মেনে নিয়েছেন বলে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে। তবে হামাসের পক্ষ থেকে এখনো লিখিত কোনো নথি মেলেনি বলে তাদের এক কর্মকর্তা আল জাজিরাকে বলেছেন।

নীচে পরিকল্পনার মূল ধারাগুলো সরল ও সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করা হলো-

পরিকল্পনার মূল পয়েন্ট (সংক্ষিপ্ত) 

গাজাকে উগ্রতা ও সন্ত্রাসমুক্ত করা হবে- যাতে প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য কোনো হুমকি সৃষ্টি না করে।

গাজার পুনর্গঠন কেবল স্থানীয় জনগণের কল্যাণে হবে।

দুটি পক্ষ পরিকল্পনায় সম্মত হলে তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে; সব সামরিক অভিযান, বিমান হামলা ও আর্ত লঞ্চ বন্ধ থাকবে।

যুদ্ধবিরতি ঘোষণার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জীবিত ও মৃত সব জিম্মিকে ফেরত দেওয়া হবে।

জিম্মি প্রত্যাবর্তনের পরে ইসরায়েল ২৫০ জন যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দী মুক্তি দেবে এবং ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর আটক প্রায় ১,৭০০ গাজাবাসীকে রিলিজ করবে। প্রত্যেক ইসরায়েলের নিহত জিম্মির বিনিময়ে ১৫ জন গাজাবাসীর মরদেহ ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

জিম্মি ফেরতদানের পর হামাসের শান্তিচুক্তি মানতে ইচ্ছুক ও অস্ত্র সমর্পণকারী সদস্যদের ক্ষেত্রে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হবে; যারা যেতে চায় তাদের নিরাপদে তৃতীয় দেশে প্রেরণ করা হবে।

সঙ্গে সঙ্গে বিস্তৃত মানবিক সহায়তা গাজায় প্রবেশ করানো হবে-খাদ্য, ওষুধ ও পুনর্গঠনের সরঞ্জামসহ। ন্যূনতম সহায়তা ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ সালের মানবিক চুক্তির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।

জল, বিদ্যুৎ, বর্জ্য ব্যবস্থাসহ অবকাঠামো পুনর্গঠন, হাসপাতাল ও বেকারি মেরামত, ধ্বংসস্তূপ অপসারণ ও সড়ক উন্মুক্তকরণের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও উপকরণ সরবরাহ করা হবে।

জাতিসংঘ, রেড ক্রিসেন্ট ও নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সহায়তা সরবরাহ ও বিতরণে অংশ নেবে; কোনো পক্ষ এ কাজে হস্তক্ষেপ করবে না।

রাফাহ সীমান্ত উভয়পক্ষে খোলা থাকবে-সংশ্লিষ্ট চুক্তি ও প্রক্রিয়ার আওতায়।

গাজার অস্থায়ী প্রশাসন হিসেবে একটি অ-রাজনৈতিক টেকনোক্র্যাট কমিটি গঠন করা হবে, যা দৈনন্দিন সেবা ও পৌর কার্যক্রম চালাবে।

এই কমিটি ও পুনর্গঠনের তত্ত্বাবধান করবে নতুন একটি আন্তর্জাতিক অন্তর্বর্তী সংস্থা- ‘বোর্ড অব পিস’; এর নেতৃত্ব দেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প; সদস্যদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক নেতারা থাকতে পারেন।

‘বোর্ড অব পিস’ গাজার পুনর্গঠনের কাঠামো নির্ধারণ, অর্থায়ন ও তত্ত্বাবধান করবে, এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ পুনর্গঠন গ্রহণ সক্ষম না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব রাখবে।

গাজার অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা ও বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করা হবে; বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং কর্মসংস্থান তৈরিতে কাজ করবে।

গাজায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল সৃষ্টি করার প্রস্তাব রয়েছে-শুল্ক ও প্রবেশাধিকার সুবিধা দিয়ে অর্থনৈতিক কার্যক্রম উৎসাহিত করা হবে। মানুষকে জোর করে সরানো হবে না; যান-আসা স্বাধীনতাও থাকবে।

হামাস ও অন্যান্য সংগঠন গাজার শাসনে সরাসরি বা পরোক্ষ অংশগ্রহণ করতে পারবে না; সব সামরিক স্থাপনাবলী, অস্ত্রাগার, টানেল ধ্বংস করা হবে এবং পুনর্নির্মাণে বাধা থাকবে।

গাজার নিরস্ত্রীকরণ ও অস্ত্র নিষ্ক্রিয়করণ নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকদের তত্ত্বাবধানে হবে; আন্তর্জাতিক অর্থায়ন-ভিত্তিক পুনর্বাসন কর্মসূচি চালানো হবে।

আরব ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে ‘ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স (আইএসএফ)’ নামে একটি অস্থায়ী আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন করা হবে; তারা স্থানীয় পুলিশ প্রশিক্ষণ, সীমান্ত সুরক্ষা ও পুনর্গঠন-সরবরাহ সুরক্ষায় সহায়তা দেবে।

আইএসএফ, আইডিএফ ও নিশ্চয়তা প্রদানকারী রাষ্ট্রগুলোর সমঝোতার ভিত্তিতে ধাপে ধাপে ইসরায়েলি সৈন্য প্রত্যাহার কার্যক্রম হবে; শেষ পর্যন্ত সকল সৈন্য গাজা ছাড়বে-তবে গাজা পর্যাপ্তভাবে সুরক্ষিত না হওয়া পর্যন্ত সীমান্তবেষ্টনী বজায় থাকতে পারে।

সহনশীলতা ও আন্তঃধর্মীয় সংলাপ শুরু করা হবে; যদি পুনর্গঠন ও সংস্কার সফলভাবে সম্পন্ন হয়, তবে দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক সমাধান ও ফিলিস্তিনি স্ব-শাসনের সুযোগ তৈরি হতে পারে।

হোয়াইট হাউস বলেছে, পরিকল্পনাটি কার্যকর হলে গাজায় মানবিক সঙ্কট ও তাত্ক্ষণিক সহিংসতা রোধে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। যদিও ইসরায়েল প্রস্তুত থাকলেও হামাসের লিখিত প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি - এবং কাতারের মাধ্যমে আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের এক কর্মকর্তা বলেছেন তারা এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত পরিকল্পনা পাননি।

এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে বাস্তবে কীভাবে নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক তফসিল নির্ধারিত হবে, আন্তর্জাতিক তহবিলের বাস্তব যোগান কবে শুরু হবে, এবং দামামান (বা তৃতীয়) কোনো দেশের মাধ্যমে গাজাবাসীদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন কিভাবে ত্বরান্বিত করা হবে-এসব বিষয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। পাশাপাশি, স্থানীয় রাজনৈতিক অংশীদারদের মানসিক গ্রহণযোগ্যতা, তত্ত্বাবধানকারী সংস্থার স্বাধীনতা ও পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা কতটা কার্যকর হবে-এসব প্রশ্নের জবাব প্ল্যানটিতে বাস্তবে কীভাবে প্রতিফলিত হবে তা দেখার বিষয়।

সূত্র: আল জাজিরা।

ভিওডি বাংলা/জা

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৩৯ ফিলিস্তিনি
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৩৯ ফিলিস্তিনি
জেন-জি বিক্ষোভে মাদাগাস্কারে সরকার পতন
জেন-জি বিক্ষোভে মাদাগাস্কারে সরকার পতন
বিজয়ের সমাবেশে মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় মামলা
বিজয়ের সমাবেশে মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় মামলা