রাষ্ট্র মানে গ্রামীণ ব্যাংক চালানো নয়: ফরহাদ মজহার

কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শপথ গ্রহণের মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থানকে অস্বীকার করেছেন এবং সেই কারণে তার সরকারের কোনো বৈধতা নেই। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থা ও নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড পিস স্টাডিজ এই সভার আয়োজন করে।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আপনি (ড. ইউনূস) শপথ গ্রহণের মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থানকে অস্বীকার করেছেন। রাজনীতি কাকে বলে এটা যেন আপনি বোঝেন! আইন কাকে বলে এটা যেন আপনি বোঝেন! আমরা অপেক্ষা করেছি, কিন্তু আর নয়। আমি পরিষ্কার বলতে চাই, রাষ্ট্র মানে গ্রামীণ ব্যাংক চালানো না, রাষ্ট্র আলাদা জিনিস। সেই ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই যে কথাগুলো আমি বলছি, তার যথোপযুক্ত উত্তর আমি আপনার কাছে আশা করি।’
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা ও তার প্রশাসনের কয়েকটি বিশেষ সিদ্ধান্ত ও নিয়োগকেও চ্যালেঞ্জ করেন মজহার। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন, বিভিন্ন বিদেশি উদ্যোগের প্রবেশ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে মজহার বলেন, ‘আপনি শেখ হাসিনার সংবিধান রক্ষার মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থানকে অস্বীকার করেছেন। সংবিধান, প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক ও ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে মুক্ত না হলে নির্বাচন নিয়ে কথা বলার কোনো অর্থ নেই।’
মজহার প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কেন নির্বাচন করতে চাইছেন? আপনি তো গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এসেছেন; কিন্তু গণ-অভ্যুত্থানের মহানায়ক নন, কেউ ব্যক্তিগতভাবে মহানায়ক নয়, জনগণই প্রধান।’
ড. ইউনূসের নেওয়া ‘ভুল সিদ্ধান্তের’ বিষয়ে মজহার বলেন, ‘কিছু তরুণকে “মাস্টারমাইন্ড” হিসেবে দাবি করা, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনগণের সঙ্গে পর্যাপ্ত আলোচনার অভাব রয়েছে। এত বড় আত্মত্যাগের পরে কেন নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে—এই প্রশ্ন থেকেই আমার অভিযোগ।’
ফরহাদ মজহার রাষ্ট্রপতির কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের বিষয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘আপনারা বললেন প্রধানমন্ত্রী লিখিতভাবে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন; কিন্তু তা এখনো দেখানো হয়নি। প্রেসিডেন্টও জানেন না পদত্যাগপত্র কোথায়—এটা চলবে না। রাষ্ট্রের ১৭ কোটি মানুষকে সাথে নিয়ে তামাশা করা যায় না।’
ভিওডি বাংলা/ এমপি