নব্বই দশকের সিডি প্লেয়ার, আজ শুধুই স্মৃতি


নব্বই দশকের ছেলে-মেয়েদের কাছে সিডি, ভিসিডি ও ডিভিডি প্লেয়ারের শব্দগুলো এখন এক প্রকার আবেগের সঙ্গে জড়িত। সেই সময়ে বিনোদনের প্রধান মাধ্যম ছিল এসব যন্ত্র। পাড়ার কোনো ঘরে সিডি চললে ছোট থেকে বড় সবাই নাটক, সিনেমা, গান দেখতে ভিড় করত। তখন ঘরে টিভি সাধারণ ছিল না; পাড়ার কেবল কয়েকটি ঘরে টিভি দেখা যেত।
১৯৮২ সালে জাপানে প্রথমবারের মতো বাজারে আসে সনি সিডিপি-১০১। ১৯৮৪ সালে এটি উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপে পৌঁছায় এবং পরবর্তীতে বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বাংলাদেশে সিডি প্লেয়ারের প্রচলন শুরু হয় নব্বই দশকে। প্রথমে শহর কেন্দ্রিক হলেও পরে সহজলভ্য হওয়ায় গ্রাম-গঞ্জেও ছড়িয়ে পড়ে। ভাড়ায় এক ঘর থেকে আরেক ঘরে ঘুরত এসব যন্ত্র। দোকান থেকে টাকার বিনিময়ে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সিডি ভাড়া পাওয়া যেত।
সন্ধ্যায় গ্রামের উঠান হয়ে উঠত লোকে লোকারণ্য। আশপাশের বাড়ির ছেলে-মেয়ে, নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ সবাই মিলিত হতো সিডিতে সিনেমা বা নাটক দেখার জন্য। তবে এখন এসব কেবল স্মৃতি। বর্তমান সময়ের ছেলে-মেয়েদের কাছে সিডি মূল্যহীন হলেও নব্বই দশকের জন্য এটি এক আবেগের নাম।
অবু রহমান, বয়স ৪৫, বলেন, “আমাদের সময় ভাড়ায় ১০-১৫ টাকা দিয়ে সিডিতে নাটক, সিনেমা দেখতাম। জাপানি ভিসিডি কিনতে অনেক খরচ করতাম। নতুন নাটক বা সিনেমা আসলে ডেকে ডেকে খবর দেওয়া হতো। সেসময় সিডি ব্যবহার অনেক নিয়মকানুনে চলে। এখন সবই স্মৃতি।”
প্রযুক্তির পরিবর্তনের সঙ্গে সিডি, ডিভিডি ও ভিসিডির যুগ প্রায় শেষ। এখন ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ও বিভিন্ন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে বাসা বসে বা চলাফেরার সময় যেকোনো নাটক, সিনেমা, গান উপভোগ করা সম্ভব।
সিডি, ডিভিডি ব্যবসার মাধ্যমে তখন গ্রাম থেকে শহরে হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান গড়ে উঠেছিল। কিন্তু সিডির যুগ হারিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই কর্মসংস্থানও বিলুপ্ত। শুধু রয়ে গেছে স্মৃতির পাতায় নব্বই দশকের সিডির যুগ।
ভিওডি বাংলা/জা