টাঙ্গাইলে একই আঙিনায় মসজিদ ও মন্দিরে রিবামহীন ধর্মচর্চা


টাঙ্গাইলের নাগরপুরে কয়েক দশক যাবৎ একই আঙ্গিনায় মসজিদ ও মন্দিরে বিরামহীন ও শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মচর্চা করা হচ্ছে। নাগরপুর চৌধুরী বাড়ির আঙিনায় প্রায় ৬ দশক আগে নাগরপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও ঈদগাহ মাঠ স্থাপিত হয়। প্রায় একই সময় ৫৭ বছর আগে চৌধুরী বাড়িতে ওঁঝা ঠাকুর ও হরনাথ স্মৃতি কেন্দ্রীয় দূর্গা মন্দির প্রতিষ্ঠার পর থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পূজা-অর্চ্চনা করছে। একই আঙিনায় পাশাপাশি মসজিদ ও মন্দিরে দুটি ধর্মের অনুসারীরা পরস্পর সৌহার্দপূর্ণভাবে সাথে ধর্মচর্চা করছে।
স্থানীয়রা জানায়, নামাজের ওয়াক্তে আযানের শুরুতেই থেমে যায় শঙ্খ ও ঢাক-ঢোলের শব্দ এবং নিরব থাকে নামাজ আদায় শেষ না হওয়া পর্যন্ত। ঠিক তেমনি সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যখন পূজা-অর্চ্চনায় মেতে ওঠেন তখন নামাজ ব্যতীত সকল ধরনের ইসলাম ধর্মীয় চর্চা থেকে মুসল্লিরা সম্পূর্ণভাবে বিরত থাকেন। এছাড়া প্রতিবছর দুর্গোৎসবে প্রতিমা দর্শনে আসা লোকজন বেশিরভাগ সময় মসজিদ আঙিনায় অবস্থান নিয়ে থাকেন।
রোজা, নামাজ, পূজা একই সাথে একই আঙিনায় পালন করেন দুটি ধর্মের অনুসারীরা। এলাকার হিন্দু-মুসলিম সকলেই একে অপরের মসজিদ- মন্দিরের সুরক্ষায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুগের পর যুগ ধরে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছেন। এতো দীর্ঘ সময় ধরে সৌহার্দপূর্ণভাবে দুটি ধর্মের অনুসারীরা ধর্ম পালন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ইতোপূর্বে কোন সহিংসতা তো দূরের কথা এখানে কোনোদিন বাকবিতণ্ডারও নজির নেই। উভয় ধর্মের অনুসারীরা এ সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধকে শতাব্দীর পর শতাব্দী টিকিয়ে রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আরাফাত মোহাম্মদ নোমান জানান, তিনি চাকরি করতে না এলে বিশ্বাস হতো না একই আঙিনায় মসজিদ ও মন্দিরে দুটি আলাদা ধর্মের লোকজন ধর্মচর্চা করছেন।
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে শারদীয় দুর্গোৎসবের মণ্ডপ পরিদর্শনে এসে পাশাপাশি মসজিদ- মন্দিরে ধর্মচর্চা দেখে মুগ্ধ হন পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান।
তিনি জানান, বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতির বন্ধন যুগ যুগের। তার জ¦লজ্যান্ত উদাহরণ নাগরপুরের চৌধুরী বাড়ির মসজিদ ও মন্দির সংলগ্ন এলাকা। এতযুগ ধরে একই আঙিনায় দাঁড়িয়ে থাকা মসজিদ ও মন্দিরে তারা ধর্মীয় আচারানুষ্ঠান করছেন। তারা কতটা মানবিক ও সহনশীল হলে এটা সম্ভব! কারো কোন অভিযোগ নেই, পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা করছে- যা সকল মানুষের জন্য, সকল ধর্মের জন্য এক অনন্য উদাহরণ।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ