কুষ্টিয়া -৪ আসনে হাইব্রিড’ নেতাদের দাপটে বিব্রত নেতাকর্মীরা


কুমারখালী - খোকসা উপজেলা নিয়ে গঠিত ৭৮ কুষ্টিয়া -৪ আসন। সংসদ নির্বাচনে বদলে যাচ্ছে বিএনপির মাঠের চিত্র। আর্বিভাব ঘটছে হাইব্রিডদের। আন্দোলনের মাঠে ছিলেন না, মামলা-হামলা কিংবা নির্যাতনের মুখেও ছিলেন না, ঘরছাড়াও হতে হয়নি। বিগত দিনে ব্যবসা-বাণিজ্য করেছেন, তাল মিলিয়ে চলেছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে। তারাই এখন বিএনপির দাপুটে ‘হর্তাকর্তা’। তাদের সঙ্গে যোগ হয়েছেন নব্য বিএনপি নামধারী অনেকে।
যারা কখনোই বিএনপিতে সম্পৃক্ত ছিলেন না, তারাই এখন নানা জায়গায় দখল পর্বে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আবার, তারাই এখন তৃণমূলের ত্যাগীদের ওপর ছড়ি ঘোরাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতা বলে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন জায়গায়। তাদের সঙ্গে নেই কোন জেলা- উপজেলা বিএনপির কোনো নেতাকর্মী। ভোট চলে গেলেই আর দেখা যাবে না তাদের। ভোট শেষ নেতা চলে যাবেন ঢাকায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিএনপি কর্মীরা বলেন,কুমারখালী - খোকসা উপজেলার প্রতি সপ্তাহে কৃষকদলের এক নেতা । মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন, কিন্তু তাকে উপজেলা বিএনপির ও কৃষকদলের কোন সদস্য চেনেন না। তার সঙ্গে নেই কোন কৃষকদলের নেতারা । তার প্রোগ্রামে বিএনপি অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের দেখা যায় না। তাহলে তিনি কি রাজনীতি করছেন ?, যে তার সঙ্গে কোন বিএনপি নেতাকর্মীদের যোগাযোগ নেই।
দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে বিএনপির সুদিন ফিরে আসায় অনেক সুবিধাবাদী দলে ভিড়তে শুরু করেন। নির্বাচনের ঘোষণা আসার পর থেকে নতুন- নতুন নাম শোনা যাচ্ছে। বিশেষ করে যারা আওয়ামী লীগের আনুকূল্যে ব্যবসা-বাণিজ্য করেছেন কিংবা আন্দোলনের সময় নিরাপদে বিদেশে ছিলেন, তারাই এখন বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা হয়ে উঠেছেন। এদের কেউ হতে চান এমপি আবার কেউ পেতে চান বড় পদ। হঠাৎ সামনে আসা এসব নেতাকর্মী বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডেও জড়িয়ে পড়ছেন।
খোকসা উপজেলা কৃষকদলের সদস্য মশিউর রহমান বলেন, শুনলাম এক আদম ব্যবসায়ী বিভিন্ন সড়কের অলিগলিতে এখন তাদের ব্যানার, পোস্টার শোভা পাচ্ছে। বিভিন্ন নেতার বাসাবাড়ি কিংবা অফিসে এসব নেতার পদচারণাও বাড়ছে। ভিড় করছেন বিভিন্ন লবিং-তদবির নিয়ে। অন্যদিকে, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে যেসব নেতাকর্মী রাজপথে ছিলেন, মামলা-হামলায় সর্বস্বান্ত হয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, ঘরছাড়া হয়েছেন, তারা এখন ‘অসহায়’। হাইব্রিড নেতাদের চাপে তাদের অনেকেই এখন দলীয় কার্যালয়, নেতাদের বাসাবাড়ি এড়িয়ে চলছেন।
কুমারখালী উপজেলা শিলাইদহ ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি, পিয়ার শেখ বলেন, যাদের কোন দিন দেখি নাই । দলের দুর্দিনে কোন ভূমিকা নেই, তারা এখন পদে আসতে চাই। তারা এমপি হতে চাই। এদের সঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের কোন যোগাযোগ নেই। এরা সুবিধাবাদী।
কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব, ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরদার বলেন, যারা দল করে তাঁরাই দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সদস্য, হাফেজ মঈনউদ্দিনকে বলা হয়েছে। সে- যেন দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রোগ্রাম করে। দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি ব্যবহার করবেন। আর, দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দুরত্ব বজায় রাখবেন এটা করা যাবে না কোন নেতার। তিনি আমাকে বলেছেন এর পর থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রোগ্রাম করবেন।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ