সীমান্তে মানবিকতা স্থাপন
প্রশংসায় ভাসছেন বিজিবি ও বিএসএফ


বাবার বাড়ি ভারতে। বিবাহ সূত্রে মেয়ের শ্বশুর বাড়ি বাংলাদেশে। পার্থক্য জনিত কারণে বাবার মৃত্যু হয়। বাবার মৃত্যুর সংবাদে কান্নায় ভেঙে পড়েন মেয়ে। বাবাকে শেষবারের মতো দেখার কোনো সুযোগ নেই। মৃত বাবাকে দেখতে হলে দরকার ভিসা পাসপোর্ট আইনগত প্রক্রিয়া। এই আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে গেলে মেয়ের পক্ষে বাবার লাশ দেখা সম্ভব নয়। কিন্তু, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মানবিকতায় পূরণ হলো মেয়ের আবদার। শূন্য রেখায় বাবার মরদেহ এনে শেষবারের মতো দেখার সুযোগ পেলেন মিতু মন্ডল (৩৮) ও তার পরিবার। যেন এক মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করল বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। এমন কর্মকাণ্ডে প্রশংসায় ভাসছেন বিজিবি ও বিএসএফ সদস্যরা।
বুধবার (১ অক্টোবর) বিকালে যশোর ব্যাটালিয়ন (৪৯ বিজিবি) ও ভারতের ৬৭ বিএসএফের উদ্যোগে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে এ সুযোগ দেওয়া হয়। ঘটনাটি ঘটে যশোর ব্যাটালিয়নের শার্শার ধান্যখোলা কোম্পানি দায়িত্বপূর্ণ এলাকার মেইন পিলার-২৫/৬-এস সংলগ্ন ধান্যখোলা সীমান্তে।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, ভারতের উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার বাগদা থানার বাশঘাটা গ্রামে ভারতীয় নাগরিক জব্বার মন্ডল (৭৫) বার্ধক্যজনিত কারণে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) মারা যান। তার মেয়ে মিতু মন্ডল স্বামীর সঙ্গে বাংলাদেশের যশোরের শার্শার পোড়াবাড়ী গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি শেষবারের মতো তার মুখটি দেখার জন্য বিজিবির কাছে আকুতি জানান।
অপরদিকে, জব্বার মন্ডলের মৃতদেহ বাংলাদেশে থাকা স্বজনদের দেখানোর জন্য ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) পক্ষ থেকে বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিকেল ৩টার দিকে যশোর ব্যাটালিয়ন (৪৯ বিজিবি) এবং ৬৭ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের তত্বাবধানে সীমান্ত মেইন পিলার ২৫/৬-এসের নিকট শূন্য রেখায় কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মৃতদেহ স্বজনদের স্বজনদের দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়।
পতাকা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজিবির পক্ষে ধান্যখোলা কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার সেলিম মিয়াসহ ৫ জন বিজিবি সদস্য অপরদিকে বিএসএফের পক্ষে এ.সি. সঞ্জয় কুমার রায়, কোম্পানি কমান্ডার (সি কোম্পানি, মোস্তফাপুর, ৬৭ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন) এবং তার সঙ্গে আরও ৫ জন সদস্য।
পরে লাশ দাফনের উদ্দেশে ভারতে ফেরত নেওয়া হয় এবং বাংলাদেশি স্বজনরা তাদের নিজ বাড়িতে ফিরে যান।
৪৯ বিজিবির যশোর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী বলেন, এটি একটি মানবিক কাজ। এ ধরনের কার্যক্রম শুধু দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করে না, বরং সীমান্তবর্তী সাধারণ মানুষের মধ্যেও আস্থা তৈরি করে। বিজিবি সবসময় সীমান্তের নিরাপত্তা এবং আস্থার প্রতীক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ