সিরিজ কর্মসূচিতে যাচ্ছে বিএনপি


ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিএনপি। দলের একক প্রার্থী নিশ্চিতে আসনভিত্তিক সম্ভাব্য প্রার্থীদের রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ডেকে কথা বলছেন বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। এ ছাড়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে উদযাপনে বিএনপি নেতাকর্মীরা সনাতন সম্প্রদায়ের পাশে থেকে কাজ করছেন। দল ও জোটের একক প্রার্থী ঠিক করতে চলতি অক্টোবর মাসে তৃণমূলে ব্যাপকভিত্তিক নির্বাচনী কর্মসূচিতে নামতে চায় দলটি।
দলটির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, প্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত সময় অনুযায়ী আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে হাতে খুব একটা সময় নেই। সেজন্য এখন থেকেই আটঘাট বেঁধে মাঠে নামতে চান তারা। অর্থাৎ দেশের জনগণকে নির্বাচনমুখী করতে কর্মসূচিতে নামছে বিএনপি। যার অংশ হিসেবে শুরুতেই মাঠে নামবেন দলের নারী কর্মীরা। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে খুলনা বিভাগ দিয়ে কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে বিএনপির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারের বিপরীতে সত্য তথ্য তুলে ধরা হবে।
জানা গেছে, জনগণকে নির্বাচনমুখী করতে মাঠের কর্মসূচিতে যাওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। সম্প্রতি দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির একাধিক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কর্মসূচির ধরন প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে একাধিক ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকে কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করেছেন।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা নির্বাচনমুখী কর্মসূচি নিয়ে জনগণের কাছে যাব, এ ধরনের সিদ্ধান্ত আছে। খুব শিগগির নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
প্রার্থী বাছাই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনেক এলাকায় আমাদের প্রার্থীর সংখ্যা বেশি। সেখানে সবাইকে ডেকে কথা বলা হচ্ছে যে, দলের পক্ষে যাকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হবে, সবাইকে তা মেনে তার পক্ষে কাজ করতে হবে। সেজন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুত করতে হবে। নির্বাচনে প্রার্থী চূড়ান্ত করার আগে এ ধরনের অনেক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া থাকে, এখন সেগুলোই করা হচ্ছে। সারা দেশেই দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা চলছে।’
দলের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ২২ সেপ্টেম্বর এ নিয়ে তারেক রহমান নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের শীর্ষ দুই নেতা বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীর সঙ্গে ভাচুর্য়ালি আলোচনা করেন। পরে সংগঠনটির শীর্ষ এই দুই নেতাকে এই দায়িত্ব দেন। পাশাপাশি বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরকে সারা দেশের নির্বাচিত সাবেক ও বর্তমান নারী জনপ্রতিনিধির নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করতে বলা হয়। কেন্দ্রীয় দপ্তর বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের মাধ্যমে সেই তালিকা সংগ্রহ করে এরই মধ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই নেত্রীর কাছে দিয়েছেন।
জানা গেছে, খুলনা বিভাগ দিয়ে শুরু হবে এই কার্যক্রম। বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, খুলনা জেলা ও মহানগর জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে খুলনায় ১৪ অক্টোবর মতবিনিময় করবেন। এরপর যশোর মাগুরা, নড়াইল ও ঝিনাইদহের জনপ্রতিধিদের নিয়ে ১৫ অক্টোবর যশোরে এবং কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে কুষ্টিয়ায় ১৬ অক্টোবর মতবিনিময় সভা হবে। পর্যায়ক্রমে একসঙ্গে দু-তিনটি জেলার জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে একেকটি জেলায় মতবিনিময় হবে। এই মতবিনিময়ের পর সাবেক ও বর্তমান নারী জনপ্রতিনিধিরা এলাকায় ছড়িয়ে পড়বেন। স্থানীয় নারী নেত্রীদের সঙ্গে সমন্বয় করে টিম গঠনের মাধ্যমে ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা করবেন। এর মাধ্যমে প্রতিটি নারী ভোটের কাছে পৌঁছানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ