• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

গোয়ালন্দে মা ইলিশ সংরক্ষণে দায়সারা প্রচারণায় ক্ষুব্ধ জেলেরা

রাজবাড়ী প্রতিনিধি    ৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৪২ পি.এম.
ছবি: ভিওডি বাংলা

ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৫ (৪ অক্টোবর-২৫ অক্টোবর) উপলক্ষে জেলেদের সচেতন করতে উপজেলায় হাট-বাজার, জেলেপাড়া ও নদীতে নৌর‌্যালি এবং প্রচার-প্রচারণা চালানোর কথা থাকলেও, কার্যক্রম শুরুর দুইদিন পর সোমবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে দায়সারা ধরনের এক মতবিনিময় সভা করেছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় জেলেরা।

সোমবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে দৌলতদিয়া ৭ নম্বর ফেরিঘাট এলাকায় ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের (২য় সংশোধিত) অর্থায়নে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, ফেরিঘাট এলাকায় একটি সামিয়ানা টানিয়ে কয়েকটি চেয়ার বসিয়ে সভার আয়োজন করা হয়। অল্প কয়েকজন জেলে উপস্থিত থাকলেও অধিকাংশ জেলে ছিলেন অনুপস্থিত। একদিনের নোটিশে তড়িঘড়ি করে অনুষ্ঠান আয়োজন করায় জেলেরা সভায় অংশ নেননি।

মৎস্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতি বছর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সচেতনতামূলক সভা-সমাবেশ, হাট-বাজার ও জেলেপাড়ায় মাইকিং, পোস্টার-লিফলেট বিতরণ, ব্যানার-সাইনবোর্ড টানানো, গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, নদীতে নৌর‌্যালি আয়োজন এবং পরিবহন মালিক সমিতিগুলোকে সচেতন করার কথা থাকলেও এবার সেসব কার্যক্রম চোখে পড়েনি।

দৌলতদিয়া ঘাট এলাকার জেলে আজিবর হোসেন বলেন, “প্রতি বছর প্রচুর প্রচারণা হতো, ঘাটে বড় বড় সাইনবোর্ড টানানো হতো। বড় পরিসরে মতবিনিময় সভা ও নদীতে নৌর‌্যালি হতো। এবছর সেগুলোর কিছুই হয়নি।”

ছাত্তার মেম্বারপাড়ার জেলে সোহেল ব্যাপারী বলেন, “জেলেরা শিক্ষিত না, তাদের আগে থেকে জানানো দরকার ছিল। আজ শুধু নামকাওয়াস্তে সভা হলো, এমনকি নাস্তার ব্যবস্থাও ছিল না।”

স্থানীয় জেলে কবির হোসেন বলেন, “প্রতিবছর আমাদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক হয়। এবছর শুধু গতকাল বিকেলে একবার মাইকিং করেছে। এর ফলে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হতে পারে।”

জেলে আনোয়ার হোসেন বলেন, “সরকারি বাজেট থাকা সত্ত্বেও মাঠপর্যায়ে সচেতনতা কার্যক্রম নেই বললেই চলে।”

মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ ও বিপণন বন্ধ থাকবে। নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা ও শাস্তি প্রদান করবে প্রশাসন। এছাড়া জেলেদের আর্থিক সুরক্ষায় এনজিওগুলোকে কিস্তি আদায় বন্ধ রাখতে অনুরোধ জানানো হবে।

গোয়ালন্দ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আনোয়ারুল ইসলাম পাইলট দায়সারা উত্তর দিয়ে বলেন, “আমরা এবছর অনেক দেরিতে চিঠি পেয়েছি। তাছাড়া পূজার ছুটির কারণে সময়মতো সভা করতে পারিনি। তাই এখন সভা করে জেলেদের অবহিত করছি।”

সভা শেষে জব্দকৃত ৪ কেজি ইলিশ মাছ দুস্থদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। এছাড়া ৫০ হাজার মিটার জাল জনসমক্ষে পুড়িয়ে ফেলা হয় এবং জব্দকৃত একটি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার উন্মুক্ত নিলামে ৩৬ হাজার টাকায় স্থানীয় এক জেলের কাছে বিক্রি করা হয়।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদুর রহমান বলেন, “মা ইলিশ সংরক্ষণে জেলেদের সচেতন করা এবং আইন প্রয়োগের মাধ্যমে ইলিশের প্রজনন সুরক্ষায় সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে।”

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন দৌলতদিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) ত্রিনাথ সাহা, কোস্টগার্ড এবং স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
শহীদ জোবায়ের স্মৃতি মোটর বাইক ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন
শহীদ জোবায়ের স্মৃতি মোটর বাইক ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন
তাড়াশে স্বাস্থ্য সহকারীদের লাগাতার কর্মবিরতি
তাড়াশে স্বাস্থ্য সহকারীদের লাগাতার কর্মবিরতি
কুলিয়ারচরে অজ্ঞাত এক নারীর লাশ উদ্ধার
কুলিয়ারচরে অজ্ঞাত এক নারীর লাশ উদ্ধার