• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

জন্মসনদ ছাড়াই সব শিশুর টিকাদান নিশ্চিত করতে হবে  : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক    ৭ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৪২ পি.এম.
ছবি: সংগৃহীত

“আমার ঘরে নাতি-নাতনি আছে, কাজের লোকেরও বাচ্চা আছে- কেউ বলেনি যে টাইফয়েডের টিকা নিচ্ছে। মানে আমরা সব ঘরে পৌঁছাতে পারিনি।” টাইফয়েড টিকাদান নিয়ে প্রচারণার ঘাটতি ও সামাজিক উদাসীনতা প্রসঙ্গে এমন মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।

তিনি বলেন, একটি শিশুও যেন টিকা থেকে বাদ না যায়। “জন্মসনদ থাকুক বা না থাকুক, প্রত্যেক শিশুকে টিকার সুযোগ দিতে হবে।”

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) রাজধানীর শহীদ আবু সাঈদ কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত ‘টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫’-এর জাতীয় অ্যাডভোকেসি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

নূরজাহান বেগম বলেন, “ডায়রিয়া ও রাতকানা রোগের মতো অনেক প্রতিরোধযোগ্য রোগ আমরা নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি। অথচ এখনো শিশুরা টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে বা অঙ্গহানির শিকার হচ্ছে- এটি আমাদের জন্য লজ্জার। টাইফয়েড কোনো জটিল বা অজানা রোগ নয়, এটি সম্পূর্ণ প্রতিরোধযোগ্য। আমি বিশ্বাস করি, আমরা এবারও সফল হবো।”

তিনি আরও বলেন, “টাইফয়েডে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে অল্প বয়সী শিশুরা। অথচ পরিবারগুলো এই টিকার গুরুত্ব বোঝে না, অনেকেই জানে না দেশে এখন টাইফয়েডের টিকা পাওয়া যাচ্ছে। এটা আমাদের প্রচারণার ঘাটতি। স্কুল, মসজিদ, কমিউনিটি সেন্টার-সব জায়গায় বার্তা পৌঁছাতে হবে, যেন কেউ ভয় বা বিভ্রান্তিতে না থাকে।”

জনসচেতনতা তৈরিতে সমাজের সক্রিয় ভূমিকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “এটা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়। ইমাম, শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, সমাজকর্মী-সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। মিডিয়াও এই কাজের বড় সহযোদ্ধা। স্বাস্থ্য খাত একা সফল হতে পারে না, সামাজিক সহযোগিতাই আমাদের মূল শক্তি।”

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের লক্ষ্য শতভাগ শিশুর টিকাদান নিশ্চিত করা। একটি শিশু বাদ পড়া মানে একটি পরিবার ঝুঁকিতে থাকা। তাই জন্মসনদ না থাকলেও টিকা থেকে কেউ বাদ যাবে না— বস্তির শিশু ও গৃহকর্মীর সন্তানরাও এর আওতায় আসতে হবে।”

তিনি টিকাদান কার্যক্রমে প্রশাসনিক জটিলতা কমানোর পরামর্শ দিয়ে বলেন, “রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া যেন কষ্টকর না হয়। সবার জন্য টিকাদান সহজ, বিনামূল্যে ও গ্রহণযোগ্য রাখতে হবে। মানুষকে বোঝাতে হবে- এটি বিলাসিতা নয়, বাঁচার জন্য প্রয়োজন।”

সভায় স্বাস্থ্যের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, “স্বাস্থ্য খাতে আমাদের সবচেয়ে সফল কর্মসূচি জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি। টাইফয়েডও খুব শিগগিরই নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত হবে। এজন্য মাঠপর্যায়ে দক্ষ জনবল তৈরি করতে হবে। মেডিকেল ও নার্সিং শিক্ষার্থীদের যুক্ত করলে এ কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্যসচিব মো. সাইদুর রহমান

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ টি এম সাইফুল ইসলাম, এনজিও ব্যুরোর মহাপরিচালক দাউদ মিয়া, ইউনিসেফের প্রতিনিধি দীপিকা শর্মা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রাজেশ নরওয়ানসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা।

ভিওডি বাংলা/জা

 

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ওষুধ কোম্পানিগুলো অতিরিক্ত মুনাফা করছে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
ওষুধ কোম্পানিগুলো অতিরিক্ত মুনাফা করছে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৩, হাসপাতালে ভর্তি ৫৫৬
ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৩, হাসপাতালে ভর্তি ৫৫৬
ডেঙ্গুতে একদিনে ৩ মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৭৩৫
ডেঙ্গুতে একদিনে ৩ মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৭৩৫